সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র গ্রন্থ রামায়ণ। সেখানে উল্লেখ আছে- রাজা দশরথের স্ত্রী সুমিত্রার যমজ ছেলে লক্ষ্মন ও শত্রুঘ্ন, রামের বৈমাত্রেয় ভাই এবং সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহচর। লক্ষ্মণের আরেক নাম ছিল সৌমিত্র। কালপুরুষের সাথে রাম বিশেষ বৈঠকে ছিলেন। নিষেধ থাকা সত্ত্বেও দ্বাররক্ষী লক্ষ্মণ শপথ ভঙ্গ করে দুর্বাষা ঋষিকে সেখানে নিয়ে যান। এই অপরাধে রাম শেষ পর্যন্ত লক্ষ্মনকে পরিত্যাগ করলে তিনি সরযূ নদীতে যোগালম্বনে দেহত্যাগ করেন। রাম- লক্ষ্মণ আবার ভায়রা ভাইও ছিলেন, তিনি সীতার ছোট বোন ঊর্মিলাকে বিয়ে করেছিলেন।
বাংলা শব্দ লক্ষন এর সাথে রাম- লক্ষ্মণের কোন সম্পর্ক নেই, বানানও আলাদা। বাংলায় লক্ষন শব্দের একটা প্রতিশব্দ হচ্ছে আভাস। এক্ষেত্রে ইংরেজী ভাষার Sanc.tion ( স্যাংকশন) শব্দটা শিয়ালের মতই চতূর। এতদিন জানতাম Sanction মানে কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত অধিকার মন্জুর বা অনুমোদন। জনগণের ম্যান্ডেটহীন রাতের ভোটের লুটেরা সরকারের বিরুদ্ধে আমেরিকা যে ভিসানীতি নিয়েছে সেটাকেও বলে Sanction. বানান এক হলেও এর ব্যবহারিক অর্থ বিপরীতমুখী। Sanction এখানে বোঝাচ্ছে- আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকারী দেশের বিরুদ্ধে অনেকগুলো দেশের বহুমাত্রিক অবরোধ। ভয়াবহ এই ব্যাপারটা দীর্ঘমেয়াদী হলে যে কোন দেশের সরকারের লক্ষ্মণের মত যোগালম্বনে দেহত্যাগের প্রেক্ষাপট তৈরী হয়।
গত ষোল বছর ধরে স্যাংশনে আছি। পাসপোর্ট ভিসা ওপেন এয়ার কনসার্ট নিয়ে এই ফ্যাসিস্ট সরকার আমার সাথে খেলেছে ভানুমতির খেল। শুধু রেকর্ডিং করে জীবিকা নির্বাহ করেছি, জীবন থেকে চলে গেছে সোনালী সময়। অন্যান্য অত্যাচার তো সয়েছি কোন অন্যায় না করেই। হাজার হাজার কোটি টাকার আতশবাজীর উৎসব, কনসার্ট আর রাষ্ট্রীয় কোষাগারের শ্রাদ্ধও দেখেছি। এখন সব যেন কেমন মিইয়ে গেছে, সব ফূর্তি ফানুষের মত উড়ে গেছে, ত্যালতেলে চেহারাগুলো পাংশুবর্ণ হয়ে আসছে। সরকারের চাটুকার শিল্পী সাহিত্যিক কলামিস্ট বুদ্ধিজীবি হেলমেট বাহিনী সব গায়েব।
মাথায় পচন ধরা মিডিয়া ট্রায়ালের জন্য কিছু গৃহপালিত সুশীল এখনো মোহগ্রস্ততায় ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে আছে। আমি এই দেশের একজন সাধারন নাগরিক, দীর্ঘদিন আইন আদালত করে স্যাংশন মোটামুটি কাটিয়ে উঠেছি। আমাকে দেয়া Sanction এখন তাদের জন্য বুমেরাং হয়ে গেছে। তোমার হলো শুরু, আমার হলো সারা- অত্যন্ত অর্থবহ প্রিয় রবীন্দ্রসঙ্গীত। কবিগুরু নোবেল লরিয়েট – তিনি শতবর্ষ আগেই বুঝেছিলেন স্যাংশন কি জিনিষ!!!
ভালবাসা অবিরাম…