Thursday , September 19 2024
Breaking News
Home / Countrywide / এবার ইডেন ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদক কেন বহিষ্কার হলেন না, জানা গেল কারন

এবার ইডেন ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদক কেন বহিষ্কার হলেন না, জানা গেল কারন

সম্প্রতি ইডেন কলেজে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে আভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। ইডেন ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সাথে অশালীন ব্যবহারসহ নানা অভিযোগে আন্দোলন করে ছাত্রলীগের একাংশের নেতারা। তবে তাদের মধ্যে যে সমস্যা তৈরী হয়েছে সেটি বেশ কিছু দিন ধরে চলচ্ছে। কিন্তু কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি যাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উঠেছে। ইডেন ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদক কেন বহিষ্কার হলেন না এমন প্রশ্ন তুলে যা বললেন বহিষ্কৃত নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি সুস্মিতা বাড়ৈ বলেন, ‘আমাদের অপরাধ আমরা আমাদের নির্যাতিত সহযোদ্ধার পাশে দাঁড়িয়েছি। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে এত বিস্তর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তাদের কেন বহিষ্কার করা হলো না?’

সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত সুস্মিতা বারোয়াই প্রশ্ন তুলেছেন, ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানাকে বিভিন্ন অভিযোগের পরও কেন বহিষ্কার করা হয়নি।

সোমবার ইডেন কলেজ ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রশ্ন তোলেন শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা।

উভয়পক্ষের হা/মলা-পাল্টা ধাওয়ায় রোববার রাতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে ১৬ জনকে।

পরদিন সংবাদ সম্মেলনে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি সুস্মিতা বাড়ই বলেন, গতকাল গতকাল (রোববার) রাতের আঁধারে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, এটির প্রতিবাদেই আজকে আমাদের এই সংবাদ সম্মেলন। আমাদের সংবাদ সম্মেলনের শিরোনাম, ‘বিনা তদন্তে বহিষ্কার, নেপথ্যে কারা’?”

তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, বহিষ্কারের পর আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আআজকে আমাদের কোন অন্যায়ের কারণে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে?

‘আমাদের অপরাধ আমরা আমাদের নির্যাতিত সহযোদ্ধার পাশে দাঁড়িয়েছি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থাকার পরও কেন তাদের বহিষ্কার করা হয়নি?

ছাত্রলীগের করা দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি থেকে একজন সদস্য পদত্যাগ করার পরও কিসের ভিত্তিতে এ বহিষ্কার করা হলো, সে প্রশ্ন করেন সুস্মিতা।

কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী বলেন, তদন্ত কমিটিতে থাকা বেনজির হোসেন নিশি তারই সহযোদ্ধা রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সাবেক এজিএস ফাল্গুনী দাস তন্বীকে মারধরের ঘটনায় হওয়া মামলার আসামি। সেই মামলা এখনও চলমান। অথচ তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়নি। আর তাকেই পাঠানো হয়েছে আমাদের ঘটনার তদন্ত করতে!’

তিনি আরও বলেন, আপনার মন্তব্য অনুযায়ী ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে মা/রামারি হয়েছে, কিন্তু কোন কারণে শুধু একটি গ্রুপকে গণহারে বহিষ্কার করা হয়েছে, সে ব্যাপারে সুষ্ঠু জবাব দিতে হবে।

বহিষ্কারের ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয়নি অভিযোগ করে বৈশাখী বলেন, বিভিন্ন ইউনিটে কোনো সমস্যা হলে সে সমস্যা সমাধানে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।

তাহলে কি তারা এই অন্যায় সাথে সহমত পোষণ করছে? আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে এর জবাব চাই।

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবিলম্বে এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা আমাদের একমাত্র অভিভাবক দেশরত্ন শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

যদি এই ভিত্তিহীন বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার না করা হয়, তাহলে এর সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা অনশনে যাব।

বৈশাখী বলেন, ‘আমাদের সংবাদ সম্মেলনে ২৫ জন ছিলাম। তাহলে কেন আমাদের মাত্র ১২ জনকে বহিষ্কার করা হলো? বাকিগুলো কেন হয়নি? এ থেকে বোঝা যায় আমরা প্রতিহিংসার শিকার।’

কলেজ ছাত্রলীগের আরেক বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি সোনালী আক্তার বলেন, গতকাল যে ১৬ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে পদধারী ১২ জন বাদে যে চারজন কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে, এই নামে ইডেন কলেজে কোনো কর্মীই নেই। এটা কীভাবে আসল আমাদের বুঝে আসে না।’

সংবাদ সম্মেলনের পর ইডেন ছাত্রলীগের বহিষ্কৃতরা ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনশনের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

এর আগে অনশনের ঘোষণা দিয়েছিলেন কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি সোনালী আক্তার।

তিনি বলেন, সোমবার দুপুর থেকে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে অনশন শুরু হবে।

কমিটি স্থগিত

রোববার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক উকার ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১৬ জনকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।

স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃতদের মধ্যে বর্তমান কমিটির ১০ জন সহ-সভাপতি, একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, একজন সাংগঠনিক সম্পাদক ও চারজন কর্মী রয়েছেন।

কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন তারা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৬ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর এর প্রাথমিক প্রমাণও পাওয়া গেছে।

স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া ছাত্রীরা হলেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি সোনালি আক্তার, সুস্মিতা বাড়ৈ, জেবুন্নাহার শিলা, কল্পনা বেগম, জান্নাতুল ফেরদৌস, আফরোজা রশ্মি, মারজানা ঊর্মি, সানজিদা পারভীন চৌধুরী, এস এম মিলি ও সাদিয়া জাহান সাথী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা খানম বিন্তি, সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখি এবং কর্মী রাফিয়া নীলা, নোশিন শার্মিলী, জান্নাতুল লিমা ও সূচনা আক্তার।

মারধরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ

শনিবার রাতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের এক সহসভাপতিকে মা/রধর করেন কলেজ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা। এর প্রতিবাদে রাতেই বিক্ষোভ করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

রোববার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে ওই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবি জানান ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের ৪৩ সদস্যের কমিটির ২৫ জন। সন্ধ্যায় পাল্টা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক গ্রুপ। অন্যরা এর প্রতিবাদ জানালে আবারও সং/ঘর্ষ হয় দুই পক্ষের।

প্রসঙ্গত, বহিষ্কার করার ব্যাপারে কোনা নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ করেন বহিষ্কৃত নেতারা। যাদের বিরুদ্ধে মূলত অভিযোগ করা হয়েছে তাদের কিছু না করে উল্ট যাদের কোনো দোষ নেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়া হয়েছে বলে তারা জানা।

About Babu

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *