Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / স্ট্যাম্পে সই করিয়ে শরীরের অনেক স্থানে ব্যান্ডেজ করা গৃহকর্মীকে বিদায় দিল ব্যবসায়ী গৃহকর্তা

স্ট্যাম্পে সই করিয়ে শরীরের অনেক স্থানে ব্যান্ডেজ করা গৃহকর্মীকে বিদায় দিল ব্যবসায়ী গৃহকর্তা

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের ১২ বছর বয়সী গৃহকর্মী নিপা আক্তার ঢাকার একজন ব্যবসায়ীর বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করছিল। দিনমজুর বাবা কিংবা মায়ের সাথে দেখা করা যাবে না এমন শর্ত দিয়ে ওই ব্যবসায়ী নিপার সৎমায়ের নিকট প্রত্যেক মাসে ২০০০ করে টাকা পাঠিয়ে দিতেন। কিন্তু ভিন্ন ধরনের একটি ঘটনা ঘটে কিছু দিন পর। ঐ মেয়েটির বাবাকে পাঁচ দিন আগে তিন হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়ে দ্রুত ঢাকার যাওয়ার কথা বলেন।

দিনমজুর বাবা মোর্শেদ আলী পরদিন ঢাকায় যাওয়ার পর জানতে পারেন মেয়েটিকে একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানতে পারেন। সেখানে পৌঁছে বাড়িওয়ালাসহ বেশ কয়েকজন কাগজপত্রে সই নিয়ে মেয়েটিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু মেয়েটির অবস্থার অবনতি হলে পরদিন সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত শুক্রবার বিকেলে নিপা মা”/রা যায়।

নিপার বড় বোন কল্পনা আক্তার (২৪) সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, তাদের সন্দেহ, বাড়িওয়ালার সহায়তায় একটি দল তার বোনের কিডনি বা অন্যান্য অঙ্গ রেখে দিয়েছে।

নিপার বোন বা বাবা-মা ব্যবসায়ীর নাম বলতে পারেননি। বাড়িটি ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বরে, শুধু এতটুকু জানা গেছে। যে নম্বরে ওই ব্যবসায়ী ফোন করেছিলেন, পরে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

নিপা ঈশ্বরগঞ্জের রাজীবপুর ইউনিয়নের মাছুয়াডাঙ্গা গ্রামের মোর্শেদ আলীর ছোট মেয়ে। মোর্শেদ জানান, গত শুক্রবার বিকেলে গ্রামে গিয়ে ক্লিনিকে গিয়ে দেখেন মেয়েটির শরীরে অনেক যন্ত্র লাগানো রয়েছে। তখন তার সন্দেহ হয়। তিনি হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে ব্যবসায়ী তাকে বাধা দেন। পরে একাধিক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বলেন। রাজি না হলে অ”/স্ত্র দেখান। এরপর স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেন তার স্ত্রী নাসিমা।

নিপার বড় বোন কল্পনা আক্তার জানান, নিপাকে বাড়িতে নিয়ে আসার পর দেখেন নিপার বুক থেকে তলপেট পর্যন্ত ব্যান্ডেজ বাঁধা।

নিপার শ্যালিকা শাহনাজ বেগম জানান, তিনি ব্যান্ডেজ খুলে নিপার তলপেট ও বুকের দুই পাশে কাটা দেখেন। দেখে মনে হচ্ছে কয়েকদিন আগে অপারেশন করা হয়েছে।

নিপাকে ঢাকায় নিয়ে আসে লাঠিয়ারচরের সামছু মেম্বার নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, প্রথম মালিক হেদায়েত সাহেব। পরে সে কার বাড়িতে ছিলেন তা তিনি জানতেন না।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি-৩ ইউনিটের নিপার চিকিৎসার চিকিৎসক খালেদ হোসেন জানান, শি”শুটিকে ঢাকার মিরপুর পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা। সেখান থেকে চিকিৎসা না করে অজ্ঞাত কারণে তাকে এখানে আনা হয়। ভর্তির কয়েক ঘণ্টা পর ঘণ্টা পরই সে মারা যায়। শরীরে একাধিক আঘা”তের কারণে ব্যাপক রক্তক্ষ”রণে তার মৃ”/ত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বুক ও পেটের বিভিন্ন স্থানে ব্যান্ডেজ ছিল। তা ছাড়া উচ্চ ডায়াবেটিস ছিল।

শাহ কামাল আকন্দ যিনি ময়মনসিংহ কোতয়ালী থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি জানান, সুরতাল রিপোর্টে দেখা গেছে যে টার বুকে ও পেটের অনেক স্থানে সেলাই ও ব্যান্ডেজের দাগ। পরবর্তীতে সাধারন ডায়েরীর ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। অভিযোগ করার জন্য নিপার বাবা-মাকে সাথে নিয়ে রাজধানীর মিরপুর থানায় গিয়েছেন এসআই আরিফ।

About bisso Jit

Check Also

সংস্কারের নামে ভয়াবহ দুর্নীতি-লুটপাট

সংস্কার ও উন্নয়নের নামে কয়েকগুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে হরিলুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *