এক সময়ের আলোচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ক্যাসিনো কাণ্ডে আলোচিত হওয়ার পর ক্যাসিনো সম্রাট হিসেবে আখ্যায়িত হন। তার সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসলে জানা যায় রাজধানী ঢাকার প্রায় সকল ক্যাসিনো তার আঙ্গুলের ইশারায় চলতো। তবে তিনি ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে বেশ কিছুদিন ধরে ধরা না পড়লেও পরবর্তীতে গ্রেফতার হন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে তার পদ থেকে অপসারণ করার নির্দেশ দেন। এবার জামিন পেলেন সেই ক্যাসিনো সম্রাট।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে দুই শর্তে জামিন দিয়েছেন আদালত। আর তা হলো- আদালত আদেশে উল্লেখ করেছে যে পাসপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে এবং বিদেশে যাওয়া যাবে না।
সোমবার (২২ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মোঃ আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিন সম্রাটের জামিন শুনানি ও অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। সে অনুযায়ী সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএসএমইউ) থেকে সম্রাটকে দরবারে আনা হয়। এরপর তার পক্ষে জামিন শুনানি করেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২৪ মে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে সম্রাটকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ১৮ মে দুর্নীতির এ মামলায় সম্রাটের জামিন বাতিল করেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। একই সঙ্গে সাত দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে ১১ মে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে জামিন দেন আদালত।
গত ১১ এপ্রিল ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা আদালতের বিচারক তেহসিন ইফতেখার নিষিদ্ধ দ্রব্যের মামলায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। আর গত ১০ এপ্রিল ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেনের আদালত মানি লন্ডারিং ও অস্ত্র মামলায় তার জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা সম্রাটের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন দুদক উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত বছরের ২৬ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
উল্লেখ্য, সম্রাট গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হয়। এরপর তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। ক্যাসিনোর মাধ্যমে সম্রাট প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা চাঁদা হিসেবেই নিতেন এরপর অভিযোগ উঠে বিদেশ অর্থ পাচারের। জানা যায় সিঙ্গাপুরে প্রথম সারির জু্যাড়ী হিসেবে সম্রাটের নাম আগেভাগেই আসতো।