সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কিছু দিন পর, আর এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে যাচ্ছেন যারা তাদের মনোনয়নপত্র তোলার পূর্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের ফরম কিনতে হচ্ছে। গোলাম মোস্তফা নামের যিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন তিনি এই সুযোগটি লুফে নিচ্ছেন। প্রার্থীদের প্রতিটি ফরম বাবদ গুনতে হচ্ছে ১০ হাজার টাকা যেটা কেনার জন্য বা’ধ্য করেছেন তিনি।
গতকাল (শনিবার) অর্থাৎ ১৬ অক্টোবর কিছুটা অনুসন্ধান করে জানা গেল যে, উল্লাপাড়ার ১৩ টি ইউনিয়নে তৃতীয় দফায় ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। ১৪ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ফরম বিক্রি শুরু হয়। বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান প্রার্থী ইতোমধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে ফরমও কিনে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থী দেশের একটি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, এ ধরনের সিস্টেম কোথাও নেই। কিন্তু উল্লাপাড়ায় এভাবেই ফর্ম বিক্রি করা হচ্ছে। ১০ হাজার টাকার নিচে কাউকে ফর্ম দেওয়া হচ্ছে না। ফর্ম না নিলে প্রার্থী তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হবে না বলেও হু’/ম’কি দিচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা। ফলে বা’ধ্য হয়ে ফর্ম কিনছেন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
এ বিষয়ে উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান তৌহিদুল আলম ফিরোজ, বড় পাঙ্গাসী ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুবক্কর সিদ্দিক ও হাটিকুমরুল ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী আরিফ তালুকদার ১০ হাজার টাকায় ফর্ম কেনার কথা নিশ্চিত করেছেন।
হাটিকুমরুল ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী আরিফ তালুকদার বলেন, ১০ হাজার টাকায় দলীয় ফর্ম কিনেছি। কেন্দ্রে প্রার্থীদের তালিকা পাঠানোর জন্য এই ফর্ম বিক্রি করছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
দুর্গানগর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আফসার আলী বলেন, উপজেলা থেকে কেন্দ্রে তালিকা পাঠানোর জন্য প্রার্থীদের কাছে ফর্ম বিক্রি করা হচ্ছে। খরচের জন্য কিছু টাকা নিচ্ছে। তবে এটার কোনো নিয়ম নেই। তবুও যারা প্রার্থী তাদের কিনতেই হচ্ছে।
ফর্ম বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করে উল্লাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন, দলের ফান্ড গঠন করতে হবে। জেলা ও উপজেলার দু’স্থ কর্মীদের সাহায্য করতে প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও এ টাকা থেকে ঢাকায় যাতায়াতসহ অন্যান্য খরচ করা হবে। তবে দলীয় ফরম ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করার কোন নিয়ম আছে কি না, এমন প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান।
ফয়সাল কাদির রুমি যিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে রয়েছেন তিনি দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ফরম বিক্রির মাধ্যমে যে টাকা নেওয়া হচ্ছে সে বিষয়ে তিনি কোনো কিছু জানেন না।
এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে আবদুস সামাদ তালুকদার যিনি সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন তিনি ঐ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, প্রার্থীদের নিকট থেকে কিছু পরিমান টাকা নেওয়া যেতে পারে তবে সেটা দলীয় ফরম প্রস্তুত ও ঢাকায় দলীয় কার্যক্রমের জন্য যাতায়াতের খরচ হিসেবে যেটাকে বলা হয় টোকেন বাবদ কিছু খরচ। কিন্তু ১০ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে ফর্ম বিক্রি বাবদ সেটা ঐ তুলনায় অনেক অনেক বেশি। যদি ঐ টাকা নেওয়া হয়, তবে সেটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।