ভোটাররা ব্যাচ ঝুলিয়ে, ভোটার স্লিপ এবং এনআইডি হাতে নিয়ে ভোট দেওয়ার জন্য হাজির হয়েছেন ভোটাররা। দায়িত্বপ্রাপ্তরা ভোটের দিনের মতো নামের তালিকা নিয়ে বসে রয়েছেন। তাদের পিছন দিকে দেখা গেছে স্বচ্ছ ব্যালট। যাইহোক, এই ভোটের যে দৃশ্য বলা হলো এটা কোনো নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষনা দেওয়া ভোট নয়। আসন্ন ৩য় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য বাঞ্ছারামপুর উপজেলাধীন পাহাড়িকান্দি ইউনিয়ন পরিষদে কারা হবেন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী তাদের তালিকা চূড়ান্ত করার জন্য এই ধরনের ভোট আয়োজন। যেটা আসল ভোটের পূর্বে যেন আরেকটি ভোট।
আজ (বুধবার) সকালে উপজেলার ক্যাপ্টেন এবি তাজুল ইসলাম অডিটোরিয়ামের হলে এ ভোট অনুষ্ঠিত হয়। বাইরে এখনও চলমান রয়েছে উৎসবের আমেজ। চলমান ভোটে করা হচ্ছে প্রার্থীদের জন্য ভোট প্রার্থনা। নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও বিনয়ের সাথে কাউন্সিলরদের ভোট দিতে বলছেন। এটি একটি ভিন্ন চিত্র।
ভোট গ্রহনের জন্য অন্য ইউনিয়ন থেকে আনা হয়েছে প্রিজাইডিং অফিসার। প্রার্থীদের ছবিযুক্ত তালিকাও করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রতিটি ওয়ার্ডের ভোটারদেরও তালিকা করা হয়েছে ছবিযুক্ত।
আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে র্যাব-পু’/লিশ মোতা’য়েনও করা হয়েছে। লাইনে দাড়িয়ে ভোটাররা আগামী দিনে কে হবেন নৌকার চেয়ারম্যান তা বাছাই করছেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় এ ব্যতিক্রমী ভোটের উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য, ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম। প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য তিনদিন ব্যাপী কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
ভোটের আগেই ভোট এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তিনজন প্রার্থীর নাম পাঠানো হবে কেন্দ্রে। তৃণমূল নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন ও গণতান্ত্রিক চর্চা পৌঁছে দিতেই এ আয়োজন। বুধবার উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। এগুলো হলো পাহাড়ীকান্দি, বাঞ্ছারামপুর সদর ও দরিকান্দি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে নতুন মডেল সৃষ্টি করতেই স্থানীয় এমপি ক্যাপ্টেন এবি তাজুল ইসলাম ব্যক্তিক্রম এ পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন। এতে তৃণমূল নেতাকর্মীরা তাদের মতামত দিয়ে আগামী দিনের নৌকার কাণ্ডারি মনোনীত করবেন।
উদ্বোধনী ভাষনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য ক্যা’প্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম বলেন, তৃণমূলে গণতন্ত্র সুসংগঠিত করতে এই পদ্ধতি বেছে নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল সেটাই প্রমাণ। শুধু ইউনিয়ন পরিষদই নয়, পর্যায়ক্রমে সব নির্বাচনে এমন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে। তৃণমূল নেতাকর্মীই আওয়ামী লীগের প্রাণ। আজকে আমি এমপি আপনাদের কারনেই। আজকে যারা ডায়াসে বসে আছেন তাদের এখানে বসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন আপনারা। কাজেই নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে।
ভোটের যে ফলাফল পাওয়া গেছে সেটা মেনে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মনে রাখবেন, এই যে ফলাফল পাওয়া গেছে সেটা মনোনয়নের জন্য চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নয়। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যিনি নিবেন তিনি হলেন আমাদের নেত্রী এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি নানা ধরনের জরিপের প্রেক্ষিতে প্রার্থী কে বা কারা হবেন সেটা চূড়ান্ত করে দিবেন। যাইহোক, আমাদের নেত্রী তৃণমূলের মতামতকে সব সময় গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
তিনি বলেন যে, বিজয়ীরা খুব বেশি উৎসাহী হবেন না এবং অন্যদের সম্মানকে নিজে উচ্ছ্বসিত হয়ে ছোট করবেন না। এবং যারা বিজয়ী হতে পারেননি, তারা এই ফলাফলকে গুরুত্ব দেবার দরকার নেই, এ নিয়ে বিশৃ’ঙ্খলা সৃষ্টি করার কিছু নেই। যারা কোনো ধরনের বি’শৃংখলা পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা সিদ্ধান্তে যেতে বা’ধ্য হবো।