Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা নিয়ে বিএনপির কী বক্তব্য

মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা নিয়ে বিএনপির কী বক্তব্য

নতুন ভিসা নীতির প্রয়োগ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দল ও রাজনৈতিক বিরোধী দল রয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে বলেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সমর্থনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করতে হবে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে; তাদের পরিবারের সদস্যরাও এই নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত। এ ছাড়া কেউ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা দিলে তাকেও ভিসা দেওয়া হবে না।

যাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি কার্যকর করা হয়েছে তাদের ব্যক্তিগতভাবে অবহিত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে যাদের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি কার্যকর করা হয়েছে; এদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সরকারি দলের নেতা ও রাজনৈতিক বিরোধী দলের নেতারা রয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞায় কিছু আসে যায় না। এমনকি তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন এবং ব্যবসা করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি তার সম্পদও বাজেয়াপ্ত করে তবে তাতে কিছু যায় আসে না।

তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আওয়ামী লীগ নয় বিএনপি’ই বেশি চিন্তিত। কারণ ভিসা নীতিতে বলা হয়েছে, যারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করবে তাদের ভিসা দেওয়া হবে না। বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

এ বিষয়ে বিএনপির বক্তব্য কী? যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বিধিনিষেধ বাংলাদেশের জন্য লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর জন্য তিনি সরকারকে দায়ী করেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার এখন বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে মুখরিত করেছে।

“সরকার নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। জনগণের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত রেখেছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নি”র্যাতন ও গ্রেফতার করা হচ্ছে। এসব কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক শাখার সদস্য শামা ওবায়েদ বলেন, ভিসা নিষেধাজ্ঞার আবেদনকে ইতিবাচকভাবে দেখছি। দেশে নির্বাচনের পরিবেশ নেই। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে তারা কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। এরপর এখন ভিসা নীতি বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কোনো আস্থা নেই।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। তাদের দেশে ভিসা দেওয়া বা না দেওয়া তাদের ব্যাপার। আমাদের কথা বলার কিছু নেই। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন কিন্তু এত বেশি রোহি”ঙ্গাকে আমাদের দেশে পাঠানোর জন্য মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে না। এটা চিন্তার বিষয়।

বিরোধী দলের সদস্যদের ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়েও কথা হয়েছে। এ নিয়ে বিএনপি চিন্তিত নয় বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। এর কারণ হিসেবে তারা বলেন, সরকারের কারণেই এমন অবস্থা হয়েছে। ফলে ক্ষমতায় থাকাদের জন্য চিন্তার বিষয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫২ বছর পর অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা এসেছে। এটা আমাদের দেশের প্রাপ্য নয়। তিনি উল্লেখ করেন, এর জন্য বিএনপিসহ প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো দায় নেই, এককভাবে সরকার দায়ী।

মির্জা ফখরুল ভিসা নীতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাইডেন প্রশাসন বিশ্বে গণতন্ত্রের কথা বলছে। এরই অংশ হিসেবে তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা তাদের দায়িত্ব পালন করেছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে সমর্থন করার লক্ষ্যে গত ২৪ মে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেন। এরপর তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, সরকার ও বিরোধী দলের রাজনীতিবিদ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, বিচার বিভাগের সদস্য, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা প্রদানকারী নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা মানে ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা, রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ, মিডিয়ার বাধা। ভিসা নীতিগুলিও এই ক্রিয়াকলাপের জন্য আবেদন করতে পারে।

 

 

About bisso Jit

Check Also

সংস্কারের নামে ভয়াবহ দুর্নীতি-লুটপাট

সংস্কার ও উন্নয়নের নামে কয়েকগুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে হরিলুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *