Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / যাক আপনি বলেছেন, এজন্য আমরা আশ্বস্ত বোধ করছি : সিইসি

যাক আপনি বলেছেন, এজন্য আমরা আশ্বস্ত বোধ করছি : সিইসি

আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করছে নির্বাচন কমিশন। আর এজন্য পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দলের সাথে আলোচনা করছে নির্বাচন কমিশন। এর অংশ হিসেবে আওয়ামীলীগের সাথে ইভিএম নিয়ে আলোচনা করেন। এতে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে আগামী নির্বাচেন ৩০০ আসনে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটের জন্য আবেদন জানানো হয়। এছাড়া আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সরকারের কাছে সহযোগীতা চাওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন সিইসি। আগামী নির্বাচনে সরকার নির্বাচন কমিশনকে সাহায্য করবে বলে যা বললেন ওবায়দুল কাদের।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে সরকার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহায়তা করবে।

মঙ্গলবার (২৬ জুন) ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়ে সিইসি এ কথা বলেন।

বৈঠকের সমাপনী বক্তব্যে ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে সিইসি বলেন, “আমরা আশা করবো স্যার, আপনারা সরকারে থেকে আমাদের সরকারি সাহায্য, সহায়তা দেবেন। আমরা যে সহায়তা চাইবো, তাও সাগ্রহে প্রদান করবেন।

সিইসির বক্তৃতার মাঝখানে ওবায়দুল কাদের ‘হ্যাঁ’ বলে সম্মতিতে মাথা নাড়েন।

তখন কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমি আপনাকে বলতে চাই, আমরা এ বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী এবং ভবিষ্যতেও এই আশ্বাস নিয়ে কাজ চালিয়ে যাব। নির্বাচনের মাঠ, এটা একটা সামগ্রিক বিষয়, রাজনৈতিক নেতৃত্বের সামষ্টিক একটা বিষয়। কাজেই আমাদের ওপর ছেড়ে দিলে হবে না। নির্বাচন কমিশন একাকী সফলতা অর্জন করতে পারবে না, যদি না অংশীজনরা তাদের দিক থেকে সহায়তার অস্ত্র সম্প্রসারণ করেন।

সিইসি বলেন, ইভিএম ও ইন্টারনেটের মধ্যে কোনো সংযোগ না থাকায় হ্যাকিংয়ের কোনো সম্ভাবনা নেই। সেই সন্দেহ, আমি নিজে কিন্তু গুজবে বিশ্বাস করি। গুজব শুনতে খুব ভালো লেগেছে। এভাবেই আমার জীবন চলে গেল। এখন আমি যখন তাদের সম্পর্কে শুনি, তারা সত্য নয়। কিন্তু আমি আগে এই ধরনের গুজব বিশ্বাস করতাম। আসলে গুজবে কান দেওয়া মানুষের স্বভাব। ”

তিনি আরও বলেন, “আমরা ইভিএমের অন্ধ গ্রাহক ছিলাম না। আমি সব আলোচনা রেকর্ড করেছি। আমাদের সামর্থ্য কতগুলো তা দেখবো। এরপর সিদ্ধান্ত নেবো, সম্পূর্ণ বা ফিফটি ফিফটি করবো কি-না সে সিদ্ধান্ত নেবো। আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবো, তখন সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। আমরা কিন্তু কোনো বাজে মতলব নিয়ে আসিনি বা আমাদের কোনো পক্ষ থেকে এই ধরনের কোনো আশ্বাসও কেউ দেননি। কোনো রাজনৈতিক চাপ আমাদের ওপর নেই। প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, সেই সময় সরকার থাকবে কিন্তু আওয়ামী লীগ থাকবে না। সরকার আর আওয়ামী লীগ এক না। আমরা সরকারের কাছে হেল্প নেবো। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আমরা কোনো হেল্প নেবো না। প্রশ্নই আসে না। কাজেই আমরা বিশ্বাস করি, সরকার এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে যে বিভাজনটা আছে, সেই বিভাজনইটা প্রধানমন্ত্রীকে আমি উচ্চারণ করতে শুনেছি, তিনি এ ব্যাপারে খুবই স্পষ্ট, সরকারের তরফ থেকে আমাদের সহায়তা দেওয়া হবে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “আমরা সেই সাহায্য প্রাপ্য। আমরা সেই সাহায্য পাব। আমাদের প্রাপ্য সাহায্য দিতে হবে। সেই সাহায্য না দিলে, সুন্দর নির্বাচন হবে বলে আশা রাখলে, সুন্দর নির্বাচন নাও হতে পারে। আরেকটি বিষয় হলো- আপনাদের মধ্যে ঐক্য চাই, সবাই নির্বাচনের মাঠে থাকবে। বিভিন্ন দলের উপস্থিতি নির্বাচনের মাঠে এক ধরনের ভারসাম্য তৈরি করে। আমাদের পাঁচ থেকে সাতজন নির্বাচন কমিশনার আছে… আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়টিও আছে। যেহেতু আমরা একদিনে নির্বাচন করব বা সবাই চাইলে চার দিনে নির্বাচন করতে চাই, কারণ আমরা একটি সংকট দেখছি আমরা কেন্দ্রে পর্যাপ্ত শক্তি দিতে পারছি না। সেই শক্তি লাগতো না যদি সব দল নির্বাচনে আসতো তাহলে তারাই শক্তিতে পরিণত হতো। ”

নির্বাচন কমিশন ইভিএম নিয়ে ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছে এবং ১৩টি দলের সঙ্গে তিনটি করে বৈঠক করেছে। মঙ্গলবার শেষ রাউন্ডে আমন্ত্রিত দলগুলো হলো: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-এমএল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি। সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশ। সমাজতান্ত্রিক দল-বিএসডি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোট। এছাড়া গণফোরামের প্রথম দফার বৈঠকে অংশ নিতে না পারলে দলকে আসতে সময় দেয় ইসি।

গত দিনের বৈঠকে তিনজন (বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও সোশ্যালিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ-বিএসডি) অংশ নেয়নি। এর আগে ১৯ জুনের বৈঠকে দুটি দল এবং ২১ জুনের বৈঠকে বিএনপিসহ পাঁচটি দল ইসির আমন্ত্রণে সাড়া দেয়নি।

প্রসঙ্গত, আগামী সংসদ নির্বাচনে সরকারের সহযোগীতা না থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। আর এজন্য সরকার সহযোগিতা করবে বলে সিইসিকে আশ্বস্ত করেন আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের।

About Babu

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *