Sunday , November 10 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বান্ধবীকে নিয়ে হোটেলে থাকার খরচ যোগাতে বন্ধুর প্রান নিলো কিশোর

বান্ধবীকে নিয়ে হোটেলে থাকার খরচ যোগাতে বন্ধুর প্রান নিলো কিশোর

মোবাইল ফোন নেওয়ার ১৪ বছর বয়সে স্কুলছাত্র নওফেলকে চিরতরে চিরতরে নিথর করলো তারই বন্ধু। এই ঘটনার পর ব্যাপক অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রে”ফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে ঢাকায় অভিযান চালিয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানা হতে তাকে আটক করতে সক্ষম হয়। জানা গেছে, ওই কিশোর শাজাহানপুরে হলেও সে ঢাকায় একটি লন্ড্রির দোকানে তার বড় ভাইয়ের সাথে কাজ করতো।

হ”/ত্যাকান্ড ঘটানোর পর মোবাইল ফোন বিক্রির সঙ্গে জড়িত কিশোরের কথিত বান্ধবীকে (২০) আট”ক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৬ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

এর আগে ২০ জুন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শাহজাহানপুরের খরনা ইউনিয়নের দাড়িগাছা গ্রামের জঙ্গল থেকে নওফেলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে উপজেলার খরনা ইউনিয়নের দাড়িগাছা হাটপাড়া গ্রামের ইসরাফিলের ছেলে এবং দাড়িগাছার দাড়িগাছা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র।

পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, নওফেল ও হ/”ত্যার অভিযুক্ত কিশোর একে অপরের বন্ধু। দাড়িগাছা গ্রাম থেকে দুই কিলোমিটার দূরে এক জঙ্গলে তারা একসঙ্গে হাঁটতো এবং মাঝে মাঝে ধূমপান করতো।

প্রায় দুই মাস আগে জমি বিক্রির টাকা দিয়ে নওফেলের বাবা ১৬ হাজার টাকায় একটি মোবাইল ফোন কিনেছিলেন। নওফেলের কাছ থেকে কীভাবে নতুন ফোন পাওয়া যায় তার পরিকল্পনা শুরু করে কিশোর। গত ১৮ জুন নওফেলের জন্মদিন থাকায় ওই কিশোর নওফেলকে ওই জঙ্গলে গিয়ে ধূমপান করে একটু আনন্দ করে আসার প্রস্তাব দেয়। সেদিন জন্মদিন থাকায় নওফেল উৎফুল্ল ছিল এবং সে তার কথায় রাজি হয়ে যায়।

কিশোর নওফেলকে হ’/’ত্যা করে স্মার্টফোন পাওয়ার পরিকল্পনা অনুযায়ী আগে থেকেই গলায় মাফলার পরিয়ে দেয় মফিক। পরে ওই দিন রাত ১১টার দিকে নওফেল ও কিশোর দাড়িগাছা গ্রামের ফুলবাড়িয়া এলাকার বাগানে ধূমপান করতে যায়।

নওফেল জঙ্গলে একটি গাছের সাথে হেলান দিয়ে, গলায় ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি মাফলার ধরে কিশোরটি নোফেলকে বলল, “‘মামা তোমাকে যদি এই মাফলার দিয়ে সিনেমার স্টাইলে খুন করা হয় তাহলে কেমন হবে।” তখন নওফেল হেসে বলল, ‘মামা তুমিতো আমকে খুন করবে না। এরপর অভিনয়ের ছলে কিশোর নওফেলের গলায় মাফলার চেপে পেছন থেকে গাছের সঙ্গে টেনে ধরে।

এতে নওফেল ছটফট করতে থাকেন এবং একপর্যায়ে নিথর হয়। নওফেল অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে নওফেলের প্রান গেছে কিনা তা নিশ্চিত করতে ওই কিশোর মাটিতে বাঁশের লাঠি দিয়ে নওফেলের মাথায় আঘা”ত করে। নওফেল নড়াচড়া না করলে কিশোর নিশ্চিত হয় নওফেল শেষ নি:শ্বাস আগেই ছেড়েছে। এরপর নাওফেলের দেহ ঘটনাস্থল থেকে ১০ থেকে ১৫ হাত দূরে ঝোপের মধ্যে টেনে নিয়ে যায় ওই কিশোর। পরে নওফেলের স্মার্টফোন নিয়ে অগোচরেই চলে যায় ওই কিশোর।

পুলিশ সুপার জানান, ওই দিন দুপুর ১টার দিকে ওই কিশোর শেরপুর থেকে তার বান্ধবীকে মোবাইল ফোনে ডেকে বগুড়ার সাতমাথায় একটি পুরনো মোবাইল ক্রয় বিক্রয়ের দোকানে যায়। তারা ভাই-বোনের পরিচয় নিয়ে নিজেদের অভাব অনটনের কথা বলে নওফেলের ওই মোবাইল ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। সেখান থেকে বগুড়ার গালা পট্টিতে একটি হোটেলে দুই হাজার টাকায় রুম ভাড়া নিয়ে সময় কাটান দুজনে। পরে ওই কিশোর তার এক বন্ধুকে মোবাইল ফোনে মেয়েটির সঙ্গে সময় কাটাতে আসতে বলে। পরে মোবাইল ফোন বিক্রি করে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বান্ধবীকে দিয়ে যার যার নিজ নিজ এলাকায় চলে যান।

পরে গত ২০ জুন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে খরনা ইউনিয়নের দাড়িগাছা গ্রামের জঙ্গল থেকে নওফেলের অর্ধগলিত নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে ঘা/”তক ঢাকায় আত্মগোপন করে। পরে পুলিশের ব্যাপক অভিযানে গত ২৬ জুন দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকার টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকা থেকে খু/”নিকে গ্রেপ্তার করে এবং হ/”ত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মাফলার উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিশোরকে আজ আদালতে পাঠানো হবে। মোবাইল ফোন বিক্রিতে সহায়তাকারী ওই নারীকেও আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, বর্তমান সময়ে কিশোর অপরা”ধ প্রচ”ন্ডভাবে বেড়ে গিয়েছে, যার কারণে প্রায় কিশোরদের দ্বারা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটানোর খবর প্রায় গণমাধ্যমে উঠে আসছে। কিশোর অপরাধের বিষয়টি ঠেকাতে অভিভাবকদের অবশ্যই সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে সন্তানদের প্রতি। তবে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের প্রতি কোনো ধরনের খেয়াল রাখে না, যার কারণে তারা একসময় অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

About bisso Jit

Check Also

ড. ইউনূসসহ ৬২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ৬২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ দায়ের করা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *