শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে না খুলতেই সম্প্রতি কুমিল্লা নগরীর টমসম ব্রিজ এলাকায় অবস্থিত ইবনে তাইমিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫ শিক্ষার্থীর এক অনাকাঙ্খিত ঘটনায় শুরু হয়েছিল নানা আলোচনা-সমালোচনা। এমনকি এ ঘটনায় নানা প্রশ্নের মুখোমুখিও হতে হয়েছিল ঐ প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষকে। তবে এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে এবার আরেকটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটলো বাগেরহাটের মোংলার সেন্ট পলস উচ্চ বিদ্যালয়ে।
জানা যায়, স্কুল ড্রেসের সঙ্গে মিলিয়ে জুতা পরে না আসায় শতাধিক শিক্ষার্থীকে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাগেরহাটের মোংলার সেন্ট পলস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় স্কুলে গেলে প্রধান শিক্ষক ব্রাদার জয়ন্ত এন্ড্রু কস্তার নির্দেশে ক্লাস শিক্ষক তাদের ড্রেস ও জুতা চেক করেন। এ সময় সবার গায়ে স্কুল ড্রেস থাকলেও অনেকের পায়ে জুতা ছিল বিভিন্ন রঙের। ড্রেসের সঙ্গে জুতার মিল না থাকা সব ছাত্রকে ক্লাস ও বিদ্যালয়ের সীমানা থেকে বের করে দেন।
পরে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা কেউ কেউ বাড়ি ফিরে গেলেও অনেকেই স্কুলের সমনেই ঘোরাঘুরি করছিল। বিষয়টি জানতে পেরে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস এ আনোয়ারুল কুদ্দুস ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর ক্লাস শুরুর এক ঘন্টা পর গেটের বাহিরে ঘুরতে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ক্লাসে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। তবে এর আগে অনেকেই কষ্টে বাড়ি চলে যায়।
এ বিষয়ে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের অভিভাবকদের স্কুল থেকে ফোন করে স্কুলে আসতে বলেন। কিন্তু ড্রেসের সঙ্গে মিল রেখে জুতা পরে আসার বিষয়টি আগে তারা বলেননি। আজ জুতা পরে আসিনি বলে আমাদের স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে চালু হয়নি দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ব্রাদার জয়ন্ত এন্ড্রু কস্তা বলেন, শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়া হয়নি, জুতা পরে আসার নির্দেশ দিয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরা সব ছাত্রছাত্রীকে ক্লাসে যাওয়ার জন্য বলেছি।
তবে নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক নতুন যোগদান করেছেন। তিনি নিজের ইচ্ছেমতো স্কুলের সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। করোনাকালীন মানবিক সবকিছু তিনি ভুলে গেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কমর্কর্তা কমলেশ মজুমদার বলেন, লোকজনের কাছ থেকে একটি অভিযোগ শুনে আমি ওই স্কুলে যাই। প্রধান শিক্ষককে বলে এসেছি। আগামীতে আর কোনো সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।
এর আগে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর করোনা সংক্রমন কিছুটা কমতেই চলতি মাসের গত রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার নির্দেশ দেন প্রশাসন। আর এরই ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়ে ইতিমধ্যে স্বাস্থবিধি মেনে পাঠকেন্দ্রে যেতে শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা।