ভারতীয় বাংলা সিনেমার তুমুল জনপ্রিয় একজন অভিনেতা খরাজ মুখার্জি। যিনি কমেডিয়ান ‘চরিত্রে’ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে দর্শকের মন জয় করে নিয়েছেন। এদিকে এই মুহুর্তে বাংলাদেশের চাঁদপুরে অবস্থান করছেন গুণী এই অভিনেতা। জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশের শাপলা মিডিয়ার প্রয়োজনা ‘প্রিয়া রে’ নামক একটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। আর সেই সুবাদে এখন বাংলাদেশে তিনি।
তবে চাঁদপুরে এসে গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট জয়া আহসানের স্তুতিবাক্য করে পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় কমেডি এই অভিনেতা বলেন, আমরা বাংলাদেশে এসে কাজ করছি। এখানে কেউ আপত্তি তোলেনি। কোনো অভিনেতা অভিনেত্রী বলেনি যে আনাপনারা এসেছেন বলে আমরা অসন্তুষ্ট হয়েছি ঠিক তেমনই আমি জয়াকে ফোন করেছিলাম বিসর্জন দেখার পরে। জয়াকে বলেছিলাম তোমার পাসপোর্ট আমি কেড়ে নেব। তোমাকে আমি আর বাংলাদেশে যেতে দেব না, ভারতবর্ষ থেকে। তুই ভাই কে রে, এ কি রকম ব্যাপার। তুই তো দেখি আমাদের শিল্পীদের দেশছাড়া করে দিবি-
বাংলাদেশের শাপলা মিডিয়ার প্রয়োজনা ‘প্রিয়া রে’ সিনেমায় শুটিং করতে তিনি এখন চাঁদপুরে। তার সঙ্গে কাজ করতে এই সিনেমায় কলকাতা থেকে এসেছেন টালিউডে জনপ্রিয় অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়, অভিনেতা রজতাভ দত্তও।
১৯৮০ সালে হুলস্থুল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন। বিগত বত্রিশ বছরে তিনি পাতালঘর, বাই বাই ব্যাংকক, কাহানী, নেমসেক, এক্সিডেন্ট, মুক্তোধারা, স্পেশাল ২৬, জাতিস্মর সহ অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
কলকাতায় এসে শিল্পীদের এক দেশ থেকে আরেক দেশে কাজের বিষয়ে কথা বলছিলেন। খরাজ বলেন, ‘একজন শিল্পীর সত্যিকার গুণ হলো, যিনি গুণী তার সত্যিকার কদর করা। একজন সত্যিকার শিল্পীই গুণীর কদর করতে পারে। ভালো কাজ হলে তার সমাদর দিতে হবে। আজ কার কাজ ক্মে যাবে, কার কাজ বেড়ে যাবে এটা বড় কথা নয়। আজ কোনো শিল্পী যদি দর্শকদের মন জয় করে তাহলে আমাদের বলার কী আছে?’
তিনি বলেন, ঋতুপর্ণা যদি সত্যিকার অর্থে এই দেশে এসে এদেশের মানুষের মন জয় করে থাকে, আর জয়া আহসান কলকাতায় গিয়ে নিজের অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মন জয় করে থাকে তাহলে আমাদের বলার কি থাকে? এরমধ্যে তো আমি কোনো অসুবিধার কিছু দেখি না।
চাঁদপুরের এক ঘোর মফস্বলে এসে এসে শুটিং-এর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেন, ‘অসাধারণ। আগে কয়েকবার বাংলাদেশে শুটিং করতে এসেছি। কিন্তু এই রকম পরিবেশ পেলাম এই প্রথম। পুকুরে হাঁস গোসল করছে, মাছ লাফাচ্ছে। ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। চারদিকে গ্রামের মানুষ, গ্রামীন ঘরবাড়ি। ভীষণই শান্ত পরিবেশ।
২০১২ সালের কাহানি চলচ্চিত্রে তিনি ইনস্পেকটর চ্যাটার্জী চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০০৪ সালে পাতালঘর চলচ্চিত্রের জন্য মুখার্জী বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্টস’ অ্যাসোসিয়েশন – সেরা পুরুষ প্লেব্যাক পুরস্কার লাভ করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮০ সালে ‘হুলস্থুল’ নামক একটি সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমকে ঢালিউডে প্রথমবারের মতো পা রাখেন খরাজ মুখার্জী। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য ব্যবসায় সফল সিনেমা উপহার দিয়ে জায়গা নিয়েছেন কোটি কোটি ভক্তের মনে। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্য রয়েছে- ‘বস ২’, ‘হরিপদ ব্যান্ডওয়ালা’, ‘কেলোর কীর্তি, জামাই ৪২০’, ‘লে হালুয়া লে’, ‘পাগলু ২’, ‘আওয়ারা’, ইত্যাদি।