Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / জরুরী ভিত্তিতে যে চিকিৎসা প্রয়োজন খালেদা জিয়ার, জানালো মেডিকেল বোর্ড

জরুরী ভিত্তিতে যে চিকিৎসা প্রয়োজন খালেদা জিয়ার, জানালো মেডিকেল বোর্ড

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ‘গুরুতর’ বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তারা খালেদা জিয়াকে বাঁচাতে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন। এ বিষয়ে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটামও দেওয়া হয়েছে।

দেড় মাসের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ‘খুবই সঙ্কটজনক’ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। করোনারি কেয়ার ইউনিট (CCU) সাপোর্ট মাঝে মাঝে প্রয়োজন হচ্ছে।

গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েকবার তাকে সিসিইউতে নিয়ে যেতে হয়েছে।

মেডিকেল বোর্ড তার পরিবারকে জানিয়েছে, বিদেশে নিয়ে জরুরি লিভার ট্রান্সপ্লান্ট প্রয়োজন। এ অবস্থায় উদ্বিগ্ন বিএনপি ও তার পরিবার। দলটি নিঃশর্ত মুক্তি এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেন, বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে আইনের বিদ্যমান অবস্থান থেকে আর কিছু করার নেই। তবে বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে আইন পরিবর্তনে কোনো বাধা দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নীতিনির্ধারক বলেন, বিদেশে উন্নত চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। আবেদন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার। সরকারের মনোভাব ইতিবাচক হলে বিদেশে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে আবারও আবেদন করা হবে। মানবিক কারণে তাকে বিদেশে যেতে দেওয়া হলে তার পরিবার তাকে যুক্তরাজ্য বা জার্মানিতে নিয়ে যেতে আগ্রহী।

নীতিনির্ধারক আরও বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পাঠানো আবেদনের শেষে বলা হয়েছে, ‘খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষার্থে ও তার শারীরিক সক্ষমতা ফিরিয়ে আনার জন্য জরুরি ভিত্তিতে উন্নতমানের ফিজিওথেরাপিসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে দেশের বাইরে ‘অ্যাডভান্স মেডিকেল সেন্টারে’ চিকিৎসা নেওয়া অত্যাবশ্যক। এমন পরিস্থিতিতে সকল শর্ত শিথিল করে তাকে স্থায়ীভাবে মুক্তি ও বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

২০১৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে একটি দুর্নীতির মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। ২৫ মার্চ, ২০২০-এ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে তার সাজা স্থগিত করে সরকারের নির্বাহী আদেশে দুটি শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। করো”না মহামারীর সময় পরিবারের অনুরোধে তাকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর থেকে পরিবারের অনুরোধে প্রতি ছয় মাস অন্তর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে দুটি শর্তে মুক্তি দেয়, যার প্রথমটি ছিল তাকে বাড়িতে চিকিৎসা নিতে হবে। দ্বিতীয় শর্ত হলো তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

গত ৯ আগস্ট অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।চিকিৎসকরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে লিভারের জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে, কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গেছে। এ কারণে তাকে কয়েকবার সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। এখন কেবিনটিকে মেডিকেল বোর্ডের অধীনে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) লিভার, কিডনি, হার্ট, লাঞ্চসহ সার্বিক অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে সম্প্রতি দুবার সিসিইউতে নিতে হয়। এখন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে। ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা বি”পজ্জনক। তিনি আরও বলেন, মেডিকেল বোর্ড সর্বসম্মতিক্রমে তাদের পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে যত দ্রুত সম্ভব বিদেশে লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য একটি আধুনিক মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। তবেই তিনি নিরাপদ থাকতে পারবেন বলে বোর্ডের সুপারিশে বলা হয়েছে।

শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত ১০ জুন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।

গত বছরের ১০ জুন রাতে বুকে ব্যথা নিয়ে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। দ্রুত এনজিওগ্রাম করার পর তার হার্টে রিং বসানো হয়। দুটি হার্ট ব্লক এখনও রয়ে গেছে।

৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা ও লিভার সিরোসিস ছাড়াও বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। তিনি বহু বছর ধরে বাত, ডায়াবেটিস, দাঁতের ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। কারাগার থেকে বেরিয়ে চিকিৎসার জন্য তাকে কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

About bisso Jit

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *