ডলারের দাম প্রায় সময়ই ওঠানামা করতে থাকে। তবে বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে ডলারের দাম আকাশচুম্বী। কারণ এর আগে কখনোই ডলারের দাম এত বৃদ্ধি পায়নি। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই ডলারের মূল্য ৮৩ টাকা, ৮৫ টাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। তবে বর্তমানে সেই ডলারের মূল্য ছাপিয়ে গেছে ১০০ টাকার উপরে।
একদিনের ব্যবধানে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে আবারও বেড়েছে ডলার। বুধবার আন্তঃব্যাঙ্কে ডলারের বিক্রির হার ৭৫ পয়সা বেড়ে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা, যা মঙ্গলবার ছিল ১০৬ টাকা ১৫ পয়সা। তবে আমদানি খাতে ডলারের দাম ১০৮ টাকা।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে নতুন আন্তঃব্যাংক রেট (বিনিময় হার) আপলোড করা হয়েছে। বাজারে ডলার ও টাকার সরবরাহ ও চাহিদার ভিত্তিতে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেডা) বিবেচনার ভিত্তিতে ডলারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এখন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক দৈনিক ভিত্তিতে ডলার লেনদেন করবে না। তবে বাজার বিবেচনায় প্রয়োজনে ডলার ক্রয়-বিক্রয় করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ব্যাংকগুলোর ডলার লেনদেনের গড় মূল্য প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে ডলারের গড় ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০২ টাকা ৩৭ পয়সা। মঙ্গলবার যা ছিল ১০১ টাকা ৬৭ পয়সা। আর বিক্রয়মূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা, যা মঙ্গলবার ছিল ১০৬ টাকা ১৫ পয়সা।
মঙ্গলবার ডলারের দাম বেড়েছে ১০ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে একদিনে সর্বোচ্চ। গতকাল এক লাফে তারা সর্বোচ্চ ১০৬ টাকা ১৫ পয়সা প্রতি ডলার বিক্রি করেছে এবং তাদের ক্রয়মূল্য ছিল ১০১ টাকা ৬৭ পয়সা, যা আগের দিন (সোমবার) ছিল ৯৬ টাকা। ওই দিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল ৩৭ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। তবে ডলারের নতুন দাম কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত দর নয়। এ হারে ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে ডলার ক্রয়-বিক্রয় করে।
এদিকে, বৈদেশিক মুদ্রা সংস্থা থেকে ডলারের রেমিট্যান্স সংগ্রহের হার সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা নির্ধারণের ফলে গত তিন দিন ধরে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমেছে। ভবিষ্যতে এর প্রবাহ আরও কমতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্যাংকের পরিবর্তে হুন্ডিতে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে পারে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনা আরও সংকটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশে আমদানি বিশেষ হরে বৃদ্ধি পেয়েছে যেমন, খাদ্যপণ্য এবং শিল্পের কাঁচামাল । এছাড়া গত দুই বছর সারা বিশ্বেছড়িয়ে পড়া রোগের কারণে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ছিল যা বর্তমানে উন্মুক্ত, যে কারণে মানুষ বিদেশ ভ্রমণে বেশি যাচ্ছে। এর সাথে বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা।