রাইয়ান একটা সময়ে এই বাচ্চা ছেলের নামটি নিয়ে হয়েছে সারা বিশ্বে ব্যাপক আলোচনা। বিশেষ করে তার চিকিত্সার জন্য ২২ কোটি টাকার ইনজেকশন দেয়া হয়। দীর্ঘ দিন পরে আবারো আলোচনায় সেই ছেলেটি ।প্রশ্ন উঠছে ২২ কোটি টাকার ইনজেকশন নেওয়া সেই রায়ান এখন কেমন? রায়ান, যিনি মেরুদণ্ডের পেশীর অ্যাট্রোফি (এসএমএ), একটি বিরল নিউরোডিজেনারেটিভ রোগে আক্রান্ত ছিলেন, তিনি এখন সুস্থ আছেন। তার শরীর নড়াচড়া করতে পারে।
রায়ানকে ২৫ অক্টোবর থেরাপির এই ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল। প্রায় এক মাস পর, ২১ নভেম্বর তাকে ফলোআপের জন্য আবার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে আনা হয়।
ডাঃ রায়ান সরাসরি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস এবং হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। জোবাইদা পারভীন। তিনি বলেন, রায়ানের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তিনি তার অস্ত্র আগে নাড়াতে পারে কিন্তু তাদের মাথার উপরে তুলতে পারে না। এখন সে তার হাত মাথার উপরে তুলতে পারে। আগে শুয়ে বাঁকানো যেত না, এখন পারে।
তিনি বলেন, রায়ানের বাড়ি মানিকগঞ্জ। বাড়ি অনেক দূরে হওয়ায় প্রতি সপ্তাহে রায়ানের মায়ের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হয়। তার মাকে ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি শেখানো হয়েছে। তার মা বাসায় এসব থেরাপি দিচ্ছেন।
কিন্তু সম্পূর্ণ সুস্থ হতে রায়ানের অনেক সময় প্রয়োজন। চিকিৎসক আশা করছেন, নিয়মিত ফিজিওথেরাপি দেওয়া হলে রায়ান ধীরে ধীরে হাঁটতে শিখবে। দেশে প্রথমবারের মতো স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি (এসএমএ) চিকিৎসায় জিন থেরাপি ব্যবহার করা হয়েছে। রায়ান এই চিকিৎসা গ্রহণকারী প্রথম রোগী।
রায়ানকে দেওয়া ওষুধের দাম প্রতি ডোজ প্রায় ২২ কোটি টাকা। যা বিনামূল্যে দিয়েছে বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি নোভারটিস। এই জিন থেরাপি ইউএসএফডিএ (ইউনাইটেড স্টেটস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) অনুমোদিত।
প্রসঙ্গত, রোগটি খুবই বিরল একটি রোগ। মেরুদন্ডের পেশীর অ্যাট্রোফি স্নায়ুতন্ত্রের একটি বিরল এবং জটিল জন্মগত ব্যাধি, যা জেনেটিক কারণগুলির কারণে হয়। এই রোগে আক্রান্ত হলে সাধারণত শিশুর ঘাড় শক্ত হয় না। তারা বসতে পারে না। কিন্তু কথা বলতে পারে, যোগাযোগ করতে পারে কারণ বুদ্ধিমত্তা স্বাভাবিক। কিন্তু শরীরের নড়াচড়া কম, ঘন ঘন শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। শ্বাসকষ্টের কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য ব্যবহৃত পেশী দুর্বল হয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত শিশুটি মারা যায়।