Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / National / দারিদ্র্যমুক্ত হতে বাংলাদেশকে বিনিয়োগ করতে হবে ৮ হাজার ৬০০ কোটি ডলার

দারিদ্র্যমুক্ত হতে বাংলাদেশকে বিনিয়োগ করতে হবে ৮ হাজার ৬০০ কোটি ডলার

বাংলাদেশ এক স্বাধীন ও গনতান্ত্রিক দেশ। দেশটির স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রম করেছে। বর্তমান সময়ে দেশটির সরকারের দায়িত্ব পালন করছে আওয়ামীলীগ দল। এই দলটি দেশের উন্নয়নের জন্য আপ্রান ভাবে কাজ করছে। এমনকি বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে সফলতার শীর্ষে প্রতিস্থাপন লক্ষ্যে কাজ করছে দলটি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় আরোহনের জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বিনিয়োগ করতে হবে ৮ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। এই বিষয়ে বিস্তারিত উঠে এলো প্রকাশ্যে।

আগামী ১০ বছরে দারিদ্র্যমুক্ত হতে পারে বাংলাদেশ। দারিদ্র্যের হার শূন্যের কোটায় নামাতে ২০২১ সাল থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে বিনিয়োগ করতে হবে ৮ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। জাতিসংঘ–ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে প্রথমটি হলো দারিদ্র্যকে শূন্যে নামিয়ে আনা। স্বল্পোন্নত ৪৬ দেশের মধ্যে বাংলাদেশকেই এ খাতে সবচেয়ে বেশি টাকা খরচ করতে হবে। সম্প্রতি জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা আঙ্কটাডের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের (এসডিজি) প্রথমটিই হলো ২০৩০ সালের মধ্যে সব পর্যায়ে সব ধরনের দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনা। সরকারি হিসাবে, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ। যেটি ২০১৮ -১৯ অর্থবছরে নেমে আসে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে। চরম দারিদ্র্যের হার কমে হয় ১০ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে গত দুই বছরে করোনা মহামারির কারণে এই হার আবারও বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই বিনিয়োগের হিসাবটি তৈরি করেছে আঙ্কটাড। ‘করোনা-পরবর্তী বিশ্বে স্বল্পোন্নত দেশগুলো: গত ৫০ বছরের অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক আঙ্কটাডের এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০৩০ সাল নাগাদ শিল্পখাতের উৎপাদন দ্বিগুণ করতে হলে বাংলাদেশের বিনিয়োগ করতে হবে ২৪ হাজার কোটি ডলার। এ ছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষাসহ কয়েকটি খাতে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের হিসাব দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। ৪৬টি স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসির ওপর প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ও সোমালিয়াকে উন্নয়নে সাফল্য অর্জনকারী দুটি দেশ হিসেবে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি ও অবকাঠামোগত পরিবর্তন এসেছে। কৃষিনির্ভরতা থেকে বের হয়ে শিল্প ও সেবানির্ভর অর্থনীতির পথে এগিয়েছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতি কয়েকটি খাত ও পণ্যের ওপর বেশি নির্ভরশীল। বাংলাদেশ এলডিসির কাতার থেকে বের হওয়ার পর এর নেতিবাচক প্রভাব দেখা যেতে পারে।

এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে সফলভাবে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশের জন্য বেশকিছু পরামর্শও দিয়েছে আঙ্কটাড। এগুলোর মধ্যে আছে- বাণিজ্যের ক্ষেত্রে জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর বৈচিত্র্য আনা, দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের কথা বিবেচনায় নিয়ে শিল্প ও বাণিজ্যনীতি প্রণয়ন, সরকারের রাজস্ব আদায় ও বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো। এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য তিন বছরের গড় মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ সূচক ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক বিবেচনায় নেয়া হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্টের (সিডিপি) পর্যালোচনায় তিনটি সূচকেই উত্তীর্ণ হয়ে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছে বাংলাদেশ। নিয়ম অনুযায়ী, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। আঙ্কটাড বলছে, বাংলাদেশ গড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে চাইলে এসডিজির ৮ নম্বর লক্ষ্য শোভন কাজ ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খাতে আগামী ১০ বছরে ১১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে হবে, যা মোট জিডিপির ৩১ শতাংশ।

আঙ্কটাডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৫০ বছর আগে এলডিসির শ্রেণিবিন্যাস করা হয়। ১৯৭১ সালে বিশ্বের ২৫টি দেশ নিয়ে এলডিসির তালিকা দিয়ে শুরু হয়। ১৯৯১ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫২। এখন তা ৪৬ এ নেমে এসেছে। এখন পর্যন্ত বতসোয়ানা, কেপভার্দে, মালদ্বীপ, সামোয়া, ভানুয়াতু ও ইকোয়েটরিয়াল গিনি এই ছয়টি দেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ, ভুটান, সাও টোমে প্রিনসিপে, অ্যাঙ্গোলা, সলোমান দ্বীপপুঞ্জ, কিরিবাতি ও টুভালু এই সাতটি দেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যেতে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট (সিডিপি) সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে বের হওয়ার কথা। এ ছাড়া ভুটান বের হবে ২০২৩ সালে। সাও টোমে ও সলোমান দ্বীপপুঞ্জ, অ্যাঙ্গোলা, কিরিবাতি ও টুভালুও ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে বের হওয়ার কথা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এলডিসি থেকে উত্তরণে বাংলাদেশ তিনটি সূচকেই এগিয়ে রয়েছে। মাথাপিছু জাতীয় আয়ের সূচকে নির্ধারিত মান হলো ১ হাজার ২৩০ ডলার। বাংলাদেশের আছে ১ হাজার ৬৪০ ডলার। মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে নির্ধারিত মান হলো ৬৬ থেকে তার বেশি। বাংলাদেশের আছে ৭৫। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে নির্ধারিত মান হলো ৩২ থেকে কম। বাংলাদেশের আছে ২৭। তবে বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণে পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে জোর দিতে বলেছে আঙ্কটাড।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভাবে অর্জন করেছে ব্যপক সফলতা। এমনকি সম্প্রতি সময়ে বিশ্বের উন্নয়নের জন্য রোল মডেল হিসেবে অর্জন করেছে বিশেষ স্বীকৃতি। তবে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় আরোহনের জন্য জাতিসংঘের দেওয়া শর্ত মোকাবিলায় কাজ করছে বাংলাদেশ।

About

Check Also

জাহ্নবী কাপুরের ভিডিও ভাইরাল (ভিডিও)

মন্দিরের সিঁড়ির একপাশে অসংখ্য ভাঙা নারিকেল। তার পাশে থেকে হামাগুড়ি দিয়ে উপরে উঠছেন বলিউড অভিনেত্রী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *