Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / International / নিরাপত্তা বাহিনীর নিপীড়ন: ঢাকায় আসার আগে বাংলাদেশ নিয়ে বিশেষ বার্তা দিলেন মিশেল ব্যাচেলেট

নিরাপত্তা বাহিনীর নিপীড়ন: ঢাকায় আসার আগে বাংলাদেশ নিয়ে বিশেষ বার্তা দিলেন মিশেল ব্যাচেলেট

বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে চলছে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। আর এই আলোচনা সমালোচনা আজ থেকে নয় আরো কয়েক বছর আগে থেকেই হয়ে আসছে। এ দিকে এবার আগামী রোববার পাঁচ দিনের সফরে ঢাকা আসছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট। তার সফরকে ঘিরে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন হয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও সংস্থা।

গতকাল জেনেভায় এক যৌথ বিবৃতিতে ৯টি মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের প্রধানের সফরে বাংলাদেশের পরিস্থিতি, বিশেষ করে ‘সুশীল সমাজের সুযোগ-সুবিধা সঙ্কুচিত হওয়া’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা উচিত। “নিরাপত্তা বাহিনীর নিপীড়ন” নিয়ে নিন্দা জানানো উচিত।

এই সংস্থাগুলি হল অ্যান্টি-ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্ক, এশিয়ান ফেডারেশন এগেনস্ট অনৈচ্ছিক অন্তর্ধান, এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফোরাম-এশিয়া), ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্ট, মোনাশ ইউনিভার্সিটির এলিয়স জাস্টিস, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ), ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অ্যাগেইনস্ট। এনফোর্সড ডিস-এপিয়ারেন্স, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস এবং রবার্ট জে কেনেডি হিউম্যান রাইটস।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। এ ছাড়া মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গেও দেখা করতে পারেন তিনি। মিশেল ব্যাচেলেটের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরও পরিদর্শনের কথা রয়েছে।

এই সফরের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ জুলাই ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা। সরকারও এই সফর থেকে বাংলাদেশের সম্ভাব্য অর্জন ও ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়েছে, বিশেষ করে এই সফরকে ঘিরে বহুমুখী প্রচারণার আশঙ্কা রয়েছে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ড. শাহিরার আলম সাংবাদিকদের বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট সফরকালে মানবাধিকার খাতে বাংলাদেশের অর্জনগুলো তুলে ধরবে সরকার। তিনি বলেন, ‘আমরা এই সফরের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। তিনি অগ্রগতি দেখবেন এবং চ্যালেঞ্জ জানবেন। ‘

এইচআরডব্লিউ সহ মানবাধিকার সংস্থাগুলোর বিবৃতিতে বাংলাদেশের সুশীল সমাজ সম্পর্কেও মন্তব্য রয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সুশীল সমাজের ওপর চাপ বাড়ছে বলে অভিযোগ সংগঠনগুলোর।

২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এর আগে ২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ছিল। সেই আইন এবং ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সরকার, সাংবাদিকদের সমালোচনাকে নীরব ও স্তব্ধ করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। সেসব আইনে অনেক মামলা হয়েছে। তারা বছরের পর বছর ধরে চলছে।

ওই সংগঠনগুলো বলেছে, গুম, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তের জন্য মিশেল ব্যাচেলেটের বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের আহ্বান জানানো উচিত। ৯ টি সংস্থা মিশেল ব্যাচেলেটকে একটি বার্তা পাঠাতে আহ্বান জানিয়েছে যে নিরাপত্তা বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে তাদের অংশগ্রহণ ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।

প্রসঙ্গত, গেল বছরের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর সেই থেকেই সারা দেশে এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। বিশেষ করে এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের জের ধরেই দেশের এলিট বাহিনীর উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয় দেশটি।

About Rasel Khalifa

Check Also

বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিকের অভিযোগ, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া এবং সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দাবি তোলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *