Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Exclusive / এবার বাংলাদেশে নতুন করে ভিন্নমত দমনের বৃদ্ধির শঙ্কা নিয়ে ভিন্ন এক তথ্য তুলে ধরলো নিউইয়র্ক টাইমস

এবার বাংলাদেশে নতুন করে ভিন্নমত দমনের বৃদ্ধির শঙ্কা নিয়ে ভিন্ন এক তথ্য তুলে ধরলো নিউইয়র্ক টাইমস

বাংলাদেশে সংগঠিত বিচারবহির্ভূত হ”ত্যাকাণ্ড ও গু”মের ঘটনা ট্র্যাককারী দুই বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মীকে বৃহস্পতিবার দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দেশটিতে নতুন করে ভিন্নমত দমনের মাত্রা বৃদ্ধি সম্পর্কে শঙ্কা জেগে উঠেছে।

দেশের তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর দায়ে আদিলুর রহমান খান ও এএসএম নাসিরুদ্দিন এলানকে দোষী সাব্যস্ত করেছে রাজধানী ঢাকার একটি সাইবার ট্রাইব্যুনাল। মানহানিকর মনে করে এমন কিছু মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে আইনটি সরকারকে গ্রেপ্তার এবং বিচারের বিস্তৃত ক্ষমতা প্রদান করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনের আগে ১৭ কোটি মানুষের ওপর দৃঢ়ভাবে নিজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছেন।। বিগত ১৪ বছরে, তিনি ভিন্নমতের কণ্ঠকে হয়রানি ও দমন করার জন্য গত ১৪ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্ব ব্যাপকভাবে দখল করেছেন। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান দেশের বিচার বিভাগ। (মানবাধিকার কর্মীর ঘটনা) বিচার বিভাগকে ব্যবহার করার জন্য শেখ হাসিনার ব্যাপক প্রচারণার সর্বশেষ উদাহরণ। বিরোধী সমর্থক, কর্মী ও সাংবাদিকরা ক্রমবর্ধমান নিষ্ঠুর বিচার ব্যবস্থায় আটকা পড়েছে। আদালতের কক্ষগুলো তাদের দিয়ে ঠাসা।

মানবাধিকার গোষ্ঠী অধিকারের নেতা মিস্টার খান এবং মিস্টার এলানের বিরুদ্ধে মামলা একটি ‘তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন’ থেকে উদ্ভূত হয়েছে যা তারা এক দশক আগে একটি নৃ”/শংস ঘটনায় তৈরি করেছিল। সেই ২০১৩ সালের রিপোর্টে দেখা গেছে যে, পুলিশ একটি উগ্র ইসলামপন্থী গোষ্ঠী দ্বারা আয়োজিত একটি সমাবেশ সাফ করার জন্য পুলিশ গুরুতর নির্যা”তন চালিয়েছে।

হেফাজেত ইসলাম বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠন সে বছরের মে মাসে (তাদের ভাষায়) নবী মুহাম্মদ সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য ও কার্টুনের প্রতিবাদে ঢাকাকে স্থবির করে দেয়। তার জবাবে, পুলিশ গভীর রাতের ক্র্যাকডাউনে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং সহিং”সতা চালায়।

বিরোধী দলগুলো দাবি করেছে শত শত মানুষ নিহ”ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, সংখ্যাটি এক ডজন থেকে ৫০ এর মধ্যে অনুমান করা হয়েছিল। অধিকারের রিপোর্ট জানায়ঃ নিহত ৬১ জনের নাম পাওয়া গেছে।

রিপোর্ট প্রকাশের পরপরই মিসেস হাসিনার সরকার দুই মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেফতার করে। জনাব খানকে ৬২ দিন এবং মিঃ এলানকে ২৫ দিনের জন্য আটক রাখা হয়েছিল। তাদের প্রতিবেদনকে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি আইনে বিকৃত ও মানহানিকর হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। মিসেস হাসিনার কর্মকর্তারা বলতে থাকেন যে, অভিযানে কেউ নিহ”ত হয়নি। তিনি সংসদে বলেছিলেন, হেফাজতে ইসলামের সদস্যরা “গায়ে লাল রং মেখে” ভুয়া মৃ”ত্যুর ঘটনা ঘটিয়েছে।

একটি যৌথ চিঠিতে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সহ ৩০ টিরও বেশি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, দুই মানবাধিকার কর্মীকে দোষী সাব্যস্ত করাকে “বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নথিভুক্ত করার প্রতিশোধ” বলে অভিহিত করেছে। মানবাধিকার কর্মীদের মুক্তি দাবি করেন তারা।

এজেন্সিগুলো বলছে, তহবিল আটকে রাখা এবং নিবন্ধন নবায়ন না করা সহ বিভিন্ন উপায়ে মানবাধিকার কর্মীদের এবং অধিকারকে হয়রানি করার জন্য সরকারের অব্যাহত অভিযান সত্ত্বেও, একাধিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত র‌্যাব কর্মকর্তাদের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর ২০১৩ সালের মামলাটি সম্প্রতি পুনরুজ্জীবিত হয়। বাংলাদেশের কর্মকর্তারা এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আনার জন্য অধিকারের মতো মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনকে দায়ী করেছেন।

যৌথ চিঠিতে বলা হয়েছে, “মানবাধিকার কর্মীদের হয়রানি, ভয়ভীতি এবং প্রতিশোধের ভয় ছাড়াই তাদের প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার অনুমতি দেওয়া উচিত। যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত এবং প্রকাশ করেন, তাদের বিচার ও শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে; সরকারের উচিত (ঘটনাগুলো) তদন্ত করা এবং (মানবাধিকার) লঙ্ঘনকারী অপরাধীদের জবাবদিহি করা।”

একটি বিবৃতিতে, বাংলাদেশ সরকার অধিকারকে “অসংগতিপূর্ণ এবং রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট সত্ত্বা হিসাবে বিকৃত তথ্যের প্রমাণিত রেকর্ড” বলে অভিহিত করেছে। সরকারের মন্তব্য: বিচার বিভাগ “প্রমাণের ভিত্তিতে এবং আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়”।

[১৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বখ্যাত পত্রিকা ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন সাইফ হাসনাত ও মুজিব মাশাল। অনুবাদ করেছেন তারিক চয়ন]

About bisso Jit

Check Also

চুলের মুঠি ধরে নারী চিকিৎসককে রোগীর মারধর (ভিডিও সহ)

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসককে হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *