বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আজ রোডমার্চে আনন্দের বন্যা বইছে। মনে হলো ঈদের আগের চাঁদ রাত উদযাপন করছি। আজ সারা দেশের মানুষ উচ্ছ্বসিত,উত্তেজিত ও আবেগপ্রবণ। একদিকে জনগণ বিজয়ে উল্লাস করছে, অন্যদিকে জাতীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন মানুষ।তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও সরকার বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না।
মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে রোডমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ম্যাডামকে দেখতে গিয়েছিলাম। তিনি খুব অসুস্থ। ম্যাডামকে বলতে এসেছি- সারা দেশ আপনাকে নিয়ে খুব চিন্তিত। মানুষ আপনার জন্য প্রার্থনা করছে। বাংলাদেশের জনগণ অবশ্যই আপনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবে।
আমরা শেখ হাসিনা সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করব এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাব।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি খুবই খারাপ। বাংলাদেশে এখন ডলারের রিজার্ভ নেই। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ২০০৯ সালে বাংলাদেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২১ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১০৯ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা কে খেল, এই টাকা গেল কোথায়? আপনার টাকা, আমার টাকা, জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এই টাকা কোথায় গেল জনগণ জানতে চায়?
এদিকে সরকার পতনের একতরফা দাবিতে ঝিনাইদহ থেকে খুলনার দিকে রোডমার্চ শুরু করেছে বিএনপি। খুলনা নগরীর শিববাড়ি মোড়ে জিয়া হল চত্বরে সমাপনী সমাবেশের মধ্য দিয়ে রোডমার্চটি শেষ হবে। রোডমার্চে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। হাজার হাজার নেতাকর্মী বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল নিয়ে রোডমার্চে যোগ দিচ্ছে। পথিমধ্যে মাগুরা, যশোরসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী রোডমার্চের বহরে যোগ দেবেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ, শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ মেহেদী হাসান রুমি, খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শাহজালাল হোসেন প্রমুখ , ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান। দায়িত্বে ছিলেন ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা।
উল্লেখ্য, সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ঘোষিত কর্মসূচিতে রংপুর থেকে দিনাজপুর, বগুড়া থেকে রাজশাহী, ভৈরব থেকে সিলেট এবং বরিশাল থেকে পিরোজপুর পর্যন্ত চারটি রোডমার্চ করেছে তারা। এ ছাড়া রাজধানীতে বেশ কয়েকটি সমাবেশ করেছে তারা। এদিকে ১ অক্টোবর ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ, ৩ অক্টোবর ফরিদপুর বিভাগ এবং ৫ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোডমার্চ অনুষ্ঠিত হবে।