মাজেদা বেগমের বয়স ৭০ পেরিয়ে গেছে। এখন আর আগের মতো নড়াচড়া করতে পারছেন না। কয়েক মাস আগে বয়সের কারণে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু ছেলে তার মায়ের সাথে ভালো চিকিৎসার কথা বলতে থাকে। এভাবে দুই মাস পেরিয়ে গেলেও চিকিৎসা পাননি মা। ছেলে ও তার স্ত্রী মাকে রাস্তার উল্টো পাশে ফেলে চলে যায়।
বরিশালের গৌরনদীর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বাটাজোড় এলাকায় অসুস্থ বৃদ্ধা মাকে রাস্তায় ফেলে চলে গেছে ছেলে ও তার স্ত্রী। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) রাতে পোজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সোমবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ভুক্তোভোগীর নাম মাজেদা বেগম মর্জিনা (৭০)। বাটাজোর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বাংলালিংক টাওয়ারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা উ. করিম বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় মহাসড়কের পাশে বৃদ্ধা মর্জিনাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে প্রথমে স্থানীয়রা তাকে তাদের কাছে রেখে যায়। পরে যত্নে কিছুটা সুস্থ হন বৃদ্ধা। পরে সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে জ্ঞান ফেরার পর ভুক্তভোগী মাজেদা বেগম জানান, তার স্বামীর নাম চান মিয়া মৃধা ও ছেলের নাম শাহে আলম মৃধা। তার বাড়ি পটুয়াখালীর দশমিনার নলখোলা গ্রামে। ছেলে ও মেয়ের জামাই তাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য সেখানে রেখে যায়। আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের কর্মচারী শিপন হাওলাদার জানান, তার ছেলের স্ত্রী বৃদ্ধাকে রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায়। এ সময় বৃষ্টির কারণে মর্জিনা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি আরও বলেন, সামাজিক মাধ্যমে বুড়ির খবর দেখেছেন। পরে উপজেলা তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা সারোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন যুবক অসুস্থ বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, খবর পেয়ে আমরা প্রথমে বৃদ্ধা মায়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করি। যারা তার সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের গৌরনদীতে। সম্প্রতি বৃদ্ধা মাজেদাকে উপজেলার বাটাজো বাসস্ট্যান্ডের কাছে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ভুক্তোভোগীর পরিবার। বর্তমানে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপিন চন্দ্র বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে গৌরনদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ তৌকির আহমেদ জানান, একদিনেই মাজেদার স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে। কিন্তু শরীরে জ্বর আছে। তাছাড়া সে অনেকটাই দুর্বল। আমরা তার খোঁজখবর রাখছি। এমনকি তার পাশে একজন নার্স সর্বদা যত্ন প্রদান করে।