Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / রোজ যান হোটেলে: টাকা না দিয়ে উল্টো ছাত্রলীগ নেতার হুমকি, লিখে রেখেও লাভ নেই

রোজ যান হোটেলে: টাকা না দিয়ে উল্টো ছাত্রলীগ নেতার হুমকি, লিখে রেখেও লাভ নেই

প্রায় প্রতিদিনই ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জেরে রীতিমতো অতিষ্ঠ দেশের সাধারণ মানুষ। ক্ষমতাকে পুজি করে যে যেভাবে পারছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারনা করে মোটা অংকের টাকাও হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠছে ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। আর এরই ধারাবাহিকতার মধ্যদিয়ে এবার সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে এলো দুই ছাত্রলীগ নেতার নাম।

জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হোটেল মালিক শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে নিয়মিত চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হল সংলগ্ন রেস্টুরেন্টের মালিক মানিক হোসেন বাবু। অপরদিকে আসামিরা হলেন- শহীদ জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম রাকিব।

হোটেল মালিকের অভিযোগ, হল কমিটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে। তারা প্রতিদিন ২০০০ দাবি করলেও তারা প্রতিদিন ১০০ টাকা নিচ্ছে।

ভুক্তভোগী বাবু বলেন, জিয়া হলের সভাপতি ও সেক্রেটারি হওয়ার পর তারা (রাশেদ ও রাকিব) আমার সঙ্গে চুক্তি করে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে দোকান চালাতে দেবেন না বলে হুমকি দেন। প্রথমে তারা প্রতিদিন দুই হাজার টাকা দাবি করে। তারপর আমি তাদের নিয়মিত ১০০০ দিতে রাজি হই। কিছুদিন ব্যবসা খারাপ থাকায় সপ্তাহে দুই হাজার করে নিলেও এখন প্রতিদিন এক হাজার করে নিচ্ছে। গত শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে রাশেদ এসে এক হাজার টাকা নিয়ে যায়। এ সপ্তাহে ছুটি থাকায় তিন-চার দিন টাকা দিতে পারিনি। তারা তা ধরে রেখেছে। পরে নেবে। মানে ১০০০ নিয়মিত করতে হবে।

তিনি বলেন, তারা ফোন করে টাকা প্রস্তুত রাখতে বলেন। কখনো রশিদ, কখনো রাকিব এসে টাকা নিয়ে যায়। পরে দুজনেই টাকা ভাগাভাগি করে নেন। এ ছাড়া হল কমিটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে রাকিব প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ টাকার খাবার খায়। তিনি কখনো বিল পরিশোধ করেননি। আমি পুরো হিসাব লিখে রেখেছি। এ পর্যন্ত তার প্রায় দশ হাজার টাকা বাকি আছে।

ওই দোকানে কর্মরত মেহেদী হাসান আকাশ বলেন, রাশেদ ভাইয়ের ছেলেরা প্রায়ই এসে হুমকি দেয়। এখন খাবারের রেট, ৪-৫ জন খেয়ে ৩০০ থেকে ৪০০ বিল আসলে ১০০ টাকা দিয়ে ছাড়ে। আর রাশেদ ভাইয়ের যত টাকাই বিল হোক না কেন ফিক্সড ৩০ টাকা দিয়ে চলে যায়। রাকিব ভাইয়ের প্রতি তিন ঘণ্টায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বিল। টাকা না দিয়ে বাবু চাচাকে লিখে রাখতে বলে। খাতায় হিসেব লিখে রাখার বিষয়টি রাকিবকে জানালে ‘লিখে রেখে লাভ নেই’ বলে জানিয়েছেন। এতেই বোঝা যায় সে টাকা দিবে না।

চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ জিয়াউর রহমান হল শাখার সভাপতি রাশেদ মিয়া বলেন, এগুলো মিথ্যা। সবার সামনে টাকা দিয়ে খাই। ৫০ টাকার খাবার খেয়ে হয়তো ৪০ টাকা দেই। এখানে চাঁদা নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। হয়তো আমাকে ফাঁসানোর জন্য এটা করা হচ্ছে।

একই হল শাখার সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমার জানা নেই। আমার মনে হয় রাশেদ ভাইও এ বিষয়ে কিছু জানেন না। খাবারের বিল পরিশোধ না করার বিষয়ে তিনি বলেন, কোন কোন মাসে অগ্রিম টাকা দিতাম, আবার কোন মাস শেষে টাকা দিতাম। শেষ দুই মাসের টাকা বাকি থাকতে পারে। সেটাও দেব

ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, সম্প্রতি ছাত্রলীগের বিভিন্ন বিষয় আমাদের নজরে এসেছে। এ নিয়ে গতকাল আমরা বৈঠক করেছি। এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। ছাত্রলীগের কোনো কর্মী অন্যায় করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এদিকে এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়টি নিশ্চিত করে সংবাদ মাধ্যমকে জানান, এ বিষয়টির সঙ্গে মাত্রই তিনি অবগত হয়েছেন। সেহেতু ভালো করে খুতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

About Rasel Khalifa

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *