দেশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা ও রাজনৈতিক বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে তাসলিমা নাসরিন। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখা অনেক কথা সমালোচনা ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়। তিনি সর্বদা নারী ও দেশের মানুষের অধিকার সংক্রান্ত পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় করে থাকেন। এবার জন্মদিনে বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যম তাছলিমার দেশ ছাড়ার কারণ তুলে ধরেন।
ওই সংবাদ মাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে লেখেন, তাঁর (তাছলিমা নাসরিন) সব মতামত কিংবা সব লেখা পছন্দ করি এমন না। কিছু কিছু মতও লেখা নিয়ে মতবিরোধ থাকবেই। কিন্তু এটা সত্য তাঁর এই গগনচুম্বী জনপ্রিয়তার একমাত্র কারণ কোন উত্তেজনা বা ফ্লুক জাতীয় কিছু নয়।
পদ্মার তীরে নারীও সংখ্যালঘু নামে পরিচিত মানুষজন বড় অসহায়। বড় বড় পন্ডিত, সমাজ বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ যার সাথে ই আলাপ করেন, জানবেন এই বিষয়গুলো তারা হয় এড়িয়ে যেতে ভালোবাসে নয়তো অস্বীকার।
নারীও সংখ্যালঘুর পাশে দাঁড়াতে গিয়ে বিপাকে পড়ে দেশছাড়া তসলিমা। পাশের শহর কলকাতায়ও থাকতে পারেন নি মৌলবাদীদের ভয়ে। হিল্লী দিল্লী প্যারিস সুইডেন নানা দেশে ঘর বসতি তাঁর। বিদেশে, বিদেশী মিডিয়ায়াও তুমূল জনপ্রিয় তিনি। কলকাতার নাক উঁচু বাংলাদেশের লেখাও লেখক বিষয়ে সন্দিগ্ধ পাঠককূলে তাঁর অসম্ভব প্রিয়তার প্রমাণ পাই। যে কোন ছোট রেলস্টেশনের বুক শপের শো কেসে ঝলমল করে তসলিমা নাসরিন।
তিনি কি লিখেছেন, কেন লিখেছেন সব খোলা বই। পড়ুন, জানুন দরকার হলে বিরোধিতা করুন। কিন্তু এটা কেমন বিচার?
একজন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামীর ও মুক্ত হবার মেয়াদকাল থাকে।
চোর বাটপার খুনী লুটেরাও দেশে থাকে। দেশের ভেতরেই তাদের বিচার বা সাজা হয়। তসলিমা নাসরিন কি তাদের চেয়ে বড় অপরাধী?
আমরা যারা প্রবাসী দু বছর দেশে যেতে না পারলে বুক ধড়ফড় শুরু হয়। মন খারাপ হতে হতে ডিপ্রেশন ধরা দেয়। কতো মানুষ মানসিক সুস্থতা হারিয়ে শেষ পর্যন্ত দেশে চলে যায়।
জননীও জন্মভূমি র এই টানকে বলে নাড়ীর টান। এই বাঁধন মানুষ নির্মান করে না। এটা প্রকৃতি কিংবা ঈশ্বরের দান। সেভাবেই নির্ধারণ হয় জননী ও জন্মভূমি। পৃথিবীর কোন সভ্য দেশও সমাজ তার দাগী সন্তানকে ও মাতৃভূমিতে থাকা বা যাতায়াতের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে না।
অথচ মুখে মুখে ডিজিটাল, উন্নতি, সমৃদ্ধি, প্রগতির গালগল্প আর ভিতরে প্রাগৈতিহাসিক অন্ধকার আমাদের। এ সমাজ হেলেনা জাহাঙ্গীর, শামীম, সোনগাজীর সিরাজ দৌল্লা কে সহ্য করলেও একজন মুক্ত মনের উদার লেখককে সহ্য করতে পারে না। তসলিমা নাসরিন ২৮ বছর বাংলার আকাশ দেখেন না, দেখতে পান না বাংলার নীল আকাশের রূপালী তারা, বৃষ্টির এমন জল দুনিয়ার কোথাও নাই। নাই এমন কাদামাটির স্বর্গভূমি।
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপী গরিয়সী, জননীর কোল বঞ্চিত করে রাখা জনপদের আমরাই তালেবান বা এমন কিছু র সমালোচনা করি। কী অদ্ভুত! ষাটের উঠোনে পা দিতে যাওয়া ষাটের তসলিমা নাসরিন, বালাই ষাট। শুভ জন্মদিন।
তালিমান নাসরিন একজন কবি ও সাহিত্যিক। তার জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ ও ভারতের অনেক নেটিজেন শুভেচ্ছা জানায় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে । অনেকে তাদের নিজেদের ফে’সবুক ফিডে তার দীর্ঘ আয়ু কামনা করেও পোষ্ট করেছেন।