Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ”হারুনকে এক সপ্তাহ আগেও আপনার হাজব্যান্ড অনুরোধ করেছিল তার সংসার না ভাঙার জন্য”

”হারুনকে এক সপ্তাহ আগেও আপনার হাজব্যান্ড অনুরোধ করেছিল তার সংসার না ভাঙার জন্য”

শাহবাগ থানায় দুই ছাত্রলীগ নেতাকে নির্”মমভাবে মারধর ও সাবেক এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্ত, এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা নাটকীয়তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এ নিয়ে ফে”সবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন।

মঙ্গলবার খোকন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, চ্যানেল আইয়ে পুলিশ কর্মকর্তা সানজিদার সাক্ষাৎকার দেখে কিছু প্রশ্ন মাথায় এসেছে, আপনি অসুস্থ, আপনার স্বামী জানেন না, আপনার অন্য বিভাগের স্যাররা কীভাবে জানেন? যদি আপনি জানিয়ে থাকেন, তাহলে অ্যাপয়েন্টম্যান্টের জন্য আপনি তো আপনার হাজব্যান্ডকে বলতে পারতেন। কারণ আপনার হাজব্যান্ডের পদ-পদবি আরো বড়।

স্যার যখন স্বামীর চেয়ে বেশি, তখন কি বিষয়টি অস্বাভাবিক নয়? আপনার নিজের বড় বোনও ঢাকা মেডিকেলে একজন ডাক্তার, যেহেতু উল্টাপাল্টা পোশাকের বিষয় আপনিই বলেছেন, ইসিজি ইটিটি তো আপনি ওনার ওখানেও করতে পারতেন।

এছাড়া পুলিশ হাসপাতাল দেশের অন্যতম সেরা হাসপাতাল, সেখানেও যেতে পারতেন। এই এডিসি হারুনকে এক সপ্তাহ আগে আপনার স্বামী অনুরোধ করেছিল তার সংসার না ভাঙতে। কেন তাকে সাথে নিয়ে যেতে হলো? আর আপনার স্বামী তাকে অনুরোধ করলেন কেন?

আপনার স্বামী কিভাবে জানলেন যে আপনি বারডেমে? আপনি কি তাকেও বলেছিলেন? মানে ওনাকেও কি আপনিই জানিয়েছিলেন? মানে তাদের দুজনকেই আপনি জানিয়েছেন? সংসার বাঁচাতে চাওয়া কি একটি বেচারা স্বামীর জন্য অপরাধ?

এদিকে এডিসি হারুন ও সানজিদা এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।

ওইদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে সানজিদা গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান। সেখানে সম্প্রতি সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এডিসি হারুন ছিলেন। এ সময় সানজিদার স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস (সহকারী একান্ত সচিব) আজিজুল হক মামুন প্রথমে হারুনের ওপর হামলা চালান।

সানজিদা বলেন, শনিবার রাতে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাই, সেখানে তাকে (হারুন) মার”ধর করা হয়। এ হামলার ঘটনা ঘটায় দেখতে পাইনি।

এডিসি হারুনকে কে হাসপাতালে ডেকেছিল- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ডাক্তারের সিরিয়ালের জন্য এডিসি হারুনের শুধু সহযোগিতা নিয়েছিলাম। হারুন সেখানে এসে আমাকে ডাক্তারের সিরিয়ালের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। এ ছাড়া আর কিছুই জানি না।

এডিসি হারুনের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হারুনের সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই। সে শুধু আমার সহকর্মী।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এডিসি হারুন বলেন, গত শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) আমি আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ডাঃ পবিত্র কুমারকে চিকিৎসার জন্য দেখাতে যাই। তখন বেলা ২টার দিকে আমাদের এডিসি ক্রাইম-১ ফোন করে বলেন, তার চেস্ট পেইন (বুকে ব্যথা) সে জন্য বারডেম হাসপাতালের ডাক্তার প্রফেসর রশিদ স্যারের সিরিয়াল (অ্যাপয়েন্টমেন্ট) নেওয়া যায় কিনা। তখন আমি আমাদের ওসি রমনা থানা আবুল হাসান সাহেবকে বলি একটা সিরিয়াল ম্যানেজ করে দেওয়ার জন্য। আবুল হাসান সাহেব পরবর্তীতে আমাকে জানান, সন্ধ্যা ৬টায় একটা সিরিয়াল ম্যানেজ করে দেওয়া হয়েছে। আমি সেটা এডিসি ক্রাইম-১-কে জানাই। উনি সন্ধ্যা ৬টায় ওখানে চলে যান।

এডিসি হারুনের ভাষ্যমতে, পরবর্তীতে প্রফেসর ড. আব্দুর রশিদ স্যার বারডেমের কনফারেন্স বা প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় তাকে সময় দিতে পারেননি। কিন্তু রোগী (এডিসি সানজিদা) সেখানে গিয়ে অসুস্থ বোধ করেন। তারপর আমাকে বললেন, স্যার, এখানকার ডাক্তার সম্ভবত ব্যস্ত, তিনি আজকে সময় দিতে পারবেন না। কিন্তু আমি অসুস্থ বোধ করি। তারপর বললাম, আমি কাছেই আছি, দেখি কথা বলি ডাক্তারের সঙ্গে। আমি সেখানে যাই। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলার পর ডাক্তার দেখেন।

হারুন বলেন, পরে তিনি (এডিসি সানজিদা) তিনটি পরীক্ষা করেন। ইসিজি, ইকো এবং ইটিটি। রোগী যখন ইটিটি রুমের ভিতরে ছিল, আমি বাইরে ছিলাম যেখানে দর্শনার্থীরা অপেক্ষা করছিলেন। এরপর তার সঙ্গে আসেন আজিজুল হক মামুন (এডিসি সানজিদার স্বামী)সহ আরও চার-পাঁচজন। তিনি পেশেন্টের রুমে যান, পেশেন্ট দেখেন। দেখে বাইরে এসে কোনো কথাবার্তা ছাড়াই আমার বাম চোখের ওপরে একটা ঘুসি মারেন। আমি খুব অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিলাম. আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই আপনি আমাকে মারলেন কেন? আপনি আমাকে স্পর্শও করতে পারেন না। তখন তার সাথে থাকা অন্যান্য ছাত্ররাও আমার উপর চড়াও হয়। তারা আমাকে জোর করে ইটিটি রুমের ভিতরে টেনে নিয়ে যায়। সেখানে পেশেন্টের সঙ্গে কথা হয়। তারা ওখানেও আমাকে মারধর করেন। পরবর্তীতে আমি আত্মরক্ষার্থে শাহবাগ থানা-পুলিশকে কল করি। শাহবাগ থানা-পুলিশ এসে সবাইকে থানায় নিয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে পুলিশ নি”’র্মমভাবে পি”টিয়ে আ’হত করে।

আহতরা হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বৈজ্ঞানিক বিষয়ক সম্পাদক শরীফ আহমেদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ।

About bisso Jit

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *