প্রেমের টানে অনেক মানুষ ঘর পরিবার দেশ ছেড়েছে এমন ঘটনা নতুন নয়। এবার প্রেমের টাকে সুদূর মালয়শিয়া থেকে ছুটে এসেছে অল্প বয়সী এক তরুণী। এর আগেও বাংলাদেশে অনেক তরুণী প্রেমের টানে ছুটে এসেছে।
এক মাস আগে গাজীপুরের ভোগড়ায় আমেরিকা থেকে এক তরুণীর প্রেমের টানে ছুটে আসেন এক যুবক। গাজীপুরে এক যুবকের প্রেমের টানে বার্মিজ এসেছেন মার্কিন এক তরুণী। দুজনেই বিবাহিত। এবার গাজীপুর শহরের জোলারপাড় এলাকার এক যুবকের প্রেমের জন্য এখানে এসেছেন মালয়েশিয়ান এক তরুণী। ধুমধাম করে বিয়ে করেন তারা।
মসজিদে অনুষ্ঠিত এ বিয়েতে গ্রামবাসীরা উল্লাস ও উল্লাস করেন। তাদের নিয়ে উৎসবের মেজাজে চলছে গোটা এলাকা। জানা যায়, মালয়েশিয়ার কাম্পুং কেলেওয়াক এলাকার বাসিন্দা নুরকারমিলা বিনতে হামিদ নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী পাঁচ দিন আগে তার প্রেমিক জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে ছুটে যান ১৮ জুলাই। এখানে এসে তিনি মুগ্ধ হন। মালয়েশিয়ায় তার প্রেমে পড়েন জাহাঙ্গীর। তার মতে, বাঙালি ছেলে জাহাঙ্গীর খুবই ভালো, সৎ ও দায়িত্বশীল। তাই তিনি এখানে ছুটে এসেছেন শুধু সেরা বন্ধু হিসেবে নয় জীবনসঙ্গী হিসেবে। এসে বিয়ে করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করেন। শ্বশুরবাড়ির আতিথেয়তা ও ভালোবাসায় মুগ্ধ।
জাহাঙ্গীর-নূরকর্মিলা একসঙ্গে কাজ করেছেন। তারপর ধীরে ধীরে প্রেম। তিন বছর আগে দেশে ফিরলেও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া রোগ ও নানা কারণে মালয়েশিয়ায় ফেরেননি জাহাঙ্গীর। তবে ভালোবাসার টানে হৃদয়ের মানুষটি এদেশে ছুটে গেলে মা-বাবা ও আত্মীয়স্বজনের মতামতে বিয়ে করেন জাহাঙ্গীর। রাষ্ট্রীয় সীমানা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি উপেক্ষা করে নুরকর্মিলা-জাহাঙ্গীর এদেশে ছুটে যাওয়ায় স্বজনসহ গ্রামবাসী তাদের বিয়েকে সানন্দে মেনে নেয়। আয়োজনে শতাধিক মানুষকে খাওয়ানোর পর শুক্রবার (২২ জুলাই) বিকেলে স্থানীয় একটি মসজিদে বিয়ের আয়োজন করা হয়।
এই বিয়েতে শুধু তাদের গ্রাম নয়, আশপাশের গ্রামের মানুষও উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের পর তারা খুব খুশি। স্থানীয় লোকজন ও উভয়ের পরিবারের সম্মতিতে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। বিয়ের আগের দিন হলুদ মেহেদিরও আয়োজন করা হয়। বরের প্রতিবেশীর বাড়িতে কনের মুখে হলুদের আয়োজন করা হয়। তারা সুখী বিবাহিত। এখন দুজনেই মালয়েশিয়ায় স্থায়ী সংসার করতে চান। জাহাঙ্গীরের একমাত্র ছেলে তার মাকে সে দেশে নিয়ে যেতে চেয়েছিল।
তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হোক এবং প্রেমের দাম্পত্যের এই বন্ধন চিরদিন অটুট থাকবে এই প্রত্যাশা করছেন এলাকার সবাই। কিছুদিন পর স্বামীকে দেশে ফেরত নিতে আনুষঙ্গিক কাগজপত্র ও ভিসার প্রক্রিয়া শুরু করবে নূরকর্মী। কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। এগুলো শেষ হলেই জাহাঙ্গীরকে মালয়েশিয়া নেওয়া হবে। দুজনেই জানান, একই কোম্পানিতে কাজ করার সুবাদে তারা সাত বছর ধরে একে অপরকে চেনেন। কিন্তু প্রেমের শুরু প্রায় পাঁচ বছর থেকে। তিন বছর আগে জাহাঙ্গীর দেশে ফেরার পরও নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তবে এবার সরাসরি কনে এসেছে, তাই বিয়ের মাধ্যমে প্রেমের ইতি ঘটল।
এই বিয়ের খবর যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ঘটনা স্থলে সাধারন মানুষের উচ্ছে পড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। প্রায় শতাধিক মানুষের উপস্থিতে তাদের বিয়ের কার্যক্রম শেষ হয়। এই বিয়েতে জাহাঙ্গিরের পরিবারের কোন আপত্তি নেই বলে জানা যায়।