দক্ষিন এশিয়ার অর্ন্তভূক্ত একটি দেশ পাকিস্তান। দেশটিতে সরকারের দায়িত্ব পালন করছেন ইমরান খান। তিনি সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নানা বিষয় নিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে উপহার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। তার এই অভিযোগকে ঘিরে দেশটির বিরোধী দলের অনেকেই অনেক ধরনের কথা বলেছেন। এই বিষয়ে বিস্তারিত উঠে এলো প্রকাশ্যে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অন্য দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের কাছ থেকে পাওয়া উপহারসামগ্রী বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে ১০ লাখ মার্কিন ডলারের একটি ঘড়িও রয়েছে। বুধবার এমনই অভিযোগ করা হয়েছে পাকিস্তানের কয়েকটি বিরোধী দলের পক্ষ থেকে। বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রীয় সফরকালে সংবিধানসম্মত পদে অধিষ্ঠিত রাষ্ট্রপ্রধান বা কর্মকর্তাদের মধ্যে নিয়মিতভাবে উপহার বিনিময় হয়ে থাকে। গিফট ডিপোজিটরি (তোশাখানা) নিয়ম অনুসারে, এ উপহারগুলো খোলা নিলামে বিক্রি না হওয়া পর্যন্ত রাজ্যের সম্পত্তি হিসাবে বিবেচিত হয়। পিএমএল-এন-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ উর্দুতে করা টুইটে লৈখেন, ইমরান খান অন্যান্য দেশ থেকে পাওয়া উপহার বিক্রি করেছেন। মরিয়ম প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘খলিফা হযরত ওমর (রা.) তাঁর জামা এবং পোশাকের জন্য দায়বদ্ধ ছিলেন এবং অন্যদিকে আপনি (ইমরান খান) তোশাখানা থেকে বিদেশি উপহার লুটে নেন। অথচ আপনি মদিনা সনদ অনুযায়ী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেন! একজন ব্যক্তি কিভাবে এতটা অসংবেদনশীল, বধির, বোবা এবং অন্ধ হতে পারে?!’
বিরোধী জোট পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) সভাপতি মাওলানা ফজলুর রেহমান বলেছেন, এমন খবর রয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী খান একজন রাজপুত্রের কাছ থেকে পাওয়া একটি মূল্যবান ঘড়ি বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, এটা লজ্জাজনক। একটি উপসাগরীয় দেশের রাজপুত্র খানকে ১০ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের একটি ঘড়ি উপহার দিয়েছেন মর্মে একটি প্রতিবেদন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। ঘড়িটি দুবাইতে বিক্রি করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রীকে ১০ লাখ ডলার দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আরো দুঃখজনক বিষয় হলো, ওই রাজপুত্র জেনে ফেলেন যে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ঘড়িটি বিক্রি করে দিয়েছেন। পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) পাঞ্জাবের সভাপতি রানা সানাউল্লাহ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছ থেকে পাওয়া উপহার বিক্রির অভিযোগে পাকিস্তানের মানহানি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (রাজনৈতিক যোগাযোগ) ডা. শাহবাজ গিল বলেন, সাধারণত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান রাষ্ট্রীয় তোশাখানাতে এ ধরনের উপহার জমা করেন। যদি তিনি সেগুলো তাঁর কাছে রাখতে চান, তবে তাকে এর জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে হবে’।
বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রীয় সফরকালে রাষ্ট্রপ্রধান বা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে নানা ধরনের উপহার বিনিময় হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে অনেক নামি-দামি উপহার আদান-প্রদান হয়ে থাকে। তবে এই সকল উপ হার সামগ্রী গিফট ডিপোজিটরি নিলামে বিক্রি না হওয়া পর্যন্ত রাজ্যের সম্পত্তি হিসাবে বিবেচিত হয়।