Thursday , September 19 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ডলারের তীব্র সংকটে বেহাল অবস্থা ব্যাংকগুলোর, জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধের হুমকি বিদেশিদের

ডলারের তীব্র সংকটে বেহাল অবস্থা ব্যাংকগুলোর, জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধের হুমকি বিদেশিদের

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। রোববার ব্যারেল প্রতি দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ ডলারে। জ্বালানির দাম বৃদ্ধি উদ্যোক্তা ও সরকারের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। কারণ ডলারের দাম বাড়ায় জ্বালানি তেলের দাম আবারও বাড়ছে। এতে আমদানি ব্যয় বাড়বে। একই সঙ্গে ডলারের ওপর চাপ বাড়বে।

এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে দেশের বাজারেও সমন্বয় করতে হবে। তাহলে দেশে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়বে। মূল্যস্ফীতি ইতিমধ্যেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে।আগস্টে এ হার ডাবল ডিজিটের কাছাকাছি পৌঁছেছে।

সূত্রের মতে, ক/রোনা ভা/ইরাস সংক্রমণের সময় ২৭ এপ্রিল, ২০২০ তারিখে জ্বালানি তেলের দাম সর্বকালের সর্বনিম্নে নেমে আসে। সে সময় বিশ্বে লকডাউনের কারণে জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমে যায় এবং দামও কমে যায়। তেলের দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ২০ ডলার। এরপর থেকে দাম কিছুটা বেড়েছে। যখন রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল, তখন তেলের দাম আবার বাড়তে শুরু করে। সেই বছরের ১৪ মার্চ, এটি সর্বোচ্চ ১২৭ ডলারে উঠেছিল। তারপর থেকে এটি ছোটখাটো ওঠানামার মাধ্যমে হ্রাস পাচ্ছে। ২২ জুন, এটি ৭০ ডলারে নেমে আসে। এরপর সৌদি আরব তেল উত্তোলনের পরিমাণ কমানোর ঘোষণা দেয়।

রাশিয়াও কম দামের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দাম বাড়িয়েছে। এ থেকে ফের বাড়তে থাকে তেলের দাম। রবিবার এটি বেড়ে $৯৭ এ পৌঁছেছে। এটি শীঘ্রই ১০০ ডলার অতিক্রম করবে । কারণ করোনার ধাক্কা ও বৈশ্বিক মন্দা কাটিয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আবার বাড়তে শুরু করেছে। এ কারণে জ্বালানি তেলের ব্যবহারও বাড়ছে। এদিকে তেল রপ্তানিকারক প্রধান দেশগুলো তাদের উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে তেলের বাজারে আবারও অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা রয়েছে।

এতে বাংলাদেশের বাজারেও উদ্বেগ ছড়িয়েছে। কারণ দেশের মোট আমদানির ১৫ থেকে ১৮ শতাংশই জ্বালানি তেল। গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি ছাড়াও জ্বালানি খাতে ব্যয় হয় প্রায় ২৫ শতাংশ। জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে অন্যান্য জ্বালানির দামও বাড়ে। এ কারণে এ খাতে ব্যয় বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে দেশে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো এখন বকেয়া জ্বালানির মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না। অনেক বিদেশি কোম্পানি দেশে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধের হুমকি দিয়েছে। আগে জ্বালানি ঋণ পরিশোধের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার দেওয়া হলেও এখন তা কমানো হয়েছে।

গত বছরের ২২ এপ্রিল জ্বালানি তেলের দাম ১০০ ডলারের নিচে নেমে যায়। এতে তেল আমদানিতেও কিছুটা স্বস্তি ছিল। কারণ তেল আমদানি খরচ কমছিল। এখন তেলের দাম বাড়ায় আমদানি খরচও বাড়বে। ডলার সংকট আরও প্রকট হবে। ইতিমধ্যেই ডলারে আমদানি মিলছে না। তখন সংকটের কারণে শিল্প খাতের উৎপাদন খরচ যেমন বাড়বে তেমনি ডলারের দামও বাড়বে। তখন মূল্যস্ফীতির হারও বাড়বে, যা মানুষকে আরও বেশি ভোগান্তিতে ফেলবে।

এদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তেলের দাম সমন্বয়ের শর্ত রয়েছে আইএমএফের। সে হিসেবে বাংলাদেশে তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে বেশি। এ কারণে দেশে তেলের দাম বাড়ার চাপ আসতে পারে আইএমএফ থেকে। অক্টোবরের শুরুতে আইএমএফ দল আসছে। তারপর তারা এর দাম বাড়িয়ে দিতে পারে।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, গত অর্থবছরে জ্বালানি তেল আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এর মধ্যে অনেক ঋণের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। যা পরিশোধ করা হয়নি। আগের অর্থবছরে ব্যয় হয়েছিল ৮ বিলিয়ন ডলার।

About Nasimul Islam

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *