বাংলাদেশে জাতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম আলোচিত অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নাসির হোসেন। ব্যক্তিগত জীবনের বহুবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু আসতে হয়েছে তাকে। আর এরই মধ্যে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে তামিমা তাম্মিকে বিয়ে করেন আলোচিত এই ক্রিকেটার। তবে দাম্পত্য জীবনের মাত্র কিছুদিনের মধ্যেই বিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে আবারও আলোচনায় নাসির হোসেন।
এবার জানা গেছে, ডিভোর্স পেপার ছাড়াই বিয়ে করার অভিযোগে করা মামলায় ক্রিকেটার নাসির হোসেন, তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মী ও তামিমার মা সুমি আক্তারকে দোষী উল্লেখ করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)
শুধু অবৈধ উপায়ে বিয়েই নয়, রাষ্ট্রীয় নথি জালসহ বেশ কয়েকটি অপরাধে ফেঁসে যাচ্ছেন ক্রিকেটার নাসির হোসেন। অপরাধ প্রমাণিত হলে তার জন্য অপেক্ষা করছে বড় ধরনের শাস্তি।
নাসিরের আইনজীবী বলছেন, পিবিআইএর তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্রিকেটারদের নৈতিক স্খলন রোধে এগিয়ে আসতে হবে বিসিবিকে। পরামর্শ দিলেন স্থায়ীভাবে মনোবিদ নিয়োগেরও।
২২ গজের ক্রিকেটীয় পারফর্মেন্সে নয়, ব্যক্তিগত জীবনের কারণে বার বার আলোচনায় ক্রিকেটার নাসির। এবার জানা গেল যার সঙ্গে ৭ মাস ধরে ঘর করছেন সেই বউ নাকি তার বৈধ বউ নয়। পিবিআইয়ের এমন রিপোর্টে ওঠে সমালোচনার ঝড়।
তবে ঘটনার এখানেই শেষ নয়। নাসির-তাম্মির বিপক্ষে উঠেছে আরো গুরুতর অভিযোগ। প্রতারণা, বিচ্ছেদের কাগজ জালিয়াতি, মানহানি, ভুয়া নথিকে আসল কাগজ দাবী করার মত দণ্ডনীয় অপরাধ। যার জন্য তাদের বিরুদ্ধে অপেক্ষা করছে বড় ধরনের শাস্তি, দাবী রাকিবের আইনজীবী ইসরাত হাসানের।
তিনি বলেন, তারা একটা অপরাধ ঢাকতে গিয়ে আরো অনেকগুলো অপরাধের মধ্যে জড়িয়ে পড়েছেন। ডাক বিভাগ থেকে স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে তাদের দেওয়া স্মারক নাম্বার থেকে কোনো ডিভোর্স লেটার রাকিবের কাছে যায়নি। তার মানে নাসির দম্পতি সরকারি নথিপত্রও জালিয়াতি করেছে। যার শাস্তি ৭ বছরের জেল। এছাড়া ব্যা/ভি/চা/রে/র জন্য ৫ বছর, স্বামী বর্তমান থাকা অবস্থায় আবার বিয়ে করার জন্য ৭ বছর, অন্যের স্ত্রীকে নিয়ে আসার জন্য ৩ বছরের সাজা, মানহানীর জন্য ২ বছরের জেলসহ আরো অন্যান্য সাজাও যুক্ত হবে।
পিবিআইয়ের দেয়া প্রতিবেদন নিয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে নারাজ নাসিরের আইনজীবী ব্যা/রিস্টার আসিদ আনওয়ার। পুরো ঘটনা পর্যবে/ক্ষণ করেই সিদ্ধান্ত নিতে চান তারা।
সময় সংবাদকে তিনি বলেন, এটার যথারীতি আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এটাকে ডিফেন্ড করার জন্য চিঠিটাকে ভালো করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। আমি সপ্তাহখানেকের জন্য ঢাকার বাইরে যাচ্ছি। এসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।
ক্রিকেটাররা সমাজের আইডল। লাখো তরুণ তাদের ফ্যান-ফলোয়ার। তাইতো তাদের নৈতিকতার শিক্ষা না দেয়ার দায় আছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিবিরও। সেক্ষেত্রে পরামর্শ আসলো স্থায়ী মনোবিদ নিয়োগেরও।
এ প্রসঙ্গে মনোবিদ ডা. সেলিম চৌধুরী বলেন, যখনই এ ধরনের আইডলরা নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পরে তার প্রভাব তরুণ সমাজের উপরও পরবে। একজন ক্রিকেটার তারকা হয়ে গেলে তার ওপর অনেক চাপ চলে আসে। সে চাপ মোকাবেলায় বিসিবির উচিত একজন নিয়মিত মনোবিদ নিয়োগ দেওয়া।
পিবিআইয়ের তদন্ত রিপোর্ট দেখার পর নাসির, তামিমা এবং তার মাকে ৩১ অক্টোবর হাজির হতে সমন জারি করেছেন আদালত।
তবে এর আগে সংবাদ মাধ্যমের নানা প্রশ্নের জবাবে নাসির দাবি করেছিলেন, পূর্বের স্বামীকে ডিভোর্স দেয়ার বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি তামিমা তাম্মিকে বিয়ে করেন। তবে ইতিমধ্যে তদন্তের আলোকে পিবিআই’য়ের তথ্যের ভিত্তিতে যা জানা গেল, তাতে নাসিরের দেয়া তথ্য মিথ্যাবলে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।