প্রথমে মা হারিয়ে গেছে বলে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন মেয়ে মরিয়ম। এরপর থেকে পুলিশের কার্যক্রম শুরু হয় অন্যদিকে সংবাদমাধ্যমগুলো সরব হয়ে ওঠে মরিয়ামের দিকে। এক পর্যায়ে মরিয়ামের মায়ের মত জামা কাপড় পরা একটি মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপরের ঘটনাবেঁকে যায় অন্যদিকে মেয়ের দাবি করে বসে এটাই তার মা রহিমা। তবে সম্প্রতি তার মাকে কুদ্দুস আলী নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। যে ঘটনায় তুমুল আকারের চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। একের পর এক বেরিয়ে আসছে নিত্যনতুন অজানা সব তথ্য। ঘটনার মোড় নিয়েছে মা-মেয়ের অদ্ভুত নাটকীয়তার দিকে।
খুলনা নগরের মহেশ্বরপাশায় নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ রহিমা বেগমকে (৫২) উদ্ধার করে দৌলতপুর থানায় আনা হয়েছে।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে উদ্ধারকারী দল থানায় পৌঁছায়। এর আগে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে রহিমা বেগমকে জীবিত উদ্ধার করেছে কেএমপির একটি বিশেষ দল। রহিমা বেগমকে উদ্ধারের পর একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।
বেশ কয়েক বছর আগে খুলনায় রহিমা বেগমের বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকতেন কুদ্দুস মোল্লা নামে এক ব্যক্তি। তার বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালখালী উপজেলার সৈয়দপুরে।
ওই বাড়িতেই লুকিয়ে ছিলেন রহিমা বেগম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দৌলতপুর থানার এক কর্মকর্তা দাবি করেন, রহিমা ও তার মেয়েরা অপহরণের নাটক মঞ্চস্থ করে। রহিমা আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পর, তার মেয়েরাও অজ্ঞাতপরিচয় নারীর লাশকে তাদের মায়ের বলে দাবি করার পরিকল্পনা করেছিল।
এদিকে নিখোঁজ গৃহবধূ রহিমা বেগমকে উদ্ধারের পর মরিয়ম আক্তার ফে/ সবুকে দেওয়া এক পোস্টে মেয়েকে মায়ের আড়ালে জড়িত উল্লেখ করে বলেন, মায়ের খোঁজে তারা আমাকে অপরাধী বানানোর চেষ্টা করছে।
আমি মাকে আড়াল করার সাথে জড়িত বলে জানা গেছে, আমার মা, আমি এটা খুঁজব. আমার কি চুপ থাকা উচিত ছিল? আমি মাকে খুঁজছি, তাকে খুঁজে পাওয়া সন্তান হিসেবে আমার কর্তব্য। এই ত্রিশ দিন মা কোথায় ছিলেন, কেমন ছিলেন সেটা আপনাদের মতো আমারও প্রশ্ন।
আমাকে আমার মায়ের সাথে কথা বলতে দাও। আমার মায়ের কাছে না পৌঁছানো পর্যন্ত আমাকে সাহায্য করুন মা লুকিয়ে থাকলেও তাকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব আমার! আমার মাকে খুঁজতে গিয়ে যদি নিজেকে দোষারোপ করতে হয়, তাহলে সেই দোষটা মাথায় নেওয়ার শক্তি ও সাহস আমার আছে, ইনশাআল্লাহ।
অন্যদিকে মরিয়ম মান্নানের ফেসবুক পোস্ট মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। আর বিভিন্ন তথ্য বেরিয়ে আসে মন্তব্যে। নেটিজেনদের কিছু মন্তব্য তুলে ধরা হলো।
নুসরাত জাহানের মন্তব্য: মেয়েটি ফে/সবুকে সক্রিয় বলে প্রথম থেকেই সন্দেহ করা হচ্ছিল। বিশাল পোস্ট দেয়া,,,এমন অবস্থায়ও কে ফেক আইডি খুলেছে, কে এসব নিয়ে কমেন্ট করেছে মায়ের ভিডিও সহ গান বাছাই, গল্প দেয়া সবকিছুই ছিল সন্দেহজনক। তারপর আবার, আমি এই জিনিসগুলি চিন্তা করার জন্য নিজেকে বোকা বানিয়েছিলাম, কিন্তু এখন আমি যা ভেবেছিলাম তা বেরিয়ে এসেছে। কি দারুণ নাটক আল্লাহ ইনাদের পথ দেখান।
তানিয়া রহমান আনার একটি পোস্টে মন্তব্য করেছেন: সে একটি তুচ্ছ মেয়ে, আমাদের ই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। সহজেই মানুষকে, বিশেষ করে আবেগগতভাবে দোলাতে পারে। কথা বলার ধরন আলাদা। খুব একটা ভালো মেয়ে না। তার ফেসবুকে এমন হাজারো ছবি আপলোড হয়েছিল, সবই এখন আড়াল। গত কয়েকদিন তাকে দেখে খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। মায়ের ব্যাপার থাকুক। আমি জানতাম তিনি একজন নাট্যকার, কিন্তু আমি জানতাম না যে তিনি এত বড় নাট্যকার এবং মিথ্যাবাদী।
উল্লেখ্য, মরিয়ামের মা হারিয়ে গেছে ঘটনা প্রকাশের পরে সারা দেশের মানুষ তাকে সহানুভূতি জানিয়ে ছিলেন। কারণ মরিয়ামের অভিনয় এতটাই নিখুঁত ছিল যে মানুষ বুঝতেই পারেনি। পুরো নাটকে তার মেয়ের চরিত্রে রয়েছে গুম হয়ে যাওয়া মা এবং সংবাদমাধ্যমের সামনে নাটক করা মেয়ে। রহিমাকে উদ্ধার করার পরে এর পরে বেরিয়ে আসতে থাকে মেয়ের করা যত সব কুকীর্তির ঘটনা। তার কলেজের নাম না প্রকাশ অনেকেই তার খারাপ খারাপ ছবি শেয়ার করতে থাকে এদিকে ওদিকে। যার একটি ছবি আপডেট বিডি তে প্রকাশিত হয়েছে।