Saturday , September 21 2024
Breaking News
Home / Countrywide / মৃত্যুর আগে ওই দিন রাতে শেষবারের মতো ছেলের সঙ্গে কি কথা বলেছিলেন সেই শিক্ষিকা

মৃত্যুর আগে ওই দিন রাতে শেষবারের মতো ছেলের সঙ্গে কি কথা বলেছিলেন সেই শিক্ষিকা

সম্প্রতি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে বয়সের থেকে ছোট তরুণকে বিয়ে করায় ওই শিক্ষিকা ব্যাপক আলোচনায় আসেন। তাদের এই অসম বিয়ে সমাজের অনেকে ভালো ভাবে মেনে নেইনি। যার ফলে ওই শিক্ষিকার নানা সময়ে কুটুক্তি ও হেনাস্তার শিকার হতে হয়। তবে সব বাধাকে অতিক্রম করে সংসার করছিল ওই শিক্ষিকা। কিন্তু একের এক জটিলতার মুখোমুখি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে শেষ পর্যন্ত এমন পথ বেঁচে নেই।

নাটোরের গুরুদাসপুর এম হক কলেজের সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহার (৪০) ওই দিন রাতে শেষবারের মতো ছেলে সালমান নাফিস বৃন্তের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। ছেলের সঙ্গে ৪০ সেকেন্ডের কথোপকথনে ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ার বিষয়টি জানান। এরপর ছেলে তার সৎবাবা মামুন হোসাইনের (২২) সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। এতে শেষ পর্যন্ত কোনো কাজ হয়নি।

বৃন্ত জানান, গত শনিবার (১৩ আগস্ট) ঘটনার দিন রাত ১১টার কিছু আগে তিনি তার মাকে ফোন করেছিলেন। এ সময় মা জানান, তিনি দুই এমজি পাওয়ারের আটটি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়েছেন। এর বাইরে মা আর কথা বলতে পারেননি। এরপর সংযোগ কেটে মামুনকে ফোন দেন বৃন্ত। এ সময় মামুন তাকে বলেন, খায়রুন দু-চারটি কথা হলেই ঘুমের ট্যাবলেট খায়। মামুন বৃন্তাকে তার মায়ের সাথে কথা বলতে বলে। পরদিন সকালে মামুন তাকে ফোন করে মায়ের আ/ত্মহত্যার কথা জানায়।

মা হারানো এই ছেলে দাবি করেছেন, মামুন যে কথাগুলো বলেছেন তা মিথ্যা । মূলত মামুন মোটরসাইকেল কেনাসহ সব কিছুর জন্য মায়ের কাছ থেকে টাকা নিতেন। এছাড়া মাকে সবসময় মানসিক চাপে রাখতেন। তার মা তাকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দিতে চাইলে মামুন নিষেধ করেন। ওই বিষয়টি নিয়ে ওই রাতে মায়ের সঙ্গে মামুনের ঝগড়া হয়। মামুন হয় তার মাকে হ/ত্যা করেছে অথবা আ/ত্মহত্যায় উৎসাহিত করেছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের দাবি জানান তিনি।

বৃন্ত জানান, তিনি রাজশাহী সিটি কলেজে এইচএসসি প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী। তার ছোটভাই অর্ক তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।

নাটোর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক পরিতোষ কুমার জানান, খায়রুনের ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের আরএমও সামিউল ইসলাম শান্তর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তার গলায় আঘাতের চিহ্ন ছাড়া শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃ/ত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই এজে মিন্টু জানান, নি/হতের চাচাতো ভাই সাবের উদ্দিন বাদী হয়ে একটি অ/পমৃত্যু মামলা করেছেন। তবে ওই শিক্ষকের মৃ/ত্যুর সঙ্গে মামুন জড়িত বলে দাবি করেছেন নি/হতের স্বজনরা। ওই ভাড়া বাসায় নি/হতের সঙ্গে থাকতেন মামুন। খায়রুনের মৃ/ত্যুর সঙ্গে মামুন জড়িত থাকতে পারে এমন ধারণায় ওই মামলায় ৫৪ ধারায় তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার স্বপন জানান, মামুনের সঙ্গে খায়রুনের স্বাভাবিক সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেন মামুন। তবে খায়রুন কেন ও কীভাবে মা/রা গেছে তা জানেন না মামুন। তিনি আদালতে বিষয়টি তুলে ধরে জামিন চাইলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, সিআইডির ক্রাইম ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ছায়াকে তদন্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এছাড়া জেলা পুলিশ ও র‌্যাব মাঠে কাজ করেছে। ময়নাতদন্তসহ সংশ্লিষ্ট তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটি হ/ত্যা না আ/ত্মহত্যা তা তদন্তের পর জানা যাবে।

এর আগে গত রোববার সকাল ৭টায় নাটোর শহরের বালারীপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে শিক্ষিকা খায়রুন নাহার (৪০) ম/রদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্বামী কলেজ ছাত্রী মামুন হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ওই ঘটনার জন্য মামুনকে দায়ি করে শিক্ষিকার বড় ছেলে তার শাস্তির দাবি করেন। সে বলেছেন তার মামুনের কারনে এমন ঘটনা ঘটেছে।

About Babu

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *