Monday , November 25 2024
Breaking News
Home / National / রাজনৈতিক দলের বক্তব্য পাল্টে ইসি নিজেই ঠিক করছে পক্ষ-বিপক্ষ,ইভিএম ব্যবহারে বদ্ধপরিকর থাকা কিসের ইঙ্গিত

রাজনৈতিক দলের বক্তব্য পাল্টে ইসি নিজেই ঠিক করছে পক্ষ-বিপক্ষ,ইভিএম ব্যবহারে বদ্ধপরিকর থাকা কিসের ইঙ্গিত

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে প্রতিনিয়ত। আর এই কারনে দেশের বর্তমান নির্বাচন কমিশন নানা ধরনের সব পদক্ষেপ নিচ্ছে নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার জন্য। যার মধ্যে সব থেকে বেশি আলোচনা হচ্ছে ইভিএম নিয়ে। জানা গেছে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিরুদ্ধে।

তবে নির্বাচন কমিশনের দাবি, বেশিরভাগ দলই ইভিএমের পক্ষে। তাই সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। এই সাংবিধানিক সংস্থাটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বক্তব্যকে নিজেদের মতো করে পরিবর্তন করেছে। উল্লেখ্য, গত জুলাইয়ে ইসির সঙ্গে সংলাপে ইভিএমের পক্ষে সরাসরি কথা বলেছিল মাত্র চারটি দল। তবে কর্মপরিকল্পনায় ইসি বলেছে, পক্ষে রয়েছে ১৭টি দল।

ইসি জানিয়েছে, জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত সংলাপে অংশ নেওয়া ২৯টি দল ইভিএম নিয়ে তাদের মতামত দিয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি দলই কোনো না কোনোভাবে ইভিএমের পক্ষে ছিল। কিন্তু ইসি যে ১৭টি দল ইভিএমের পক্ষে বলছে, তার মধ্যে তিনটি দল সরাসরি ইভিএমের বিপক্ষে। একটি পক্ষ ইভিএম নিয়ে মতামত দেয়নি। ইভিএম নিয়ে নয়টি দল ভিন্ন শর্ত দিয়েছে।

ইসি নিজেই ইভিএমের পক্ষ-বিপক্ষ ঠিক করেছে

গত বুধবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেখানে তারা উল্লেখ করেন, গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত সংলাপে ২৯টি দল ইভিএম নিয়ে তাদের মতামত জানিয়েছে, যার মধ্যে ১৭টি দল কোনো না কোনোভাবে ইভিএমের পক্ষে ছিল। ১২টি দল সরাসরি ইভিএমের পক্ষে ছিল।

তবে সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর লিখিত প্রস্তাব পর্যালোচনা ও দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ইসি যে ১৭টি দলকে ইভিএমের পক্ষে বলে প্রচার করেছে, তার মধ্যে ৩টি দল সরাসরি ইভিএমের বিপক্ষে। ইভিএম নিয়ে ১ দলের কোনো মতামত ছিল না। আর ৯টি দল ইভিএম নিয়ে বিভিন্ন শর্তের কথা বলেছে। মাত্র চারটি দল সরাসরি ইভিএমের পক্ষে ছিল। এই চারটি দল হলো আওয়ামী লীগ, তরিকত ফেডারেশন, কমিউনিস্ট পার্টি ও বিকল্পধারা। এর মধ্যে তরিকত ও সাম্যবাদী দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের অংশীদার। গত সংসদ নির্বাচনে বিকল্পধারার সঙ্গে এক ধরনের নির্বাচনী সমঝোতা হয়েছিল।

সূত্রের খবর, যে দলগুলি ইভিএমে ভিভিপ্যাট যুক্ত করার প্রস্তাব করেছিল, তাদের মধ্যে কিছু দল ইভিএমের বিরুদ্ধে দেখানো হয়েছিল, অন্যগুলি ইসি দ্বারা দেখানো হয়েছিল। যেমন ওয়ার্কার্স পার্টি, এনপিপি। দলটি দুটি VVPAT যোগ করার জন্য বলেছিল। কিন্তু ইসি দুই দলকেই সরাসরি ইভিএমের পক্ষে দেখিয়েছে। অন্যদিকে এনডিএম, খেলাফত মজলিসের বিরোধিতা করেছিল, যা ভিভিপিএটি অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবও করেছিল।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি ইভিএমের পক্ষে থাকলেও তা শর্ত সাপেক্ষে। শর্ত পূরণ করে ইভিএম ব্যবহার করতে বলেছে দলটি। তাদের বক্তব্য ছিল ইভিএম নিয়ে জনমনে অবিশ্বাস ও সংশয় রয়েছে। ইসির দাবি যে ইভিএম ‘হ্যাক’ করা যাবে না (বেআইনিভাবে নিয়ন্ত্রণ নেওয়া) তা প্রমাণিত নয়।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন গতকাল বলেন, শর্ত সাপেক্ষে তারা ইভিএমের পক্ষে। ইসিকে লিখিতভাবে শর্ত দেওয়া হয়েছে। এসব শর্ত পূরণ না হলে ইভিএম কার্যকর হবে না। ইসি যে সিদ্ধান্তই করুক না কেন, ওয়ার্কার্স পার্টি এসব শর্তে কথা বলবে।

জাকের পার্টি তাদের প্রস্তাবে বলেছে, ইভিএম সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। তারা বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করতে বলেন। কিন্তু ইসি এই দলকে সরাসরি ইভিএমের পক্ষে দেখিয়েছে।

জাসদ, গণতন্ত্রী পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, কালচারাল লিবারেশন অ্যালায়েন্স ও বিএনএফ শর্ত সাপেক্ষে ইভিএমের পক্ষে ছিল। আর নির্বাচন কমিশন ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার পর জাতীয় পার্টি (জাপা) ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি সংলাপে অংশ নেয়। তবে দুটি শর্ত সাপেক্ষে ইভিএমের পক্ষে ভোট দিয়েছে দলটি।

এসব দলের শর্তের মধ্যে ছিল ইভিএম নিয়ে বিতর্ক নিরসন, যান্ত্রিক ত্রুটি রোধ ও সব ধরনের জটিলতা নিরসন, অবৈধভাবে কেউ যাতে ইভিএম যন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করা, ইভিএম ব্যবহারে বৈষম্য না করা, আগে ইভিএম সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করা ইত্যাদি।

বিএনএফের প্রেসিডেন্ট আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ইসি যদি মনে করে সংলাপে তারা যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, তা ইভিএমের পক্ষে তাহলে পক্ষে, আর যদি মনে করে বিপক্ষে, তাহলে বিপক্ষে।

প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই বাংলাদশের জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রস্তুত করেছে নির্বাচন কমিশন। আর সেই রোডম্যাপ এ নেয়া হয়েছে নানা ধরনের সব পরিকল্পনা। তবে এ সব নিয়েও বেশ কিছু রাজনৈতিক দল এবং ব্যক্তির রয়েছে নানা ধরনের দ্বিমত।

About Rasel Khalifa

Check Also

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেন্টমার্টিন লিজ দেওয়ার বিষয়ে যা জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকার সেন্টমার্টিন দ্বীপকে লিজ দিচ্ছে। তবে প্রধান …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *