২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর পরীমনি ও তার সাথে থাকা অন্যরা বোট ক্লাবে প্রবেশ করার পর সেখানে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সেখানে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পর উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করে। মামলার পর পরীমনি ও নাসির উদ্দিনকে গ্রেফতার করে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। এরপর মামলার তদন্তের পর বিচার কার্য শুরু হয়। পরীমনি আটকের ২৬ দিন পর জামিন পান পরীমনি। নাসির উদ্দিনও জামিন পান। এবার গত ৬ জুলাই বুধবার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হাসানের আদালতে মামলা দায়ের করেন বোট ক্লাবের সভাপতি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ।
কৌশলে ফাঁদে ফেলে মানুষের সম্পদ অর্জন করাই অভিনেত্রী পরীমনির পেশা। এছাড়াও, সুযোগের সদ্ব্যবহার করে, তিনি বিভিন্ন বিখ্যাত দামী ক্লাবে প্রবেশ করেন, অ্যালকোহল পান করেন এবং মূল্য পরিশোধ না করে পার্সেল নিয়ে পরে সেটা নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন।
সোমবার (১৮ জুলাই) ব্যবসায়ী নাসিরকে খু”/নের চেষ্টা, মা”রধর ও ভয়ভী’/তি দেখানোর অভিযোগে অভিনেত্রী পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা তদন্তের জন্য অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন আদালত। মামলার অভিযোগে এসব কথা উল্লেখ করেন বাদী বোট ক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদ।
এর আগে গত ৬ জুলাই ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হাসানের আদালতে পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন বোট ক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদ। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আজ (১৮ জুলাই) দিন ধার্য করেন। আজ বিচারক মামলাটি সিআইডিকে তদন্ত করে ৬ অক্টোবর এ বিষয় প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন পরীমনির সহযোগী ফাতেমা তুজ জান্নাত বাণী ও জুনায়েদ বোগদাদি জিমি ওরফে জিম।
মামলার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, পরীমনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন। কৌশলে ফাঁদে ফেলে মানুষের সম্পদ অর্জন করাই তার পেশা। এ ছাড়া সে সুযোগের সদ্ব্যবহার করে বিভিন্ন নামী দামি ক্লাবে প্রবেশ, নিষিদ্ধ দ্রব্য পান এবং পার্সেল নিয়ে টাকা না দিয়ে বিশৃঙ্খলা করেন। অন্যদিকে ক্লাব কর্মীদের মিথ্যা মা”মলা দিয়ে হয়’/রানির হু”মকি দেন পরীমনি। যেহেতু তিনি একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং প্রভাবশালী, তাই কোনো ক্লাব কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস করে না। কেউ কেউ শুধু জিডি করেছেন।
মামলায় নাসির উদ্দিন উল্লেখ করেন, পরীমনি ও তার সহযোগীরা ম/”দ পানে অভ্যস্ত। তারা সুযোগের সদ্ব্যবহার করে দামী ক্লাবে প্রবেশ করে নিষিদ্ধ দ্রব্য পান করে এবং পার্সেলের মূল্য পরিশোধ করে না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মাম”লা দিয়ে হয়’রানির হুম’কি দেন। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে প্রবেশ করেন এবং দ্বিতীয় তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন।
আরও বলা হয়, বাদী (নাসির উদ্দিন মাহমুদ) ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম বেলা ১.১৫ মিনিটে ক্লাব থেকে বের হলে পরীমনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নাসিরকে ডাকেন। তাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ বসার অনুরোধও করেন তিনি। একপর্যায়ে পরীমনি নাসিরকে অশ্লী”ল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করে এবং একটি অ্যালকোহলের বোতল বিনা মূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এতে নাসির উদ্দিন রাজি না হওয়ায় পরীমনি তাকে বকাঝকা করেন। নাসির ও আসা”মিদের মধ্যে কথা কাটাকাটির সময় পরমনি বাদীর দিকে একটি সার্ভিং গ্লাস ছুড়ে মা”রে এবং তার হাতের মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মা”রে। নাসিরের মাথায় ও বুকে আঘা’/ত লাগে।
মামলার বাদী আরও উল্লেখ করেন, পরীমনি ও তার সহযোগীরা তাকে (নাসির উদ্দিন) মা”রধর ও হ’/”ত্যার হুম”কি দেয় এবং বোট ক্লাব ভা’/ঙচুর করে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে পরীমনি বাদী হয়ে সাভার থানায় খারাপ কাজের চেষ্টা ও হ/”ত্যা চেষ্টার অভিযোগে বাদী নাসির উদ্দিনসহ দুই আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন।
২০২১ সালের ১৪ জুন খারাপ কাজের চেষ্টা ও প্রাননাশের চেষ্টার অভিযোগে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে এবং চারজনকে অজ্ঞাত আসা’মি করে পরীমনি সাভার থানায় মামলা করেন। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন।
চলতি বছরের ১৮ মে ঢাকার নারীসংশ্লিষ্ট আইনে ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক হেমায়েত উদ্দিন আ”সামিদের বিরু”দ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের সময় নাসির ও তিন আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
উল্লেখ্য, মামলার বাদী নাসির উদ্দিন মামলার নথিতে উল্লেখ করেন, পরীমনি এবং তার সাথে থাকা সহযোগীরা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং তাকে খু/”নের হুম”কি দেয়, এরপর ক্লাবের অন্যান্য আসবাবপত্রসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। এই ধরনের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য নাসির উদ্দিনসহ আরো দুইজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নারী সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করেন পরীমনি।