ইডেন মহিলা কলেজে এর আগেও অনেকবার সংঘর্ষের কথা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসের সাথে ঘটে গিয়েছে একেবারেই ভিন্ন এক ঘটনা। যে ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সভাপতি তামান্না জেসমিন ওরফে রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা সিট বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির অভিযোগে গণমাধ্যমে কথা বলায় সংগঠনটির এক নেতাকে চড় মারেন। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে জান্নাতুল ফেরদৌস নামের ওই নেতাকে হয়রানি ও মারধরের অভিযোগে তামান্না ও রাজিয়াকে বহিষ্কারের দাবিতে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের অপর প্রান্তের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করেন।
একপর্যায়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরাও তাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে মিছিল করে। শনিবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভে ইডেন কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজ প্রশাসন তাদের নিবৃত্ত করতে কোনো ভূমিকা পালন করেনি।
জানা গেছে, ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে গত ২২ সেপ্টেম্বর সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আসন বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের বিষয়ে গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন। সেই সাক্ষাৎকার দেখে রেগে যান তামান্না ও রাজিয়া।
এ কারণে শনিবার বেলা ১১টার দিকে কলেজ শাখার নেত্রী নুজহাত ফারিয়া ওরফে রোকসানা, আয়েশা ইসলাম ওরফে মীম ও কামরুন নাহার ওরফে জ্যোতিসহ তামান্না ও রাজিয়ার কয়েকজন সমর্থক তাকে কলেজের ছাত্রাবাস থেকে বের করে দেওয়ার হু/মকি দেয়। এ সময় তারা জান্নাতুলকে উত্ত্যক্ত ও মা/রধর করে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুঠোফোনে এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তামান্না জেসমিন ও রাজিয়া সুলতানা জোর করে জান্নাতুল ফেরদৌসের হলরুম নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন জান্নাতুল। তামান্নাহ ও রাজিয়া জান্নাতুলকে নি/ র্যাতন করেছে এ নিয়ে কেন মিডিয়ায় কথা বললো।এর প্রতিবাদে কলেজের সব স্তরের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছে।তামান্না জেসমিন ও রাজিয়া সুলতানাকে বহিষ্কার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এদিকে ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা জান্নাতুল সাংবাদিকদের বলেন, “তামান্না ও রাজিয়ার অনুসারীরা তাকে ইডেন কলেজের শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী বাসভবনের একটি কক্ষে আটকে রেখে নি//র্যাতন করে। এমনকি তার আ/ পত্তিকর ছবিও তুলেছে।
এ বিষয়ে জানতে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার একাধিকবার ফোন করেও তিনি সাড়া দেননি। চলতি মাসে তাদের বিরুদ্ধে কলেজ ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য ও শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের একাধিক অভিযোগের খবর গণমাধ্যমে এসেছে।
বঙ্গমাতা ডরমেটরির সুপার নাজমুন নাহার জানান, রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে বিবাদমান দুই পক্ষের বক্তব্য তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আইনি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি পুলিশ। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সত্যতা ও অভিযুক্তের অপরাধ প্রমাণিত হলে সে ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা নিবে বলে জানিয়েছেন তারা। অন্যদিকে জান্নাতুল এর সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে ইডেন কলেজের বিপুলসংখ্যক ছাত্রীরা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করছে।