চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) বর্তমান সময় পর্যন্ত নিরবাচনের সংখ্যা ছয়টি। এই নির্বাচনগুলোতে সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু শহরের চকবাজারের ১৬ নং সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর হিসেবে দাঁড়িয়ে বিজয়ী হন। এর পূর্বে, তিনি ১৯৭৭ সালের দিকে চট্টগ্রাম পৌরসভা হতে তিনি কমিশনার পদে ল’/ড়েন এবং নির্বাচিত হন। নির্বাচনে কখনো হাল ছেড়ে না দেওয়া এই নেতার আকস্মিক প্রয়ানে সেখানে কাউন্সিলরের পদটি শূন্য হয়ে যায়। এই প্রেক্ষাপটে এই ওয়ার্ডে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ, বৃহস্পতিবার।
২১ জন প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা মঙ্গলবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। এই ওয়ার্ডে এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রতিটি কাউন্সিলর নির্বাচনে, হাতে গোনা কয়েকজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। গত ২৭ জানুয়ারি চসিকের শেষ নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত একেএম সালাউদ্দিন কাউসার লাভু এবং আরও দুইজন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মিন্টুর সঙ্গে ল’/ড়া’ই করেন। তবে আওয়ামী লীগের মিন্টু বিপুল ভোটে জয়ী হন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ১৮ মার্চ হঠাৎ করেই প্রয়াত হন এই নেতা। ফলে এখানে কাউন্সিলর পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, এত প্রার্থী অতীতের অন্য কোনো নির্বাচনে চকবাজার তথা চট্টগ্রামবাসী দেখেনি। এর মধ্যে বিএনপির একক প্রার্থী থাকলেও অন্য ২০ জনই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। প্রার্থীর ছড়াছড়ির কারণে নতুন করে বি’রো/ধ এড়াতে আওয়ামী লীগ এবার একক প্রার্থী দিতে পারেনি। ফলে আওয়ামী লীগের ভোট ২০ ভাগ হবে বলে অনেকে মন্তব্য করেন।
নগরের নামি-দামি অনেক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থাকা চকবাজার ওয়ার্ডে ৩২ বছরের বেশি সময় ধরে কাউন্সিলর ছিলেন মিন্টু। উপনির্বাচনের মাধ্যমে প্রায় তিন যুগ পর এই ওয়ার্ড পাচ্ছে নতুন কাউন্সিলর। ফলে মিন্টুবিহীন এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর হিসেবে কে বিজয়ী হচ্ছেন—তা নিয়েও চলছে নানা আলোচনা।
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, আজ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ওয়ার্ডের ১৫ কেন্দ্রের ৮৬ বুথে ভোট নেওয়া হবে। এই ওয়ার্ডে মোট ভোটারসংখ্যা ৩২ হাজার ৪২ জন।
এবারের নির্বাচনে প্রয়াত কাউন্সিলর মিন্টুর সহধর্মিণী মেহেরুন্নিছা খানমও প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী ইনামুল হক দানুর ছেলে কাজী মুহাম্মদ ইমরান, বিএনপির সালাউদ্দীন কাউসার লাভুসহ আরো ১৮ জন প্রার্থী রয়েছেন।
কাউন্সিলর প্রার্থী মেহেরুন্নিছা খানম বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি বিজয়ী হব।’ আরেক প্রার্থী কাজী মুহাম্মদ ইমরান বলেন, ‘জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’ বিএনপির সালাউদ্দীন কাউসার লাভুও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চকবাজার ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের ২০ জন প্রার্থীর বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ বলেন, উপনির্বাচনে আমাদের দল হতে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন করা হয়নি। যারা দাঁড়িয়েছে তারা নিজেদের মত। জনগণ যাকে ভোট দেবে তাকেই নির্বাচিত করা হবে। ‘
এদিকে, দুই বিতর্কিত প্রার্থী নুর মোস্তফা টিনু ও আব্দুর রউফের যারা সমর্থক রয়েছেন তারা ভোটের এলাকায় উ’ত্তাপ ছড়িয়ে যাচ্ছেন। গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর এই ধরনের আ’/শ’/ঙ্কার কথা বলেছেন যে, এই দুই প্রার্থীর সমর্থকেরা নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিনে স’/শ’/স্ত্র মহড়া দেওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এর ফলে, প্রায় ৩২,০০০ ভোটারকে ভয় নিয়ে ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে হবে। তবে উমর ফারুক যিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে রয়েছেন তিনি বলেন, “জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনী এলাকায় পূর্ণকালীন দায়িত্বে থাকবেন।” কোনো ধরনের অযাচিত ঘটনা ঘটে থাকলে সেক্ষেত্রে তারা তাৎক্ষণিক আইনি পদক্ষেপে যাবেন।