সম্প্রতি কিছুদিন আগেই সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন, তার মোবাইল নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদা দাবি করছে একটি প্রতারক চক্র। আর এ জন্য তিনি থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেন।
আর এ অভিযোগের আলোকে ঐ প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট। আজ মঙ্গলবার ভোরে ফরিদপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ফিরোজ খন্দকার ও রাকিবুল।
তাদের তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ডে প্রতারক চক্রের আরো তথ্য জানা যাবে বলে মনে করছে পুলিশ। সকালে সিএমএম কোর্টের বিচারক আশেক ইমামের আদালতে তোলা হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়। পরে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার বাদী ব্যারিস্টার রানা তাজউদ্দিন খান বলেন, সম্প্রতি যুবলীগ চেয়ারম্যানের মোবাইল নম্বর ক্লোন করে প্রশাসনের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্নজনের কাছে টাকা দাবির মতো ঘটনা ঘটছে। এ নিয়ে বনানী থানায় মামলা করা হলে সাইবার ক্রাইম টিম প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। আজ মঙ্গলবার সকালে এ অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া সাইবার ক্রাইমের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার ধ্রুব জ্যোর্তিময় গোপ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের আগে ফিরোজ খন্দকার লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি ঢাকার খিলখাঁও থেকে কেরানীগঞ্জের মধ্যে বিভিন্ন বুথ থেকে এ প্রতারণার টাকা তোলেন। সন্দেহ এড়াতে এ প্রতারণা টাকা উত্তোলনের সময় মোটরসাইকেলে চড়ে বিভিন্ন বুথ থেকে অল্প অল্প করে টাকা তোলেন। তবে শেষ রেহাই পাননি ফিরোজ খন্দকার। অভিযোগ পেয়ে পুলিশের সিটি সাইবার ইন্টারনেট রেফারেল টিম খিলখাঁও থেকে কেরানীগঞ্জের যেসব বুথ থেকে ফিরোজ খন্দকার টাকা তোলেন তার সবগুলোর ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে।
যুবলীগ চেয়ারম্যানের হয়ে ১৫ অক্টোবর রাজধানীর বনানী থানায় ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা করেন ব্যারিস্টার রানা তাজউদ্দিন খান। মামলাটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৪ ও ২৬ ধারায় করা হয়েছে। এতে ‘মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোনিং করে টাকা দাবির অপরাধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার পরপরই সাইবার সিটি টিম তদন্তে নামে। তদন্তের একপর্যায়ে ফিরোজ খন্দকারকে শনাক্ত করে সাইবার সিটি টিম।
সূত্র জানায়, পরশের নাম করে তার ব্যবহৃত রবি নম্বরটি ক্লোন করে গত ৯ অক্টোবর প্রথম ফোন করা হয় গাইবান্ধা যুবলীগের সভাপতি সরদার মো. শাহীন হাসান লোটনের গ্রামীণফোনের নম্বরে। সংগঠনের জন্য চাঁদা হিসেবে তাকে একটি রকেট নম্বরে টাকা পাঠাতে বলা হয়। একই দিন নেত্রকোনা যুবলীগের আহ্বায়ক জনি ও সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের চপলকে ফোন করে বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠাতে বলা হয়।
এর আগে গত ১০ অক্টোবর যুবলীগের আহ্বায়ক সনি বিশ্বাসকে ফোন করে টাকা দাবি করে মুশফিকুল ইউনুস জায়গীরদার নামে এক ব্যক্তি। এছাড়াও সম্প্রতি গত কয়েকদিনে বেশকিছু গণ্যমাণ্য ব্যক্তির কাছে টাকা দাবি করেছে এই প্রতারক চক্রটি। আর এ সকল অভিযোগের আলোকে অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি এ ঘটনায় অন্য আর কেউ জড়িত আছে কি না, সে ব্যাপারেও তদন্ত চলছে।