প্রবীণ অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ড. এনামুল হক ইন্তেকাল করেছেন। প্রয়ানকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। গতকাল (সোমবার) বিকাল ৪ টায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। তার মতো একজন শিক্ষাবিদ এবং সাংস্কৃতিক অংগনের বিশিষ্ট ব্যক্তির প্রয়ান অনেকে শোকাত হয়েছেন। ড. এনামুল হকের দীর্ঘকালের বন্ধু চলচ্চিত্র ও নাট্য অভিনেতা আবুল হায়াৎ। বন্ধুর এই ভাবে প্রয়ান তিনি কোনো রকম মেনে নিতে পারেন নি।
প্রিয় বন্ধুর মৃত্যু খবরে ভেঙে পড়েছেন কিংবদন্তি অভিনেতা আবুল হায়াত। প্রিয় বন্ধুকে হারিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় তিনি একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘ইনামুলের সঙ্গে আমার ৫০ বছরের বন্ধুত্ব। তার চলে যাওয়ার খবর আমাকে কতটা ক’ষ্ঠ দিচ্ছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।’
প্রিয়ববন্ধুর প্রয়ান নিয়ে যখন কথা বলছিলেন মোবাইলের ওই পাশে কাঁদছিলেন আবুল হায়াত। সেই কান্না বিজরিত কণ্ঠে বললেন, ’ইনামুলকে নিয়ে আমি এখন কিছু বলার মতো অবস্থায় নেই। শুধু বলবো আমি দীর্ঘদিনের বন্ধুকে হারালাম। সংস্কৃতি অঙ্গন হারালো উজ্জল এক নক্ষত্রকে।’
সোমবার বিকালে রাজধানীর বেইলি রোডের নিজ বাসায় মা’/রা গেছেন ড. ইনামুল হক। বর্ষিয়ান এই নাট্যজনের চির বিদায়ে শো’কের ছায়া নেমে এসেছে সংস্কৃতি অঙ্গনে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক শিক্ষক ইনামুল হকের জন্ম ১৯৪৩ সালের ২৯ মে ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নে। তার বাবা ওবায়দুল হক ও মা রাজিয়া খাতুন।
ড. ইনামুল হকের পুরো পরিবারই বাংলা নাটকের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন। তার দাম্পত্য সঙ্গী নাট্যজন লাকী ইনাম। তাদের সংসারে দুই মেয়ে হৃদি হক আর প্রৈতি হক। দুই জামাতা অভিনেতা লিটু আনাম ও সাজু খাদেম।
পরিবার থেকে জানানো হয়েছে, ইনামুল হৃদরোগে ভুগছিলেন। রাষ্ট্রপতি এম আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল ড. এনামুল হকের প্রয়ানে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন।
শোক বার্তায় রাষ্ট্রপ্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর প্রয়ান দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষ’তি। ইনামুলকে হাসপাতালে নিয়ে যান লিটু এবং অভিনেতা শহীদ আলমগীর, যারা একই ভবনে থাকেন। তিনি বাড়িতে দুপুরের খাবারের পরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। লাকি বলেন, খাবারের পর বিশ্রাম নেওয়ার সময় ইনামুল প্রতিক্রিয়াশীল না হওয়ার পর লাকি অন্যদের সত’র্ক করে দেয়। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে চিকিৎসকরা তাকে প্রয়াত ঘোষণা করেন।