বলিউডের কিং খান হিসেবে খ্যাত শাহরুখ খান তার ছেলেকে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মা’/ম’লায় গ্রে’/প্তার হওয়ার পর থেকে অনেকটা নিরব হয়ে আছেন। তিনি তার ছেলের জা’মিনের জন্য অনেক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জনপ্রিয় চীনা অভিনেতা জ্যাকি চ্যানের ক্ষেত্রে শাহরুখ খানের জীবনের ঘটনার ঠিক উল্টোটা ঘটেছিল। তিনি তার ছেলেকে মুক্ত করার কোনো ধরনের চেষ্টাই করেননি, বরং তিনি তার ছেলে যে অ’পরা/ধ করেছিল তার জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন। জ্যাকির একমাত্র ছেলে ছয় মাস কা’/রা’গা/’রে থাকার পর বাসায় ফিরে আসে।
জ্যাকির ছেলের নাম জেসি চ্যান। মার্শাল আর্টিস্ট-অভিনেতা জ্যাকি চ্যান এবং তাইওয়ানের অভিনেত্রী জোয়ান লিনের ছেলে জেসি। পিতা -মাতার পরিচয় থেকে এটা স্পষ্ট যে তিনি মুখে সোনার চামচ নিয়ে জন্মেছিলেন। জেসি ছোটবেলা থেকেই বিলাসবহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিল। যাই হোক, না চাওয়ার মাধ্যমে হাতের কাছে সবকিছু পেয়ে গেলে যা হয় আর কি, জেসির জীবনও সেই স্রোতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। আরিয়ানের মতো তিনিও নিষিদ্ধ দ্রব্যে আ’/স’/ক্ত ছিলেন।
মা-বাবা অবশ্য সে খবর জানতেন না। একমাত্র ছেলে যে নে’/’শায় ক্রমে বুঁদ হয়ে উঠছিলেন সেটা বুঝতে পারার আগে আচমকা ব’জ্রপাতের মতো ছেলের গ্রে’/ফ’তারের খবর পান তারা।
জেসিকে বেইজিংয়ে তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বেআইনি নিষিদ্ধ দ্রব্য-সহ গ্রেফ’তার করে পু’/লি’শ। ২০১৪ সালের ১৮ আগস্টের ঘটনা। অ্যাপার্টমেন্টে ত’ল্লা/শি চালিয়ে তিন আউন্স নিষিদ্ধ দ্রব্য বাজেয়াপ্ত করে পু’/লি’/শ। জেসির পাশাপাশি ওই অ্যাপার্টমেন্ট থেকে কাই কো নামে তাইওয়ানের আর এক অভিনেতাকেও গ্রে’ফ/তার করা হয়। ১৪ দিন পর কাই ছাড়া পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু জেসি ছাড়া পাননি। নিষিদ্ধ দ্রব্য মজুত রাখা এবং অন্যকে তা সরবরাহ করার অপরাধে ছ’মাস কা’/রাদ’/ণ্ড হয় তার। আদালতে জেসি স্বীকার করেছিলেন, তিনি গত আট বছর ধরে নিষিদ্ধ দ্রব্য সেবন করছিলেন।
এই ঘটনা সামনে আসার পর অত্যন্ত ভেঙে পড়েছিলেন জ্যাকি। ২০০৯ সাল থেকে চীনের অ্যান্টি-ড্রাগ গুডউইল অ্যাম্বাসাডর ছিলেন জ্যাকি। তার ছেলেই নিষিদ্ধ দ্রব্য-সহ ধরা পড়েছে এই বিষয়টিই সবচেয়ে আ’/ঘা’/ত দিয়েছিল তাকে। জেসি গ্রে/ফ’তারের পর তাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেননি জ্যাকি। বরং ছেলের কৃতকর্মের জন্য প্রকাশ্যে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন। নিজের ৩২তম জন্মদিন কা’রাগা/রেই কাটাতে হয়েছিল জেসিকে। সে সময় নাকি তিনি প্রচুর বই পড়ে সময় কাটাতেন। ছ’মাস কা’/রাদ’/ণ্ডের আগে আবার ১৪৮ দিন ‘পু’/লি’/শ হেফাজ’তে ছিলেন তিনি। ২০১৫ সালের ৯ জানুয়ারি তার মা/ম’লা এজলাসে ওঠে। বিচারক ছ’মাসের কা’/রাদ’ণ্ডের নির্দেশ দেন।
জানলে অবাক হবেন, জেসির শু’নানির সময় জ্যাকি কিংবা তার স্ত্রী জোয়ান কেউই আদালতে হাজির হননি। প্রভাব খাটিয়ে একমাত্র ছেলের জা’মিনের চেষ্টাও করেননি তারা। কা’ঠগ’ড়ায় দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন জেসি। আর কোনও দিন এই কাজ করবেন না বলে ক্ষমা চেয়েছিলেন। এমনকি জে’/লে থাকার সময় তিন পাতার একটি চিঠিতে মায়ের কাছেও এই স্বীকা’রোক্তি ছিল তার। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনিও কৃতকর্মের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। তার এই কাজের জন্য সমাজের যে ক্ষ’তি হয়েছে তার জন্যও দুঃখপ্রকাশ করেন তিনি। বাবা কেন প্রভাব খা’টিয়ে তাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেননি, সেটিও বুঝতে পেরেছিলেন বলে জানান জেসি।
ওই ঘটনার সময় জেসি নিজেও যথেষ্ট পরিচিত ছিলেন। তিনি একজন গায়ক এবং অভিনেতা ছিলেন। ফলে ওই গ্রে’ফতারি তার ক্যারিয়ারে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর মায়ের সঙ্গে তাইপেতে থাকতে শুরু করেন তিনি। অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করেন। রাস্তাঘাটে বের হলে যাতে কেউ তাকে চিনতে না পারেন তার জন্য সব সময় মাস্ক পরে থাকেন। ২০২০ সালে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, লস অ্যাঞ্জেলসে থাকতে শুরু করেছিলেন তিনি।
জেসি তার বাবার সাথে বছরের বেশিরভাগ দিনগুলোতে দেখা পান না। কা’রাগা/র হতে মুক্তি পাওয়ার পর তাইওয়ানে তাদের দুই জনের দেখা হয়েছিল। সাক্ষাতের পর পিতা ও পুত্র সারা রাত একসাথে গল্প করতে করতে কা’টালেন। ছেলেকে জীবনের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য জ্যাকির যে প্রচেষ্টা সেটা প্রশংসিতও হয়েছে। জ্যাকি শুরু থেকেই এই ব্যাপারে খুব স’তর্ক ছিলেন এবং সেই পরিকল্পনায় তিনি তার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এজন্য তিনি ২০১১ সালের দিকে বলে দিয়েছিলেন যে, তিনি তার সকল সম্পদের অর্ধেক দান করবেন। বাকি যেটুকু থাকবে সেটাই পাবে ছেলে। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে, সে যদি এটি সামর্থ্য রাখে, তাহলে তার ছেলে নিজে উপার্জন করার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে।