Saturday , September 21 2024
Breaking News
Home / Exclusive / পাওয়া গেল বিদেশে তিন শতাধিক বাংলাদেশিকে আটকে রাখা মাফিয়া শরীফের পরিচয়

পাওয়া গেল বিদেশে তিন শতাধিক বাংলাদেশিকে আটকে রাখা মাফিয়া শরীফের পরিচয়

প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ভাগ্য বদলের আশায় শ্রমিক হিসেবে যান। কিন্তু অনেক সময় পাচার চক্রের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয়ে যান, কিংবা বিদেশে গিয়ে কাজ না পেয়ে প্রতারণার শিকার হন। আমাদের দেশের কিছু অসাধু মানব পাচার চক্রের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা এমন ধরনের প্রতারণা করে থাকেন বিদেশে গমনেচ্ছুদের সাথে। এবার তেমনই একজন প্রতারক মানব পাচার চক্রের মুল হোতার সন্ধান পেল পুলিশের বিশেষ বিভাগ।

মানব পাচার চক্রের মূল হোতা কুমিল্লার শরীফ লিবিয়ায় মাফিয়া শরীফ নামে পরিচিত। তার নেতৃত্বে মুক্তিপণের জন্য লিবিয়ার ‘গেম ঘরে’ আটকে পড়া তিন শতাধিক বাংলাদেশিকে অমা”নুষিক নি”র্যা/তন করা হয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) এ তথ্য পেয়েছে।

সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সিটিটিসির উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জসিম উদ্দিন দেশের একটি সংবাদ মাধ্যমকে এসব কথা জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগীরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিতে দালালদের সহায়তায় লিবিয়ার বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমায়। সেখানে তাদের আটক করে মুক্তিপণের জন্য অমা’নবিক নি/র্যা”তন করা হয়। আর দালাল এ চক্রের মূলহোতা কুমিল্লার শরীফ, যাকে লিবিয়ার সবাই মাফিয়া শরীফ নামে চেনে। পুরো গ্যাং শনাক্তের পর পুলিশের সিটিটিসি জানায়, লিবিয়া থেকে শরীফকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

জানা যায়, মুন্সীগঞ্জের রাজু আট মাস ধরে লিবিয়ার একটি নি”র্যা/তন শিবিরে ব”ন্দিদশায় রয়েছেন। উন্নত জীবনের সন্ধানে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু তার ভাগ্যের চাকা আটকে গেছে ‘গেম ঘর’ নামে পরিচিত লিবিয়ার বেনগাজির নি”র্যা/তন শিবিরে।

তিন শতাধিক বাংলাদেশি রাজুর মতো আটকা পড়েছে এই ‘গেম হাউসে’। আর এসব গেম ঘরের মালিক বা কন্ট্রোলার শরীফ হোসেন। কুমিল্লার বাসিন্দা শরীফ লিবিয়ায় মাফিয়া শরীফ নামে পরিচিত। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে শরীফ চক্র লিবিয়া নিয়ে গেম ঘরে আটকে রেখে মুক্তিপণের জন্য নির্যাতন চালায়।

মানব পাচারের একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশের কাউন্টার টের’রিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট।

সংগঠনটি বলছে, মাদারীপুরের রিক্তার হাতে লিবিয়ায় আটকে থাকা ভিকটিমের পরিবারগুলোর কাছে দাবি করা টাকা দিলে ‘গেম ঘর’ থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মাফিয়া শরীফের স্ত্রী সুমি একসময় বাংলাদেশ থেকে তার স্বামীর অবৈধ মানব পাচার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। গত নভেম্বরে সুমি তার স্বামীর কাছে লিবিয়া চলে যাওয়ার পর থেকে রিক্তা দায়িত্ব পালন করছেন। সম্পর্কে রিক্তা সুমির ভাবি।

সিটিটিসির উপ-পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, আমাদের দেশে কিছু স্থানীয় দালাল তৈরি হয়েছে, তারা প্রথমে আমাদের দেশের দরিদ্র ছেলেমেয়েদের বিদেশে উন্নত জীবন নিয়ে টোপ দেয়, অল্প টাকায় তাদের ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। তাদের সাথে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকার চুক্তি করে। যাদের সঙ্গে চুক্তি করে তাদের প্রথমে বাংলাদেশ থেকে দুবাই নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তাদের লিবিয়ায় পৌঁছে দেওয়া হয়।

সিটিটিসি লিবিয়া ও বাংলাদেশে মানব পাচারের এই পুরো সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। সবুজ মীরা, আব্দুল্লাহ, সবুজ মুন্সী এবং কুদ্দুস লিবিয়ায় শরীফের সহযোগীদের মধ্যে রয়েছেন। দেশীয় দালাল হিসেবে কাজ করেন রানী, সুমি, রিক্তা ও কুদ্দুস। ইউরোপ যেতে আগ্রহীদের খুঁজে বের করে ভাষান, বেলায়েত, ফারুক মুন্সী, পনির ও আলমগীরকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে সিটিটিসি কর্মকর্তা জানান।

মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা লিবিয়ায় একটি বড় মাফিয়ার সন্ধান পেয়েছি, তার নাম শরীফ। রানী, সুমি, রিক্তা এবং কুদ্দুসের সহায়তায় তারা প্রথমে এই লোকদের লিবিয়ায় পৌঁছাতে সহায়তা করে। আমরা জানতে পারলাম লিবিয়ায় শরীফের একটি গেমিং ঘর আছে, সে এটা চালায়। সেই গেম ঘরে তাদের আটকে রাখে এবং তাদের ওপর নির্যা”/তন চালায়।

এছাড়া এই মানব পাচার চক্রের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের মানুষের বিভিন্ন ব্যাংকে একশরও বেশি একাউন্টে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এসব মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যদের একশরও বেশি ব্যাংক একাউন্ট এর খোঁজ পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা সিটিটিসি। সেইসাথে তাদেরকে খুঁজে বের করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে পুলিশ, এমনটি জানা গেছে।

About bisso Jit

Check Also

চুলের মুঠি ধরে নারী চিকিৎসককে রোগীর মারধর (ভিডিও সহ)

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসককে হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *