ছোটবেলা থেকেই একই সঙ্গে বড় হয়েছেন দুই বন্ধু তারেক ও রাকিব। অন্যদিকে একই স্কুলে পড়ালেখাও করেছেন তারা। তবে পড়ালেখায় এগোতে পারেননি দুজনের কেউই। তাই পরিবারের হাল ধরতে নাটোর শহরের পৃথক ২ দোগানে কাজ করতেন তারা। তবে কাজ শেষ করে প্রায় একসঙ্গে মোটরসাইকেলে করে ঘুরতেন তারেক ও রাকিব। আর এরই জের ধরে গতকাল সোমবার (১৮ অক্টোবর) কাজ শেষ করে একই সঙ্গে ঘুরতে বেড়িয়েছিলেন তারা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবসত কেউ জানতো না, এটাই ছিল এক সঙ্গে দুই বন্ধুর শেষ যাত্রা
জানা গেছে, কাজ শেষে রাতে মোটরসাইকেলে ঘোরাফেরা করার সময় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় দুজনের একসঙ্গে মৃত্যু হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে জানাজা শেষে দুই বন্ধুকে একই কবরস্থানে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে।
দুজনের বাড়ি নাটোর শহরের কান্দিভিটুয়া বটতলা মোড়ে। তারেক শহরের কানাইখালি এলাকার একটি মোটরসাইকেল মেরামতের দোকানের কর্মচারী ছিলেন। আর রাকিব শহরের সততা বস্ত্রালয়ের কর্মচারী ছিলেন।
নাটোর ফায়ার সার্ভিসের কর্মী সুমন হোসেন বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার কিছু পরে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তাঁরা শহরের তেবাড়িয়া রাজপুর মোড়ে যান। নাটোর বাইপাস সড়কের ওই মোড়ে পিকআপের ধাক্কায় একটি মোটরসাইকেল দুমড়েমুচড়ে পড়ে ছিল। পাশে পড়ে ছিল তারেকের লাশ। রাকিবকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ১২টায় তিনি মারা যান।
তারেক-রাকিবের ঘনিষ্ঠজন মোটরসাইকেল মেরামতকারী আবদুল গণি বলেন, তাঁরা ছিলেন মানিকজোড়। কাজ শেষে সব সময় তাঁদের একসঙ্গে দেখা যেত। একজন মোটরসাইকেল চালাতেন, অন্যজন পেছনে বসে থাকতেন। একসঙ্গে ঘুরতেন বলে দুজনকে শহরের অনেকেই চিনতেন।
কিন্তু অকালেই তাদের হারাতে হবে, তা হয়তো কখনো কল্পনাও করেনি কেউ। এদিকে তাদের মৃত্যুতে পরিবারের মাঝে এসেছে শোকের ছায়া। তাদের অকাল মৃত্যু কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছেন কেউ।
এদিকে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনসুর রহমানের সংবাদ মাধ্যমকে জানি্যেছেন, এরই মধ্যে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় পিকআপটি জব্দ করা গলেও ঘাতক চালককে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে অভিযুক্তকে ধরতে সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।