Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / টাকা দিলেই পাওয়া যাবে যেসব দেশের নাগরিকত্ব

টাকা দিলেই পাওয়া যাবে যেসব দেশের নাগরিকত্ব

উন্নত দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার ইচ্ছা প্রায় সবারই থাকে। তাই, অনেক মানুষ তাদের দেশের চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা এবং উন্নত জীবনযাত্রার মানসম্পন্ন দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য নাগরিকত্ব পেতে চায়। কিন্তু টাকার বিনিময়ে নাগরিকত্ব? ভেবে অবাক হচ্ছেন? কিন্তু মনে রাখবেন, টাকায় কি না মেলে! টাকা দিয়ে অনেক দেশের নাগরিকত্ব কেনা যায়। নিচে আলোচিত কয়েকটি দেশে বিনিয়োগ করলেই পেয়ে যাবেন গোল্ডেন পাসপোর্ট! আসুন জেনে নিই সেসব দেশের নাম এবং কিভাবে পাবেন গোল্ডেন পাসপোর্ট।

অস্ট্রিয়া: $৯.৫ মিলিয়ন বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব
আপনি যদি কয়েক মিলিয়ন ডলারের মালিক হন তবেই আপনি অস্ট্রিয়ান নাগরিকত্ব কিনতে পারবেন। অস্ট্রিয়ার নাগরিকত্ব আইনের ধারা ১০ ধারা ৬ এর অধীনে, দেশটির সরকার ‘অসাধারণ যোগ্যতা’ প্রদর্শনকারী বিদেশীদের নাগরিকত্ব দিতে পারে। এই অসামান্য যোগ্যতার মধ্যে রয়েছে—অস্ট্রিয়ায় বৈজ্ঞানিক, সাংস্কৃতিক বা অর্থনৈতিক অবদান।

অস্ট্রিয়ান আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, আবেদনকারীদের অবশ্যই অস্ট্রিয়ান অর্থনীতিতে সরাসরি বিনিয়োগ করতে হবে। এর মধ্যে ব্যবসা, চাকরি সৃষ্টি বা নতুন প্রযুক্তির প্রবর্তন অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

নাগরিকত্বের জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের নির্দিষ্ট পরিমাণ স্পষ্ট নয়। তবে ফোর্বস ম্যাগাজিনের রিপোর্ট অনুযায়ী এই সংখ্যা প্রায় ৯৫ মিলিয়ন ডলার।

অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা: ন্যূনতম ১ লাখ ডলার
সরকারি ওয়েবসাইট অনুসারে, বিনিয়োগের মাধ্যমে অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডার নাগরিকত্ব পাওয়ার চারটি উপায় রয়েছে। সবচেয়ে কম ব্যয়বহুল বিকল্প হলো—দেশটির জাতীয় উন্নয়ন তহবিলে এক লাখ ডলার অনুদান। বিকল্পভাবে আবেদনকারীরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে দেড় লাখ ডলার দান করতে পারেন।

আবেদনকারীরা কমপক্ষে চার লাখ ডলার সমপরিমাণ অর্থ আবাসন খাতে (রিয়েল এস্টেট) বিনিয়োগ করতে পারেন। এর প্রসেসিং ফি রয়েছে আরও ৩০ হাজার ডলার।

দেশটির নাগরিকত্ব পাওয়ার সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিকল্প হলো—৩০ হাজার ডলার ফিসহ দ্বীপের একটি অনুমোদিত ব্যবসায় কমপক্ষে ১৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ করা।

ডমিনিকা: ন্যূনতম ১ লাখ ডলার
কমনওয়েলথ অব ডোমিনিকা সরকারের মতে, বিনিয়োগের মাধ্যমে ক্যারিবীয় দ্বীপ ডোমিনিকার নাগরিকত্ব পাওয়ার দুটি উপায় রয়েছে। প্রথমটি হলো—দ্বীপের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তহবিলে এক লাখ ডলার দান করা এবং দ্বিতীয়টি হলো—অনুমোদিত উন্নয়নে দুই লাখ ডলার মূল্যমানের আবাসন কেনা।

গ্রেনাডা: ন্যূনতম দেড় লাখ ডলার
গ্রেনাডা ওয়েস্ট ইন্ডিজের একটি দ্বীপরাষ্ট্র। দেশটির সরকারি ওয়েবসাইট অনুসারে, বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্বের জন্য দুটি উপায় রয়েছে, যথা—ন্যাশনাল ট্রান্সফরমেশন ফান্ডে দেড় লাখ ডলার দান করা, যা পর্যটন, কৃষি এবং বিকল্প জ্বালানিসহ বিভিন্ন শিল্প প্রকল্পে অর্থায়ন করে। এ ছাড়া কমপক্ষে ২ লাখ ২০ হাজার ডলার মূল্যমানের একটি সম্পত্তি কেনা। তবে সেই কেনা সম্পত্তি চার বছরের আগে বিক্রি করা যাবে না।

