Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / দুই কারনে পুলিশের কর্মকর্তাদের জোর করে অবসরে পাঠাচ্ছে সরকার, এবার করা হয়েছে লম্বা তালিকা

দুই কারনে পুলিশের কর্মকর্তাদের জোর করে অবসরে পাঠাচ্ছে সরকার, এবার করা হয়েছে লম্বা তালিকা

বাংলাদেশে সব থেকে বেশি সক্রিয় যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো পুলিশ বাহিনী। আর এই পুলিশ বাহিনীতেই এখন বয়ে যাচ্ছে আতংকের ঝড়। দীর্ঘদিন পদোন্নতিবঞ্চিত থাকার পাশাপাশি বাধ্যতামূলক অবসরের আতঙ্কও যোগ হয়েছে এখন পুলিশ ডিপার্টমেন্টে। গত ১৫ দিনে পাঁচজন পুলিশ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর নেওয়ায় এ শঙ্কা আরও তীব্র হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এরই মধ্যে এ তালিকা দীর্ঘ হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি না পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা সংকটকালে সরকারকে বিব্রত করতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে। তাই তাদের কর্মকাণ্ডে সরকার যাতে বিব্রত না হয় সেজন্য আগাম সমাধান বেছে নিয়েছে। এখন প্রত্যেক ব্যাচকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হবে।

সূত্র জানায়, পর্যায়ক্রমে বাধ্যতামূলক অবসরে ব্যাচ পাঠানো হবে। এক্ষেত্রে পুলিশের ১২, ১৫, ১৭ এবং ১৮ তম ব্যাচ থেকে বাধ্যতামূলক অবসর নেওয়া হতে পারে। দ্বাদশ ও ১৫তম ব্যাচের অনেক কর্মকর্তা অতিরিক্ত আইজিপি হয়েছেন। কিন্তু ওই ব্যাচের অনেকেই এখনও এসপি ও অতিরিক্ত ডিআইজি। যাদের দীর্ঘদিন পদোন্নতি হয়নি তাদের মধ্যে আরও কয়েকজনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হবে। তাদের অনেকেই ১৫-১৬ বছর ধরে এসপি পদে রয়েছেন। তাদের ব্যাচমেটরা ডিআইজি ও অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। এছাড়া ১৭ ও ১৮ ব্যাচে যারা পদোন্নতি পাননি তাদেরও বিভ্রান্তি কমাতে অবসরে পাঠানো হতে পারে।

গত ১৮ অক্টোবর পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার তিন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় সরকার। এই তিনজন হলেন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের পুলিশ সুপার (টিআর) মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ চৌধুরী, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন মিয়া ও মির্জা আবদুল্লাহেল বাকী।

তাদের পরে সরকার ৩১ অক্টোবর অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়। তাঁরা হলেন সিআইডির অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মো. আলমগীর ও টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মো. মাহবুব হাকিম।

অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ চৌধুরী ও দেলোয়ার হোসেন মিয়া বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ১২তম ব্যাচের সদস্য। আর মির্জা আবদুল্লাহেল বাকী ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ চৌধুরী পিপিএম ও মির্জা আবদুল্লাহ বাকী পিপিএম (সেবা) পদকপ্রাপ্ত।

অবসরের নেপথ্যের কারণ

অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের কোনো অভিযোগ না থাকলেও সরকার মূলত তাদের আস্থায় নিতে পারছে না। তাদের কেউ কেউ এই সরকারের আমলে বিপিএম ও পিপিএম পেলেও নির্বাচনের সময় তাদের নিয়ে ঝুঁকি নিতে চায় না সরকার। কারণ, নির্বাচনের সময় প্রশাসনে রদবদলের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে, তখন সরকারবিরোধী কেউ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেলে তা ঘাড়ের কাঁটা হতে পারে। তাই এসব কর্মকর্তাকে এখন অপসারণ করা হচ্ছে। তবে সরকার কাউকে বেতন-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করবে না।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, যারা পদে বসে আছেন, ফেসবুকে নানা বিদ্বেষমূলক কথা ছড়াচ্ছেন, নিয়মিত অফিস করছেন না, সেনাবাহিনীতে রেখে কোনো লাভ নেই। পদোন্নতি না পাওয়ার কারণে তাদের অনুপ্রেরণা লোপ পেয়েছে, তাই সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে অবসরে যাওয়া হচ্ছে।

এ ছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দক্ষতা ও দেশপ্রেমের অভাবে পুলিশ কর্মকর্তাদের অবসর দেওয়া হচ্ছে। তাই বলা যেতেই পারে যে মূলত এই দুইটি কারণেই জোর করে অবসরে পাঠানো হচ্ছে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের।

About Rasel Khalifa

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *