শিক্ষা সচিব মো. মাহবুব হোসেন হঠাৎ করেই পা জড়িয়ে ধরলেন সাবেক প্রধান শিক্ষক অ্যাড. নজরুল হামিদের। সচিব ছাত্রজীবনে থাকাকালীন তার প্রিয় শিক্ষক ছিলেন ফুলঝুরি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক এই প্রধান শিক্ষক। শিক্ষক অ্যাড. নজরুল হামিদকে দীর্ঘ ৪৪ বছর পর দেখতে পান এবং তিনি সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছাত্র এবং অতিথিদের সামনেই তার পা জড়িয়ে ধরেন এবং সালাম করেন।
সেই আবেগময় সময়ে শিক্ষা সচিব বলেন, এই স্কুলটি আমার শিক্ষাজীবনের প্রথম উচ্চ মাধ্যমিকে পড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং আমার শিক্ষাগুরু হলেন এই বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নজরুল হামিদ। নজরুল হামিদ এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন, ১৯৭৭ সালে যখন মাহবুব হোসেন বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তার শিক্ষকের প্রতি এই সম্মান দেখে উপস্থিত সকলে অভিভূত হয়ে পড়েন। পরে সাবেক এই শিক্ষার্থী তার শিক্ষককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এবং বাসভবনে গিয়ে কুশল বিনিময় করেন। সাবেক প্রধান শিক্ষক নজরুল হামিদ একটি গনমাধ্যমকে বলেন, আমি অভিভূত হয়েছি। আজ মনে হচ্ছে সত্যিকারের শিক্ষা আমরা দিতে পেরেছি।
আজকে যে সম্মান আমাকে মাহবুব দেখালো এটি শিক্ষার্থীদের মধ্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালুকরণ সম্পর্কিত বিদ্যালয় প্রধানদের সাথে মতবিনিময় সভা ও বরগুনা ফুলঝুড়ি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
রবিবার সকাল ১১ টার দিকে বরগুনা সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে বরগুনা সদর উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালুকরণ সম্পর্কে মতবিনিময় করেন তিনি।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিভাগের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন নসা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস।
পরে বেলা দেরটায় ফুলঝুড়ি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবীরের সভাপতিত্বে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন করেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস, জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান, জেলা শিক্ষা নির্বাহী প্রকৌশলী হাদিউজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শুভ্রা দাস, সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সামিয়া শারমিন, বরগুনা সদর সহকারী কমিশনার ভূমি নিজাম উদ্দিন। এসময় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দাবি তুলে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বশির আলম।
শিক্ষা সচিবের এই ধরনের মহানুভবতা দেখে সেখানে উপস্থিত ছাত্র এবং অতিথিরা অনেকটা অবাক হয়ে যান এবং তারা তার এই ধরনের আবেগ দেখে তারাও আবেগময় হয়ে পড়েন। ঐ এলাকায় শিক্ষা সচিবের শিক্ষকের প্রতি এই ধরনের শ্রদ্ধা দেখে তার প্রশংসা করেন। তারা জানান, সাধারনত আমরা দেখতে পাই। কোনো ব্যক্তি যদি বড় কোনো পদে চলে যায় তাহলে তারা পেছনের অবদান রাখা মানুষদের ভূলে যান কিংবা অনেকটা না চেনার ভান করে থাকেন। কিন্তু শিক্ষা সচিবের বেলায় তার বিপরীতটা দেখা গেল। যেটার কারনে তিনি প্রশংসার দাবি রাখেন।