Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / International / সদ্য প্রয়াত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের প্রেমিকা সেই নারী এখন বাংলাদেশে

সদ্য প্রয়াত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের প্রেমিকা সেই নারী এখন বাংলাদেশে

পারভেজ মোশারফ, পাকিস্তানের এক সময়ের প্রভাবশালী একটি নাম এটি। তিনি একটা সময়ে ছিলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট। বিতর্কিত ও আলোচিত চরিত্র পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মোশাররফ ৭৯ বছর বয়সে মারা গেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে কেমন ছিলেন পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান?

কেমন ছিল তার প্রেম জীবন? মোশাররফ নিজেই তার আত্মজীবনীমূলক বইয়ে লিখেছেন। সেখানে এক বাঙালি মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমের গল্প শোনালেন তিনি।

জেনারেল পারভেজ মোশাররফ ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের শাসক ছিলেন। তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘ইন দ্য লাইন অফ ফায়ার: এ মেমোয়ার’ ২০০৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।

সেখানে জীবনের নানা দিক তুলে ধরার পাশাপাশি পাঠকদের সামনে তুলে ধরেন তাঁর প্রেমময় জীবন। মোশাররফ জানান, তার দ্বিতীয় প্রেমিকা একজন বাঙালি মেয়ে। যদিও সেই প্রেম ব্যর্থ হয়। ওই নারী এখন বাংলাদেশে থাকেন।

মোশাররফ তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, “তিনি এখন সুখী বিবাহিত। বাংলাদেশে থাকেন।’ কিন্তু এই কূটনীতিক কখনোই সেই বাঙালি প্রেমিকের নাম জনসমক্ষে আনেননি।আত্মজীবনীতে নিজের দ্বিতীয় প্রেমিককে নিয়ে যে কয়েক লাইন লিখেছেন, সেখানে তিনি শুধু ‘বাঙালি’ শব্দটি উল্লেখ করেছেন।এবং এই প্রেম কীভাবে হয়েছিল তা জানিয়েছেন।

প্রাক্তন পাকিস্তানি রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন যে বাঙালি মেয়ের প্রেমে পড়ার আগে তিনি অন্য সম্পর্কে ছিলেন। কিন্তু সেটা শুধুই কিশোর প্রেম। মোশাররফের জীবন থেকে ‘প্রথম প্রেমিকা’ উধাও হয়ে গেল প্রেম ছিল কি না।

মোশাররফ উল্লেখ করেন, দ্বিতীয় প্রেম অর্থাৎ বাঙালি মেয়ের সঙ্গে তার প্রেম প্রথমটির চেয়ে অনেক গভীর ছিল। কিশোর প্রেমের আখ্যানে মোশাররফ লিখেছেন, কীভাবে গোপনে প্রেমিকাকে চিঠি পাঠাতেন তিনি। সে তার সাথে দেখা করার জন্য কতটা আগ্রহী ছিল।

মোশাররফ বলেন, বাঙালি প্রেমিক তার প্রতিবেশী। করাচির গার্ডেন রোডে তাদের পাশাপাশি বাড়ি ছিল। যাতায়াতের পথেই পরিচয় এবং দেওয়া-নেওয়া হয়।

আত্মজীবনীতে মোশাররফ বলেছেন, গার্ডেন রোডের বাড়িটি ছিল তার কিশোর প্রেমের রাজধানী। প্রথম প্রেমিকের বাড়ি ছিল গার্ডেন রোডে। কিন্তু পরে তার পরিবার অন্যত্র চলে যায়। এরপর শুরু হয় দ্বিতীয় প্রেম।

দ্বিতীয় প্রেমিকা সম্পর্কে মোশাররফ লিখেছেন, “সে সুন্দরী এবং বাঙালি ছিল।” তাদের বাড়ি পূর্ব পাকিস্তানে। আগের প্রেমের মতো এই প্রেম আমার কাছে এত তুচ্ছ ছিল না।’ পাকিস্তানের প্রাক্তন কূটনীতিক এই ‘অত তুচ্ছ’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন পরোক্ষভাবে বোঝাতে যে তিনি এই প্রেমের বিষয়ে ‘গুরুতর’।

মোশাররফ জানান, তার দ্বিতীয় প্রেমের সম্পর্ক কয়েক বছর ধরে চলে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদানের আগ পর্যন্ত তিনি তার প্রেমিকের সাথে নিয়মিত দেখা করতেন। এমনকি পাক আর্মিতে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত তার সম্পর্কে ছিল।

