বর্তমান সময়ে দেশে অনলাইনের মাধ্যমের ব্যবহার ব্যপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই লক্ষ্যে দেশে গড়ে উঠেছে অনলাইন ভিত্তিক বেশ কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। তবে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উঠেছে নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ। এমনকি ইতিমধ্যে বেশ কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নানা কৌশলে গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল পরিমানের অর্থ। এমনকি বর্তমান সময়ে পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে রয়েছে বিপুল পরিমানের অর্থ। এই সকল অর্থ ফেরতের উদ্দেশ্যে আইনি নোটিশ দিয়েছে বেসরকারি সংস্থা ‘কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি’ (সিসিএস)।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে পণ্য কিনতে গিয়ে পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকা গ্রাহকদের ফেরত দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সাত প্রতিষ্ঠানের ১০ কর্তাব্যক্তিকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা ‘কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি’ (সিসিএস)। শনিবার (১৭ অক্টোবর) সিসিএস-এর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সাবরিনা জারিন ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান। নোটিশে ই-কমার্সে অর্ডার করেছেন কিন্তু পণ্য পাননি এমন গ্রাহকদের অর্থ কেন ফেরত দেওয়া হবে না তা আগামী সাত দিনের মধ্যে জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ই-কমার্সে পেমেন্টের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত নিয়ম (এস্ক্রো সিস্টেম) সংশোধন করে গ্রাহকের টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেরত পাওয়ার স্থায়ী পদ্ধতি কেন চালু করা হবে না তা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।
এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও ব্যাংকটির পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের মহাব্যবস্থাপক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও একই মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বিকাশ ও নগদ, পেমেন্ট গেটওয়ে এসএসএল ওয়্যারলেস, ফোস্টার পে এবং সূর্য পে-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে সিসিএস-এর আইনজীবী ব্যারিস্টার সাবরিনা জারিন বলেন, আমরা সিসিএস থেকে প্রায় সাড়ে ৩শ’ ভুক্তভোগীর সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছি। এস্ক্রোতে টাকা আটকে থাকা নিয়ে বেশ জটিলতা হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। লিগ্যাল নোটিশের পর আদালতে যাওয়া হবে। সিসিএস-এর নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, এস্ক্রো সিস্টেমে গ্রাহকের টাকা আটকে আছে। এখন গেটওয়েগুলো বলছে, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বা সরকারের অনুমতি লাগবে। কিন্তু আমার টাকা আমি ফেরত পেতে কেন ই-কমার্সের অনুমতির জন্য আটকে থাকতে হবে? হাজার হাজার ভোক্তার কোটি কোটি টাকা আটকে থাকছে। এটা নিয়ে একটু সুষ্ঠু সমাধান হওয়া দরকার। এজন্য আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ দিন ধরে দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠন গুলোর বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ ওঠায় এই সকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কোন গ্রাহক পণ্যের অর্ডার দিলে তার টাকা পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকে। পণ্য ডেলিভারি হওয়ার পর প্রমাণ জমা দিয়ে সেই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান টাকা ছাড় পান। গত ৩০ জুন থেকে এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ পদ্ধতি চালু হওয়ার পর থেকে ইতোমধ্যে গ্রাহকের কয়েক শ’ কোটি টাকা গেটওয়েতে আটকে আছে।