নেই কোনো ডিগ্রি, অথচ নামের পাশে লেখেন ‘সকল রোগ বিশেষজ্ঞ’। নিজের আখের গোছাতে এই টাইটেল ব্যবহার করে দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে অপচিকিৎসা দেয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে এ কে আজাদ নামে এক ভুয়া ডাক্তারকে আটক করেছে র্যাব। কোনো কিছু বুঝতে না পারায় গ্রামবাসীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তিনি। জানা গেছে, নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সকলের চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় বাজার থেকে এই ভুয়া ডাক্তারকে আটক করে র্যাব। তিনি উপজেলার পারগুরুদাসপুর মহল্লার মৃত হাসেন আলীর ছেলে।
অপরাধ স্বীকার করায় আজাদকে ছয়মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আদালত পরিচালনাকারী গুরুদাসপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু রাসেল বলেন, ডাক্তার না হয়েও সব রোগের বিশেষজ্ঞ কেউ হতে পারেন এমন প্রছন্ন প্রতারণা এর আগে দেখিনি। এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
র্যাবের কম্পানি অধিনায়ক মেজর মো. সানরিয়া চৌধুরী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ হোসেন ওই ভুয়া ডাক্তার গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্ব দেন। এ সময় ভুয়া ভিজিটিং কার্ড, ভুয়া প্যাড ও চিকিৎসাপত্র, ওষুধ ইত্যাদি মালামাল জব্দ করা হয়েছে।
জানা যায়, আজাদ চাঁচকৈড়, গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম, সিংড়ার বিলদহরসহ বিভিন্ন এলাকায় চেম্বার খুলে ইতিপূর্বে নানা রোগের চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। তার ডিগ্রি নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় তিনি সব গুঁটিয়ে নিজ এলাকায় চাঁচকৈড় বাজারে দালালদের সহযোগিতায় রোগী দেখতেন। এ ছাড়া তিনি নিজ বাড়িসহ টাঙ্গাইলের থানা পাড়ার শহীদ সোহেল হাজারী রোডে রোগী দেখতেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, চোরের ১০ দিন দারোগার একদিন। ভুয়া ডাক্তার আজাদ কিছু স্টেরয়েড ওষুধ দিয়ে রোগীকে সাময়িক সুস্থ করলেও পরবর্তীতে ওইসব রোগীদের নানান সমস্যা দেখা দিবে।
প্রায় প্রতিবছরই এ কে আজাদের মতো কিছু অসাধু মানুষের অপচিকিৎসার ফলে প্রাণ হারাতে হয় অনেককে। আবার কাউকে পড়তে হয় নানা জটিলতায়ও। আর তাই, যারা মানুষের কথা চিন্তা না করে নিজের আখের গোছাতে এমন অন্যায় কাজ করতেও দ্বিধাবোধ করে না, সে সকল ব্যক্তিদের খুঁজে আইনের আয়তায় আনার দাবি জানিয়েছে নেটিজেনরা।