সেন্ট কিটস এবং নেভিস: দেড় লাখ ডলার
দেশটির সরকারি সরকারি ওয়েবসাইট অনুসারে, বিনিয়োগের মাধ্যমে সেন্ট কিটস এবং নেভিসের নাগরিকত্বের পাওয়ার তিনটি উপায় রয়েছে। প্রথমটি হলো টেকসই উন্নয়ন তহবিলে দেড় লাখ ডলার দান করা। ২০১৮ সালে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, বিকল্প শক্তি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দেশীয় উদ্যোক্তাদের প্রচারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য এ প্রকল্প চালু করা হয়।

দ্বিতীয়ত, আবেদনকারী ১ লাখ ৭৫ হাজার ডলার অবদান রাখতে পারেন। তৃতীয় এবং চূড়ান্ত বিকল্প হলো— কমপক্ষে ২ লাখ ডলার মূল্যমানের একটি অনুমোদিত রিয়েল এস্টেট প্রকল্পে বিনিয়োগ করা।

সেন্ট লুসিয়া: ১ লাখ ডলার
সেন্ট লুসিয়া পূর্ব ক্যারিবিয়ান সাগরে অবস্থিত একটি আগ্নেয় দ্বীপ। দেশটির বিনিয়োগ অভিবাসন কাউন্সিল অনুসারে, চারটি ভিন্ন বিনিয়োগ প্রকল্পের বিনিময়ে দেশটি নাগরিকত্ব দিয়ে থাকে।

সবচেয়ে কম ব্যয়বহুল উপায় হলো—দ্বীপের জাতীয় অর্থনৈতিক তহবিলে এক লাখ ডলার অনুদান। রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগে আগ্রহীরা কমপক্ষে তিন লাখ ডলার মূল্যমানে সম্পত্তি কিনতে পারেন, যা পাঁচ বছরের আগে বিক্রি করা যাবে না।

উপরন্তু, একটি ‘অনুমোদিত এন্টারপ্রাইজ প্রকল্পে’ ন্যূনতম ৩৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ করতে হবে, যা রেস্তোরাঁ এবং ক্রুজ পোর্ট থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরিবহন পরিকাঠামোও হতে পারে। প্রকল্পগুলো স্থানীয় অর্থনীতিতে কমপক্ষে তিনটি স্থায়ী কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে।

চূড়ান্ত বিকল্প হলো—সরকারি বন্ডে ন্যূনতম ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ করা। বর্তমানে এ প্রকল্পে কোভিড-১৯ ত্রাণ কর্মসূচির অধীনে ৫০ শতাংশ ছাড় চলছে।

জর্ডান: সর্বনিম্ন ৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার
জর্ডান ইসরায়েল সীমান্তবর্তী একটি শুষ্ক দেশ। হেনলি অ্যান্ড পার্টনারস অনুসারে, তিনটি বিনিয়োগ পদ্ধতি দেশটির নাগরিকত্ব মেলাতে পারে।

সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিকল্প হল একটি প্রকল্পে $৭৫০,০০০ বিনিয়োগ করা যা দেশের রাজধানী আম্মানের বাইরের একটি কমিউনিটিতে কমপক্ষে ১০টি স্থানীয় চাকরি তৈরি করে। আর মূলধন প্রকল্পগুলোতে ন্যূনতম ১০ লাখ ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন।

অন্যান্য বিনিয়োগের মধ্যে রয়েছে- সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ জর্ডান (CBJ) এর সাথে ন্যূনতম তিন বছরের জন্য $১০ জমা করা, অথবা $১ মিলিয়ন মূল্যের ট্রেজারি বন্ড কেনা এবং ছয় বছরের জন্য ধরে রাখা৷

প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি চূড়ান্ত বিকল্প হল অন্তত $১.৫ মিলিয়ন মূল্যের একটি জর্ডানের কোম্পানির শেয়ার কেনা।

মাল্টা: ৭ লাখ ৩৮ হাজার ইউরো থেকে ৮ লাখ ৮৮ হাজার ইউরো
মাল্টা ইতালির উপকূলে অবস্থিত একটি দ্বীপরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য। জটিল হলেও এদেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগও রয়েছে।

হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের মতে, আন্তর্জাতিক আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার কারণে দেশটি এখন বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়া সবচেয়ে কঠিন। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে গোল্ডেন পাসপোর্ট নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে।

কনসালটেন্সি ফার্ম PwC এর মতে, চারটি বিনিয়োগ শর্ত পূরণ করে মাল্টিজ নাগরিকত্ব অর্জনের পথ এখনও খোলা আছে:
ক. কমপক্ষে ৭ লাখ ইউরো মূল্যের রিয়েল এস্টেট ক্রয়।
খ. অর্থনীতি থেকে ৬ মিলিয়ন ইউরো এবং একটি অতিরিক্ত অবদান ৭ থেকে দেড় মিলিয়ন ইউরোর মধ্যে।
গ. একটি অনুমোদিত বেসরকারী সংস্থায় ১০,০০০ ইউরো অনুদান।
ঘ. মাল্টায় ১২ থেকে ৩৬ মাস থাকার পর বার্ষিক ন্যূনতম €১৬,০০০ মূল্যের একটি লিজের অধীনে ইস্যু করা বৈধ আবাসিক কার্ডের ধারক হন।

About bisso Jit

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *