সম্প্রতি দেশের বেশ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণা অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর আগে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট করে গ্রাহকদের বোকা বানিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হন ইভ্যালির রাসেল-শামীমা দম্পতিসহ বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
আর এরই জের ধরে এবার সামনে এলো আরেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির অভিযোগ।
এবার গ্রাহকের টাকা নিয়ে ‘পালিয়েছেন’ আরেকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘আনন্দের বাজার’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) আহমুদুল হক খন্দকার।
গত ৫ অক্টোবর রাতে তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর গুলশান থানায় একটি মামলা করেন মো. সুজন নামের একজন গ্রাহক। এরপর থেকে তিনি পলাতক। শুধু তাই নয়, তার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে সব পণ্য সরিয়েও ফেলেছেন তিনি। তবে তার প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা ভিডিওগুলো এখনো ইউটিউবে রয়ে গেছে।
শনিবার গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আনন্দের বাজারের মালিকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তার অবস্থান এখনো জানা যায়নি।’
প্রতিষ্ঠানটির মালিক আহমুদুল হক খন্দকার ‘পলাতক’ অবস্থায়ও ফেসবুক লাইভে এসে পুলিশ, সাংবাদিক ও গ্রাহকদের গালাগালি করছেন।
কয়েক দফা ফেসবুক লাইভে এসে তিনি ই-কমার্সের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য পুলিশ, সাংবাদিক ও গ্রাহকদের দায়ী করে নানা বিরূপ মন্তব্য করেন। লাইভে তিনি পুলিশকে ঘুস দেওয়ার অভিযোগও তুলেছেন।
গত ৮ অক্টোবর রাতে ফেসবুক লাইভে আহমুদুল হক বলেন, ‘ওই দিন আমার পুলিশ ভাই এসেছিল, আমি ১২ লাখ টাকা ক্যাশ দিয়েছি। কই, কেউ আমার পক্ষে কথা বলল না!’
এই অভিযোগের বিষয়ে শনিবার পুলিশের গুলশান জোনের সহকারী কমিশনার নিউটন দাশ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তাকে (আহমুদুল হক) গ্রেফতার করতে পারলে কারা ঘুষ নিয়েছে, কী কারণে টাকা দিয়েছে- সেসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
এদিকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে রীতিমতো নিঃস্ব হয়ে গেছেন অনেকেই। চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে লোন নিয়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে আজ পথে পথে ঘুরছে শত শত মানুষ। তবে এদিকে ইতিমধ্যে প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে, ই-কমার্সে ক্ষতিগ্রস্থদের দায় সরকার নিবে না। ফলে দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটছে গ্রাহকদের।