তমা মির্জাকে ২০১০ সালের দিকের একটি জনপ্রিয় সিনেমা ‘বলো না তুমি আমার’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় দেখা গিয়েছিল। তিনি একই সাথে বিজ্ঞাপন এবং নাটকেও দুই জায়গায়ই অভিনয় করেছেন। তাছাড়া, তিনি বেশ কয়েকটি ছবিতে সহ-অভিনেত্রী হিসাবেও কাজ করেছেন। তবে অনন্ত হীরা পরিচালিত ‘ও আমার দেশের মাটি’ সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করার মাধ্যমে তিনি তারকা খ্যাতি কুড়িয়েছিলেন। চিত্রনায়িকা হিসেবে বিনোদন জগতে নিজের একটি জায়গা পান। শাহনেওয়াজ কাকলীর ‘নদীজন’ ছবিতে সহায়ক ভূমিকার জন্য তমা ২০১৫ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
তবে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিনকে দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাংলাদেশের ওটিটি প্লাটফর্ম। সেই সুবাদে তমা মির্জাও নিজেকে মেলে ধরেছেন। ব্যক্তিজীবনের নানা টানাপড়েনের ধকল শেষ করে আবারও নিয়মিত হয়েছেন অভিনয়ে। নিজেকে ভে’ঙেচু’রে গড়ে তোলার নামই তো জীবন। সেই জীবনের কিছু কথা ও সম্প্রতি নিজের নতুন কাজ নিয়ে কথা বলেছেন দেশের একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন ঐ চ্যানেলের রিপোর্টার কুদরত উল্লাহ।
মিডিয়া: প্রায় এক যুগ হতে চলল মিডিয়ায় কাজ করছেন, দীর্ঘ এ পথচলা কীভাবে দেখছেন?
তমা মির্জা: হ্যাঁ, পথটা অনেক দীর্ঘ। এ পথে অনেকেই আমাকে সাপোর্ট করেছেন। তাদের জন্য ভালোবাসা। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি অল্প বয়সেই। কিছুটা পলিটিক্স দেখেছি, কাদা ছো’ড়াছু’ড়ি দেখেছি। তাই তো সবসময় চেষ্টা করি নির্ভেজাল থাকতে। আমার কাছে কাজটাই এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়।
মিডিয়া: তাহলে অভিনয়ে নিয়মিত?
তমা মির্জা: হ্যাঁ, বেশ কিছুদিন ধরেই করছি। তবে একটু সাবধানে করতে হচ্ছে। ভ’/য়টা এখনও কাটেনি। তাছাড়া পারিবারিকভাবে কিছুটা ঝা’/মেলার মধ্যে ছিলাম। সবকিছু কাটিয়ে এখন অভিনয়ে নিয়মিত হয়েছি। তবে এখন ওয়েব ফ্লিমের প্রমোশন নিয়ে একটু ব্যস্ত।
মিডিয়া: সম্প্রতি আপনার অভিনীত ওয়েব ফিল্ম ‘খাঁচার ভেতর অচিন পাখি’-এর চরিত্র নিয়ে কিছু বলুন…
তমা মির্জা: আসলে এখনই সব বলতে চাচ্ছি না। এই গল্পের পাখি চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে এখনও মনে হয় আমি ঘোরের মধ্যে আছি। একটা ফ্যাক্টরির মধ্যে আ’টকে পড়ে যাওয়া মেয়ের চরিত্রেই আমি অভিনয়ে করেছি। মূলত তারপর থেকেই গল্পে টানটান উ’ত্তেজ’না চলে আসে। নানা রকম ঘটনা ঘটতে থাকে। সাসপেন্স, থ্রিলার সব কিছুই আছে বলতে পারেন এই গল্পে। বাকিটা দর্শক দেখলে বুঝতে পারবে। এখনই আর বলা যাচ্ছে না।
মিডিয়া: এই ওয়েব ফিল্মের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?
তমা মির্জা: নির্মাতা হিসেবে রায়হাস রাফি নিঃসন্দেহে দারুণ মানুষ। তার উপর শুটিং সেটে কিছু গুণী অভিনয়শিল্পী পেয়েছি। এরমধ্যে ফজলুর রহমান বাবু ভাই আমাকে এতটা সাপোর্ট করবেন আমি ভাবতেই পারিনি। তার সঙ্গে কাজ না করলে বুঝতেই পারতাম না যে তিনি কোন লেভেলের অভিনেতা। ট্রেলার প্রকাশে নিশ্চয়ই দর্শক কিছুটা বুঝতে পেরেছে যে এই গল্পের প্রতিটি চরিত্রই হচ্ছে মূল চরিত্র। তাই আমার নিজের পক্ষে পুরাটা বলা সম্ভব নয়। এতটুকুই বলব আমি আমাকে ভা’ঙ্গতে পেরেছি বোধহয় এই চরিত্রে অভিনয় করে।
মিডিয়া: এ মুহূর্তে কোনও বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের প্রস্তাব রয়েছে?
তমা মির্জা: অনেকগুলো প্রস্তাব আছে। কিন্তু প্রস্তাব পেলাম আর কাজ শুরু করে দিলাম অভিনয় বিষয়টা এমন নয়। আপাতত একটু ভেবেচিন্তে অভিনয়টা করতে চাই। অবশ্যই ভালো গল্প ও স্ক্রিপ্ট নির্ভর কাজ করব। নিজের ও পরিবারের ওপর দিয়ে বেশ ধ’কল গেছে। তাই চরিত্র এবং প্লাটফর্ম যদি পছন্দ হয় সেটা করব। তবে একেবারে আগে যেভাবে বাণিজ্যিক সিনেমাগুলো করেছি, সে রকম চলচ্চিত্রে বোধহয় আর অভিনয় করা হবে না। এসব চলচ্চিত্র থেকে একটু দূরে থাকতে চাই, অভিনয়টা ভালোমতো করি। ভালো চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব যদি দেরিতেও আসে তাহলেও চলবে। অন্তত দিন শেষে নিজের মনকে বলতে পারব, হ্যাঁ আমি ভালো একটা চরিত্রে কাজ করেছি।
মিডিয়া: শুটিং থাকলে তো প্রচুর ব্যস্ত থাকতে হয়। এত ব্যস্ততার পর দিনশেষে নিজেকে কতটুকু সময় দিতে পারেন?
তমা মির্জা: কাজ যদি না থাকে তাহলে প্রচুর ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগে। পরিবারকে সময় দিই আবার নিজেকেও সময় দিই। গল্প-উপন্যাস পড়তে খুব ভালো লাগে। আর আমি খুব ইমোশনাল মানুষ। অল্পতেই মন গলে যায়।
মিডিয়া: ব্যক্তিগত জীবন কেমন যাচ্ছে? বিয়ের আগে কোনো প্রেম করেছিলেন?
তমা মির্জা: প্রেম নিয়ে এখন বলতে তো তেমন লজ্জা নেই, সাহস নিয়ে করেছিলাম। যে সময় অনেকে প্রেম করতে সাহস পায়নি। (হাসি দিয়ে) আর ভাইয়া একটা কথা বলি, আজ না হয় কাজ নিয়ে আলাপ হোক। ব্যক্তি জীবন নিয়ে একদিন কফি খেতে খেতে গল্প করব।
উল্লেখ্য, পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে ৭ মে, ২০১৯ তারিখে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক হিশাম চিশতীর সঙ্গে তমা মির্জার বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবন শুরুতে ভালোই চলে। দুবাইতে তাদের হানিমুনও হয়েছিল। হঠাৎ করেই তাদের মধ্যে দ্ব’ন্দ্বের খবর প্রকাশ পায়। এরপর তমা আর হিশাম হয়ে যান আলাদা। তমা মির্জা বিভিন্ন কারণে তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করেন। এক সময় তিনি এবং তার স্বামী হিশাম চিশতী পরস্পরের বিরু’দ্ধে মা’ম/লা করেন। হিশাম চিশতী বাড্ডা থা’/নায় ফৌজদারি মা’মলা দা’য়ের করেন। মা’ম’লার প্রধান আ’/সা’/মি করা হয় তমা মির্জাকে। এছাড়া তার বাবা -মা, ভাই এবং একজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকেও অভিযুক্ত করেন।