প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এরই মধ্যে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ওপর থেকে আস্থা হারিয়েছেন গ্রাহকরা। চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে লোন নিয়ে ইভ্যালিতে বিনিয়োগ করে আজ পথের ফকির কেউ কেউ। তবে এদিকে আবারো ইভ্যালির প্রতি গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে রীতিমতো কাজ করে যাচ্ছেন হাইকোর্টের নির্দেশনায় গঠিত ইভ্যালির নতুন বোর্ডের সকল সদস্যরা।
ইভ্যালিকে বাঁচিয়ে রেখে কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। নতুন বোর্ডের প্রথম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১২টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নতুন বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘যেহেতু প্রতিষ্ঠানটি অনেক সাধারণ মানুষের স্বার্থসংশ্লিষ্ট, তাই আমরা চাইব কীভাবে এটি বাঁচানো যায়। এটি বোর্ডের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।’
ইভ্যালি নিয়ে কারাগারে থাকা প্রতিষ্ঠানটির সিইও রাসেলের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা করা যায় কি না, এতে কোনো আইনি বাধা আছে কি না, এসব বিষয়েও আলোচনা হয় বোর্ড সভায়।
ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর কোম্পানি আদালতে ইভ্যালি অবসায়নে কমিটি গঠনের আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ অক্টোবর ইভ্যালির ব্যবস্থাপনার জন্য আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের বোর্ড গঠন করে দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বোর্ড গঠন করেন।
বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান, ওএসডিতে থাকা আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ ও কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক গত জুন মাসে ইভ্যালির ওপর একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। এতে উঠে আসে, ইভ্যালির চলতি সম্পদের পরিমাণ ৬৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটির দেনার পরিমাণ ৪০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ ও প্রতারণার মামলায় ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। বর্তমানে অন্ধকার কারাগারের চার দেয়ালের মাঝে দিন কাটছে তাদের।