Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / উদ্ধার হওয়ার পর রহিমা খাতুনের সাথে কথার মিল নেই সেই কুদ্দস মোল্লার, উঠেছে নানা প্রশ্ন

উদ্ধার হওয়ার পর রহিমা খাতুনের সাথে কথার মিল নেই সেই কুদ্দস মোল্লার, উঠেছে নানা প্রশ্ন

বর্তমানে সংবাদমাধ্যমের আলোচনায় শীর্ষস্থানে রয়েছে রহিমার নিখোঁজ হওয়ায় তার মেয়ে মরিয়ামের আর্তনাদের ঘটনা। সাম্প্রতি পুলিশ তাকে কুদ্দুস আলী মোল্লা নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে জীবিত উদ্ধার করেছে। তবে গত দুইদিন আগেও ছেলেমেয়েদের কাছে মৃ/ ত প্রমাণিত হয় মা রহিমা খাতুন। সকল নাটকীয়তা শেষে এবার কুদ্দুসের মুখ থেকে জানা গেল ঘটনার আসল রহস্য। তবে কুদ্দুসের কথার সাথে একেবারেই মিল নেই উদ্ধার হওয়া সেই রহিমা খাতুনের।

খুলনার দৌলতপুর বার্ণিকপাড়া থেকে নিখোঁজ রহিমা খাতুন (৫২) কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে আশ্রয় নেন বলে জানান, জমি নিয়ে ছেলে-মেয়ের ওপর রাগ করে বাড়ি ছেড়েছেন। ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়ি থেকে এই নারীকে জীবিত উদ্ধার করেছে খুলনা থানা পুলিশ। যে বাড়ি থেকে রহিমা খাতুনকে উদ্ধার করা হয় সেই বাড়ির মালিক কুদ্দুস মোল্লা খুলনার একটি জুটমিলে চাকরির সুবাদে অনেক আগে থেকেই রহিমা খাতুনের বাড়িতে ভাড়ায় থাকতেন। সেদিক থেকে তারা একে অপরের সাথে পরিচিত ছিল।

স্থানীয় পুলিশ জানায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিবেশীকে ফাঁসানোর জন্য রহিমা খাতুন তার ছেলে-মেয়েদের সাথে পরামর্শ করে এই নিখোঁজ নাটকটি করেছে। ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার পর রহিমা খাতুন এলাকাবাসীকে জানান, জায়গা নিয়ে ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। এ কারণে তিনি দেশে ফিরতে চান না। আর কুদ্দুস মোল্লা মানবিক কারণে রহিমা খাতুনকে আশ্রয় দেন।

কুদ্দুস মোল্লার ভগ্নিপতি মোঃ জয়নাল শেখ জানান, মরিয়ম মান্নান তার মাকে খুঁজতে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি নোটিশ প্রকাশ করেন। সেখানে রহিমা বেগমের ছবি দেখে এবং সাথে সাথে রহিমা বেগমকে ছবিটি দেখালে রহিমা খাতুন নিজেই জানান যে এটি তার ছবি। এদিকে রহিমা খাতুন তার পরিবার নিয়ে নানা মন্তব্য করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, তার মেয়েসহ পরিবারের কেউ তাকে দেখতে পাচ্ছে না। এ কারণে তিনি বাড়ি ছেড়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে বোয়ালমারীর সৈয়দপুর বাসস্ট্যান্ডে নামেন রহিমা খাতুন। সেখান থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় পূর্ব পরিচিত কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে যান। কুদ্দুস মোল্লার প্রতিবেশী রহিমা বেগমের কাছে জানতে চাইলে প্রতিবেশীরা জানায়, কুদ্দুস মোল্লা খুলনায় কাজ করার সময় ভাড়ায় রহিমার বাড়িতে থাকতেন। সেদিক থেকে রহিমা খাতুন তাদের সঙ্গে পরিচিত। কুদ্দুস মোল্লার স্ত্রী প্রতিবেশীদের জানান, রহিমা খাতুন বেড়াতে এসেছেন।

কুদ্দুস মোল্লার মেয়ের জামাই নূর মোহাম্মদ ও জামাই জয়নাল শেখ ইউটিউবে দেখেন মরিয়ম মান্নান তার মায়ের লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করছেন। তবে মরিয়মের মা রহিমা খাতুন বেঁচে আছেন। এ সময় তারা তাৎক্ষণিকভাবে বোয়ালমারীর ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য মোশারফ হোসেনের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন। ওয়ার্ড সদস্য মোশাররফ হোসেন ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে খুলনার ২য় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ সাইফুলের সাথে যোগাযোগ করে রহিমা খাতুনের বিস্তারিত জানান।

বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর খুলনার কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল আবারও ফরিদপুর বোয়ালমারী ওয়ার্ড সদস্য মোশাররফকে ফোন করে রহিমা খাতুনকে সেখানে রাখতে বলেন। পরে বেলা সোয়া ১১টার দিকে দৌলতপুর থানা পুলিশ বোয়ালমারীর সৈয়দপুরে হাজির হয়। রাত ১১টার দিকে বোয়ালমারী থানা পুলিশ ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে রহিমা খাতুনকে উদ্ধার করে খুলনার দৌলতপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে কুদ্দুস মোল্লার স্ত্রী হীরা বেগম, ছোট ভাই বউ রেহেলা বেগম ও শ্যালক আলামিন মোল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দৌলতপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল ওহাব বলেন, “শনিবার রাতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি আবদুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়ি থেকে রহিমাকে উদ্ধার করে। কুদ্দুস মোল্লা ওই সময় বাড়িতেই ছিলেন। পুলিশ তার সঙ্গে রহিমার বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলে। তারপর। রহিমাকে খুলনায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।

বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে রহিমা খাতুন। জানা যায় তার মেয়ে মরিয়মকে ও পুলিশের আওতায় নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে তাদের। এ ঘটনার তদন্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনার আসল তথ্য সবার সামনে আসছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

About Nasimul Islam

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *