টলিউডের উঠতি জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিনিতা রুপালি পর্দার গ্ল্যামার জগতে দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু তার এই বর্তমান পর্যায়ে আসার জন্য অনেক এবং দীর্ঘ দিন ধরে কষ্ট করতে হয়েছে। এভাবেই সকল নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়ে যারা রয়েছে তাদের জীবনযুদ্ধে অংশ নিতে হয় একটু খানি সাফল্যের আশায়।
বিনীতা তার জীবনের সেই কঠিন দিনগুলোর কথা ভুলে যাননি, যেটা সারা জীবনে তিনি ভুলতে পারবেন না। তিনি কখনও সেটা অস্বীকার তো করেনই নাই, বরং গর্ব করে বলেছিলেন যে, তার বাবা রাস্তায় একটি টং দোকান চালিয়ে তাকে বড় করেছেন। যাদবপুরের বিনিতার বাবা সুখেন গুহ বিশ্বের এই চলমান পরিস্থিতির দিনে বেশ কয়েক মাস ধরে উপার্জনহীন ছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল রাস্তার পাশে একটি নতুন ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকান স্থাপন করা।
আর কেউ হলে বিষয়টি লু’কিয়ে রাখতেন। কিন্তু বিনীতা করলেন উল্টোটা। বাবার স্বপ্নকে প্রাধান্য দিলেন। টালিউডের সুপরিচিত অভিনেত্রী হয়েও বাবাকে খুলে দিলেন একটি চায়ের টং দোকান। স্বপ্নপূরণ করলেন ৬৫ বছরের বৃদ্ধের।
এ ক্ষেত্রে সামাজিক কুণ্ঠা বা গ্লানিবোধের ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি অভিনেত্রী বিনীতার চোখেমুখে। গর্ব করেই কলকাতার গণমাধ্যমকে তিনি জানালেন, টালিউডের সহকর্মী ও বন্ধুদের কাছে নিজেকে চা বিক্রেতা বাবার মেয়ে হিসাবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
বিনীতা বলেন, ‘আমি সময় পেলেই বাবার দোকানে কচুরি ভাজি। বিক্রিও করি মাঝেমধ্যে। বাড়িতে সময় পেলে রান্না করতাম, তেমনই দোকানে করি। মানুষ বেঁচে থাকার জন্য যা যা করে, আমি আর বাবাও তাই করছি। এতে সংকোচের কি আছে? আমরা ভাড়া বাড়িতে থাকি। মা-বাবার মাথা গোঁজার জন্য একদিন বাড়ি করতে হবে আমাকে, সেটিই এখন লক্ষ্য।’
বিনিতা বিজ্ঞাপন এবং বিভিন্ন ধরনের ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের মাধ্যমে ইতিমধ্যে অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে একটি দূর্গাপূজার মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করে ব্যাপকভাবে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ভিডিওটি এই কয়েক দিনে প্রায় সাত মিলিয়ন বার দেখা হয়েছে এবং গানটির দর্শক দিনে দিনে বেড়ে চলেছে।
খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।