সেনাবাহিনীতে যোগদানের পরও মোশাররফের হৃদয় পাড়ায় রয়ে গেছে। বিশেষ করে বাঙালি প্রেমীদের জন্য। তিনি বলেছিলেন যে তিনি প্রাথমিকভাবে ৩৬ তম ‘হালকা অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট রেজিমেন্ট’-এর প্রশিক্ষণের জন্য করাচিতে গিয়েছিলেন যাতে তার প্রেমিকার থেকে খুব বেশি দূরে কোথাও যেতে না হয়।

বইটিতে মোশাররফ লিখেছেন, ‘সেনা প্রশিক্ষণের জন্য করাচিকে কেন বেছে নিলাম? না, এটা আমার পরিবারের কারণে নয়। এটা সেই বাঙালি মেয়ের জন্য। তিনি সেখানে থাকতেন তাই…’ কিন্তু ন্যূনতম অস্ত্র প্রশিক্ষণ ছাড়া কেউ সরাসরি ‘এন্টি-এয়ারক্রাফ্ট রেজিমেন্টে’ যেতে পারে না। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও পরে অন্যত্র চলে যেতে হয়। সে তার প্রেমিকের প্রতি অনুভূতি নিয়ে তার কাছ থেকে দূরে সরে গেছে।

মোশাররফ বলেন, তার দ্বিতীয় প্রেমের ‘শেষ’ ছিল ‘হঠাৎ’ এবং ‘অপ্রত্যাশিত’। মোশাররফ লিখেছেন, ‘সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হলো মেয়েটির পরিবার হঠাৎ করে পূর্ব পাকিস্তানে চলে গেছে। আর সেখানেই প্রেমের ইতি ঘটে।

বাঙালি মেয়ের সঙ্গে প্রেম করতে গিয়ে ধরা পড়েন সাবেক পাক সেনাপ্রধানও। সমস্যা মেয়েটির। মোশাররফ লিখেছেন, ‘তার মা আমাদের সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ করেন। কারণ, সে (বান্ধবী) লেখাপড়ার প্রতি ক্রমশ উদাসীন হয়ে পড়ে।’

মোশাররফ লিখেছেন, ‘আমি গড়পড়তা ছাত্রের চেয়ে ভালো শিক্ষিত ছিলাম। ক্লাসের প্রথম চার-পাঁচজনের মধ্যে নাম ছিল। আমার বয়স যখন ১৫ বছর, আমার পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হতে শুরু করে।

মোশাররফ লিখেছেন যে তার প্রথম প্রেম হয়তো ক্রাশ ছাড়া আর কিছুই ছিল না। কিন্তু চিঠি দেওয়া-নেওয়া চলতেই থাকল। দাদির অজানা, ছোট মোশাররফই তাকে ‘ভালোবাসার পোস্টম্যান’ বানিয়েছিলেন। দাদি বলতেন, ‘যাও প্রতিবেশীর সঙ্গে দেখা করো।’

আর তার অলক্ষ্যে বোরখার পকেটে ভরে দিতেন প্রেমপত্র। প্রেমপত্র কোথায় থাকবে তা প্রেমিকাকে আগেই বলে দেওয়া হতো। বেশ কিছু দিন এভাবেই চলছিল প্রেম। কিন্তু প্রথম প্রেমিকার পরিবার দূরে সরে যাওয়ার পর মোশাররফের জীবনে দ্বিতীয় প্রেম প্রবেশ করে। কিন্তু দ্বিতীয় প্রেম ছিল শক্তিশালী। কিন্তু সেখানেও ব্যর্থ হন। এখন সেই প্রেমিক বাংলাদেশ বা পশ্চিমবঙ্গে থাকেন বলে জানান মোশাররফ।

প্রসঙ্গত, এ দিকে পাকিস্তানে এখন বইছে শোকের ছায়া। নানা ভাবে পারভেজ মোশারফ বিতর্কিত হলেও একটি নাম হলেও পাকিস্তানে তার রয়েছে বড় একটি প্রভাব। আর এই কারণেই অনেকেই তার জন্য করেছেন শোক প্রকাশ।

About Rasel Khalifa

Check Also

বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানিতে বড় পতন

বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানিতে বড় পতন হয়েছে। শুধু আগস্টেই রপ্তানি কমেছে ২৮ শতাংশ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ভারতের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *