Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / এই ছিল আমার কপালে, বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে স্বামীকে বিদেশে পাঠিয়েছিলাম,একটি টাকাও রেখে যায় নাই: রোকসানা

এই ছিল আমার কপালে, বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে স্বামীকে বিদেশে পাঠিয়েছিলাম,একটি টাকাও রেখে যায় নাই: রোকসানা

জীবিকার তাগিদে প্রায় প্রতি বছরই স্বজনদের মায়া ত্যাগ করে বিদেশে পাড়ি জমান অনেকেই। তবে এ ক্ষেত্রে অনেকেই আবার বেছে নেন অবৈধ পন্থা। আর এর ফলে রীতিমতো নানা সমস্যার মুখেও পড়তে হয়েছে অনেককে। সেই ধারাবাহিকতায় দালালের মাধ্যমের ইতালিতে পাড়ি জমাতে দিয়ে এবার প্রাণ হারালেন ইমরান শিকদার ছলেমান (৩৫) এক যুবক।

ইমরান শিকদার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। বাড়িতে বাড়ি বানানোর স্বপ্ন পূরণ করতে লিবিয়া থেকে ইউরোপে অবৈধ যাত্রা শুরু করেন। কিন্তু তার জীবন থেমে যায় ভূমধ্যসাগরে।

শনিবার সকালে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার হরিদাসাদী-মহেন্দ্রদী ইউনিয়নের মহেন্দ্রদী গ্রামের নিজ বাড়িতে তার মরদেহ পাওয়া গেলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরে জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। ছলেমান একই এলাকার কৃষক মোশাররফ শিকদারের ছেলে।

জানা যায়, ছলেমান ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে দুবাই যান। সেখানে সাত মাস থাকার পর ২০২২ সালের আগস্টে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে লিবিয়ায় ফিরে আসেন। ছলেমান লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য ছয় লাখ টাকার চুক্তিতে রাজি হন। সে অনুযায়ী ১০ সেপ্টেম্বর ইতালির উদ্দেশ্যে নৌকায় করে লিবিয়া ত্যাগ করেন। কিন্তু তিনি নৌকায় মারা যান। নৌকায় থাকা তার সহযাত্রীরা তাকে উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে রাখে এবং ১২ সেপ্টেম্বর তাকে বাড়িতে জানায়। পরে শনিবার (১৫ অক্টোবর) প্রবাসী কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে ছালেমানের মরদেহ তার বাড়িতে পৌঁছায়।

ছলেমানের বাবা মোশাররফ শিকদার বলেন, আমার একমাত্র ছেলেকে বিক্রি করে বিদেশে পাঠিয়েছি। আজ সে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। কি নিয়ে বাঁচবো, কিভাবে জীবন কাটাবো? আমি আর বাঁচতে চাই না।

ছালেমানের স্ত্রী রোকসানা বেগম বলেন, মতিন দালাল আমার স্বামীকে ”হ””ত্যা”’ করেছে। বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে ১৮ লাখ টাকা খরচ করে স্বামীকে বিদেশে পাঠিয়েছি। এই আমার কপালে ছিল। তার সাথে থাকা বোটের অন্য যাত্রীরা জানিয়েছে, ইতালির কাছাকাছি পৌঁছে (ঢেপা) সমুদ্রের ঢেউ দেখে চিৎকার করেই সে মারা যায়। আমার তিন বছরের একটা ছেলে রয়েছে। একটি টাকাও রেখে যায় নাই।

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতের স্বজনরা। তার এই অকাল মৃত্যু যেন কেন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না কেউ।

About Rasel Khalifa

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *