প্রিয়জন হারানোর বেদনা অনেক। যে না হারিয়েছে সে বুঝবেনা। অনেক সময় রক্তে কোন সম্পর্ক না থকলেও একজন ব্যক্তি মানুষের প্রিয় ব্যক্তি হয়ে যায়। পরোপকারিতা ও একজন মানুষের জীবন গড়ার মেইন ভূমিকায় যদি কেউ থাকে তাকে কখনো ভুলে যায় না। এর পরিচয় দিয়েছেন সুচরিতা।
কিংবদন্তি গীতিকার, সুরকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তার আকস্মিক মৃ/ত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই গুণী ব্যক্তিত্বের জন্য শোবিজ অঙ্গনের সবাই শোক প্রকাশ করেছেন।
অনেকেই গাজী মাজহারুল আনোয়ারের বারিধারার বাসায় ছুটে আসেন, পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিতে। মৃত্যুর খবরে ছুটে আসেন অভিনেত্রী সুচরিতা। সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তিনি গাজী মাজহারুল আনোয়ারের বাসায় ছিলেন। যাওয়ার সময় তিনি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন।
কান্নায় ভেঙে পড়েন এই অভিনেত্রী। কথা বলতে পারেনি। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, আমার বাবার মতো একজন মানুষকে নিয়ে এভাবে কথা বলতে হবে কখনো ভাবিনি। গাজী ভাই আমাকে সুচরিতা করেছেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ার, দিলীপ বিশ্বাসের কারণে আজ সবাই আমাকে সুচরিতা নামে চেনে।
তিনি আরও বলেন, তাকে হারানো মানে একজন অভিভাবককে হারানো। আমি কথা বলতে পারি না। আপনারা সবাই গাজী মাজহারুল আনোয়ারের জন্য দোয়া করবেন।
রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়ার পথে গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা যান।
গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২১ বছর বয়সে ১৯৬৪ সালে রেডিও পাকিস্তানের জন্য গান লেখা শুরু করেন।
এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই তিনি নিয়মিত গান ও নাটক রচনা করেন। গাজী মাজহারুল ১৯৬৭ সালে আনোয়ারের প্রথম চলচ্চিত্রে সঙ্গীত রচনা করেন। সেই ছবির নাম ছিল ‘আয়না ও রেমানি’।
১৯৬৭ সালে চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি গল্প, চিত্রনাট্য, সংলাপ এবং গান লেখাতেও দক্ষতা দেখিয়েছেন। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘নান্টু ঘটক’ মুক্তি পায় ১৯৮২ সালে। তিনি মোট ৪১টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন।
আজ সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি এমন একজন ব্যক্তিকে হারিয়েছে যিনি অনেক শীল্পিকে তার যোগ্য স্থানে পৌছে দিতে মেইন ভূমিকা রেখেছেন। অন্যদিকে তিনি অনেক কিছুর উপর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি। এমন গুনি ব্যক্তিতে হারিয়ে আজ সমবেদনার ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না শিল্পী সমিতির সদস্যরা।